ইবি প্রতিনিধি:
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থী সাজিদ আব্দুল্লাহ হত্যাকান্ডে সুষ্ঠু তদন্তে অবহেলা ও খুনিদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে বিলম্ব হওয়ার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে ইবি মিল্লাতিয়ান সোসাইটি। রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুর দেড় টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবন চত্বরে এই মানববন্ধন করে তারা।
এসময় শিক্ষার্থীদের হাতে ‘সাজিদ হত্যার তদন্ত কত দূর?’, ‘সাজিদ হত্যার বিচার চাই,’ ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস,’ ‘প্রসাশনের অনেক গুণ বিচার রেখে পারছে ঘুম,’ ‘স্যার আপনার সন্তান হলে এত দেরি করতেন,’ ‘এর পরের লাশ কি আমি হবো?’ ‘বিচার নিয়ে টালবাহানা, মানি না মানবো না,’ ‘সিআইডির কাছে মামলা যাবে কবে? কিয়ামতের পর?’সহ বিভিন্ন লেখা সম্বলিত প্ল্যাকার্ড দেখা যায়।
মানববন্ধনে শাখা ছাত্রদলের সদস্য সচিব মাসুদ রুমী মিথুন, শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মাহমুদুল হাসান ও ইবি মিল্লাতিয়ান সোসাইটির সভাপতি শাহ ফরিদসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
ইবি মিল্লাতিয়ান সোসাইটির সভাপতি শাহ ফরিদ বলেন, “সাজিদ হত্যাকান্ডের খুনিদের দ্রুত শাস্তির জন্য এর আগে অনেক মানববন্ধন হয়েছে। প্রায় দুইমাস অতিক্রম হয়ে গেলেও কোন দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেওয়া হয় নি। ইবি প্রশাসন তাদের বক্তব্যের মাধ্যমে আমাদের মানববন্ধন থামিয়ে রাখার চেষ্টা করছে। আমরা ইবি প্রশাসনের প্রতি দাবি জানাই, আপনারা ছাত্রদের জন্য কাজ করবেন, তাদের নিরাপত্তার জন্য কাজ করবেন। সাজিদ হত্যাকান্ডে যারা যারা জড়িত আছে তাদের দ্রুত শাস্তির সম্মুখীন করতে হবে।”
শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মাহমুদুল হাসান বলেন, “সাজিদ হত্যাকন্ডের প্রায় দুইমাস হয়ে গেল, এখনো অফিসিয়ালি তদন্তের দায়িত্ব কাউকে দেওয়া হয়নি। কিসের জন্য, কাদের ঈঙ্গিতে দেওয়া হয়নি? যদি এটা পরিকল্পিত বিলম্বিত করা হয়, তাহলে কারা করছে তাদের খুঁজে বের করে শিক্ষার্থীদের সামনে তাদের মুখোশ গুলো উন্মোচন করা দরকার। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকে বলতে চাই শিক্ষার্থীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতেছে।আপনারা সাজিদ হত্যার বিচার ও তদন্ত নিশ্চিত করতে দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণ করুন।”
ছাত্রদলের সদস্য সচিব মাসুদ রুমী মিথুন বলেন, “সাজিদ আবদুল্লাহ আল কুরআন বিভাগের মেধাবী শিক্ষার্থী ছিলো। আল কুরআন বিভারের গর্ব সাজিদকে হত্যা করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এখনো খুনিদের বের করতে পারে নি। হত্যাকান্ডের ৫০ দিন পার হলেও প্রশাসন নীরব আছে। আমরা এর প্রতিবাদ জানাই। প্রশাসনের কাছে অনুরোধ জানাই সাজিদ হত্যাকান্ডে যারা জড়িত তাদের দ্রুত শাস্তির আওতায় নিয়ে আসেন। নাহলে ছাত্রদল রাজপথে কঠিন কর্মসূচি দিবে।”
উল্লেখ্য, গত ১৭ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ আজিজুর রহমান হলের পুকুর থেকে আল কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী সাজিদ আব্দুল্লাহর ভাসমান মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে বলে ৩রা আগস্ট প্রকাশ হওয়া ময়নাতদন্তের ভিসেরা রিপোর্টে জানানো হয়। এই ঘটনার পর থেকে নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চিতসহ সাজিদ হত্যার সুষ্ঠু বিচার দাবি ও জড়িতদের শাস্তির দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন শিক্ষার্থীরা।