টাঙ্গাইল প্রতিনিধিঃ
টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার পাকুটিয়া ইউনিয়নের বিসিআরজি কলেজ চত্বরে একটি গাছ নিয়মবহির্ভূত ভাবে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।
নাগরপুর উপজেলার পাকুটিয়া ইউনিয়নের, পাকুটিয়া জমিদার বাড়িতে লিজ কৃত জায়গায় গড়ে উঠেছে বিসিআরজি কলেজ। গত ২০ আগষ্ট বুধবার সকালে কলেজ চত্বরের ১টি সুবিশাল কড়ই গাছ কর্তনরত শ্রমিক দেখে স্থানীয়রা বাঁধা দেয় এবং খোঁজ নিয়ে জানতে পারে গাছটি নিয়মবিরুদ্ধ ভাবে বিক্রি করছে কলেজ কর্তৃপক্ষ।
সরেজমিনে, ঘটনা স্থল ঘুরে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে, বিসিআরজি কলেজ চত্বরে কড়ই গাছটি বিক্রি ও কর্তনের বিষয়টির সত্যতা পাওয়া যায়।
গাছটির ক্রেতা চাঁন মিয়া ওরফে চানু বেপারির সাথে মুঠোফোনে তিনি জানান, কলেজ থেকে গাছটি তারা সাড়ে ৭ হাজার টাকায় বিক্রি করে এবং বিক্রি সংক্রান্ত একটি কাগজ বুঝিয়ে দেয়। পরে, স্থানীয়দের তোপের মুখে, ক্রেতার কাছ থেকে বিক্রয় সংক্রান্ত কাগজ ফেরত নিয়ে, তাকে সাড়ে ৭ হাজার টাকা ফেরত দেয় কলেজ কর্তৃপক্ষ।
স্থানীয় বাসিন্দা রাব্বি জানায়, ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি মোনায়েম খানের যোগসাজশে বেআইনি ভাবে বিক্রি করেছে। এর আগেও তারা এভাবেই বেশ কয়েকটি শতবর্ষী গাছ বিক্রি করছে বা কেটেছে। তবে গত বুধবার যে জীবিত গাছটি কার্তন করা হচ্ছিল। যা বনবিভাগ, সরকারি নিলাম, কলেজের রেজুলেশন এসবের কোন প্রকার লিখিত অনুমতি ছাড়াই বিক্রি ও কর্তন করা হয়েছে। এলাকাবাসী, জীবিত এ গাছ হত্যার সাথে সম্পৃক্তদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দাবি জানাই।
পাকুুটিয়া বিসিআরজি কলেজের স্নাতক ৩য় বর্ষের অপর এক শিক্ষার্থী জানায়, কলেজের প্রায় কোটি টাকা ভূমি উন্নয়ন কর বাকি রয়েছে।
সরকারি জায়গার নিয়মবহির্ভূত ভাবে জীবিত গাছ বিক্রি প্রসঙ্গে বিসিআরজি কলেজের অধ্যক্ষ এস এম সরোয়ার্দী জানান, বিষয়টি শেষ হয়ে গেছে। এটা নিয়ে আর নিউজ না ভালো হয় ভাই। গাছটি উপজেলা প্রশাসন জব্দ করেছেন।
এ প্রসঙ্গে পাকুটিয়া ইউনিয়ন বিএনপি নেতা মোনায়েম খান বলেন, আমি ঢাকায় ছিলাম। গাছটি নিয়ে প্রতিবেশীদের অভিযোগ ছিলো এবং গাছটি মৃত ছিল, তাই কলেজ কর্তৃপক্ষ কেটেছে। আমি কলেজের সাথে সম্পৃক্ত নই। এটা কলেজের সিন্ধান্ত।
নাগরপুর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) দীপ ভৌমিক জানান, ঘটনাটি প্রসঙ্গে অভিযোগ পেয়েই পাকুটিয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তহসিলদার মো. নজরুল কে দিয়ে গাছটি জব্দ তালিকা প্রস্তুত করিয়ে জব্দ করা হয় এবং পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপের জন্য উর্ধতন কর্মকর্তার সিন্ধান্তের অপেক্ষায় আছি। কলেজটির লিজ মানি (ভূমি উন্নয়ন কর) প্রায় কোটি টাকা বাকি, বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, লিজ মানি বকেয়ার বিষয়টি নিয়ে আমরা খুবই বিব্রতকর অবস্থায় রয়েছি। প্রতিনিয়ত এ বিষয়ে উর্ধ্বতনদের চাপে থাকতে হয়।
এ বিষয়ে কথা বলতে চাইলে, নাগরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইউএনও আরাফাত মোহাম্মদ নোমানকে একাধিকবার তার সরকারি নম্বরে কল করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।