দ্যা মেইল বিডি / খবর সবসময়

; ;

দ্যা মেইল বিডি ডট কম

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধিত অনলাইন পত্রিকা, নিবন্ধন নং- ১১

ইবি প্রতিনিধি:

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ইকসু) গঠনে ‘ইকসু গঠন আন্দোলন’ নামে নতুন প্ল্যাটফর্মে ডাক দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৯ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ায় এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই আন্দোলনের ঘোষণা দেন আট শিক্ষার্থী। এসময় তারা বলেন, যতদিন পর্যন্ত না ইকসুর রোডম্যাপ ও বাস্তবায়ন হবে ততদিন এই আন্দোলন চলমান থাকবে। এছাড়াও ইকসু গঠন আন্দোলনের আগামী এক সপ্তাহের কর্মসূচি ঘোষণা করেন তারা।

সংবাদ সম্মেলন করেন, ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের বোরহান উদ্দিন, আল ফিকহ এন্ড ল বিভাগের একই শিক্ষাবর্ষের হাসিব আল সজিব, ইসলামী ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের মাস্টার্স ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের রাকিবুল ইসলাম, আল হাদিস এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের সাজ্জাতুল্লাহ শেখ, আল ফিকহ এন্ড ল বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের সায়েম আহম্মেদ, শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়াবিজ্ঞান বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের আহমাদ আল আলামিন ও একই শিক্ষাবর্ষের ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগের জুলকারনাইন দোলন।

সংবাদ সম্মেলন ইকসু গঠন আন্দোলনের আট শিক্ষার্থী বলেন, ‘বিভিন্ন সময়ে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিয়াশীল রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনগুলোর নেতৃবৃন্দ বিভিন্ন দাবি দাওয়া উপস্থাপনের পাশাপাশি গুরুত্ব সহকারে বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ ইকসু গঠনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে স্মারকলিপি জমা দিয়েছে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ইকসু গঠনের জন্য কোন পদক্ষেপ তো নেয়ই নি বরং বারবার আইনের দোহাই দেখিয়ে ইকসু গঠনকে থামিয়ে দিয়েছে। দীর্ঘদিনের অচলায়তন ভেঙে যেভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) এবং রাকসু নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করা হয়েছে, তারই ধারাবাহিকতায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ গঠন এবং নির্বাচন অত্যন্ত জরুরী।’

তারা আরও বলেন, ‘যে আইনের দোহাই দেখিয়ে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ইকসু গঠনে রাজি হচ্ছে না, একই ধরনের প্রেক্ষাপটে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে না থাকা সত্ত্বেও বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে বেরোবি ছাত্র সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে। শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে চাইলে যে কোন যৌক্তিক বিষয়ই অর্জন করা সম্ভব এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ছাত্র সংসদের মতো গুরুত্বপূর্ণ এবং শিক্ষার্থীদের ন্যায্য একটি দাবি মেনে নিতে অবশ্যই বাধ্য হবে।

আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, ছাত্র সংসদ শিক্ষার্থীদের অধিকার এবং কোনমতেই এই অধিকার থেকে কোন অজুহাতে শিক্ষার্থীদের বঞ্চিত করা চলবে না। ইকসু কোন একক ব্যক্তির বা একক সংগঠনের না, ইকসু আমার, আপনার এবং এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭ হাজার শিক্ষার্থীর। ইকসুর দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের যেসব ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠন, সামাজিক সংগঠন, রাজনৈতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ দীর্ঘদিন দাবি জানিয়ে আসছিলেন তাদের উদাত্তকণ্ঠে আমাদের এই ইকসু গঠন আন্দোলন -এর সাথে একাত্মতা প্রকাশের আহবান জানান তারা।’

সংবাদ সম্মেলনে তারা আগামী শনিবার বেলা ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবন চত্বরে ইকসু গঠনের দাবিতে শিক্ষার্থীদের গণ স্বাক্ষর ও অবস্থান কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেন।

এছাড়া এসময় উপস্থিত ছিলেন ইবি শাখা ছাত্রদলের আহবায়ক সাহেদ আহম্মেদ, শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মাহমুদুল হাসান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইবি শাখার সাবেক সমন্বয়ক এস এম সুইট, ছাত্র ইউনিয়ন ইবি সংসদের সাধারণ সম্পাদক আহমাদ গালিব, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন ইবি শাখার সভাপতি ইসমাইল হোসেন রাহাত, খেলাফতে ছাত্র মজলিস ইবি শাখার সভাপতি সাদেক আহম্মেদসহ সংগঠনগুলোর অন্যান্য নেতাকর্মীরা। তবে সংবাদ সম্মেলনের একপর্যায়ে সকল ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দ সেখান থেকে ওয়াকআউট করেন।

ছাত্র সংগঠনগুলোর নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করেন, ‘তারা কয়েকজন নিজেদের মত সংবাদ সম্মেলন করছে, আমরা দর্শকের মত পিছনে বসে শুনেছি। এখানে ইকসু বাস্তবায়নের চাইতে কেউ কেউ নেতা হওয়ার চেষ্টায় বেশি ভূমিকা রাখছে বলে মনে হয়েছে। এরপরও সকলের সাথে আলোচনা করে শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে একত্রে কাজ করব।’

একইভাবে কিছু শিক্ষার্থী অভিযোগ করেন, ‘সংবাদ সম্মেলনে নারী শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি নেই কেন?কাদের সাথে আলোচনা করে সংবাদ সম্মেলন করছেন? ছাত্রলীগের অন্যায় কার্যকলাপে সক্রিয়ভাবে জড়িত ব্যক্তিদের নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করছেন। এছাড়াও ক্যাম্পাসে চলমান আলোচিত ইস্যু সাজিদ হত্যা ও ফ্যাসিবাদী শিক্ষকদের বিচারকে আড়াল করতেই এরকম উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ তাদের।’

এদিকে সংবাদ সম্মেলন থেকে ওয়াকআউট করে ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদ বলেন,
‘ইকসু নিয়ে আলোচনা করবে বলে কল দিয়েছিল একজন। তার প্রেক্ষিতে আমরা ছাত্র সংগঠনগুলো এখানে এসেছি। যেন সাধারণ শিক্ষার্থীরাই আমাদের ভুল না বুঝে। এসে দেখলাম সাংবাদিকদের সাথে ৬-৭ জন শিক্ষার্থী আলোচনা করছে। রাত ৯টায় কেন করা হলো আমার বোধগম্য নয়। নারী শিক্ষার্থী বোনরা আসতে পারলো না, অথচ ৫ আগস্টের আন্দোলনে যাদের অগ্রণী ভূমিকা ছিল। তারা কেন আলোচনার বাহিরে থাকবে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের নামে দুই-পাঁচজন মনগড়া প্লাটফর্ম দাঁড় করালো এটা তো হতে পারে না। লেজুড়বৃত্তিক সংগঠন হিসেবে আমরা ইকসু চাই না শিক্ষার্থীদের এমন ভুল মেসেজ দিচ্ছে। অথচ ৫ আগস্টের পর রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর মধ্যে কোনো ধরনের মতানৈক্য হয়নি। ইকসু গঠনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে আদায় করতে চাই।’

শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘ইকসু আমাদের আবেগের জায়গা। এজন্য যখন কেউ আহ্বান করে ছাত্রসংসদের জন্য কাজ করতে হবে তখন আমরা দলমত নির্বিশেষে সবাই সেখানে চলে আসি। এখানে আমরা এটা চিন্তা করি না যে কে নেতৃত্ব দিচ্ছে আর কে পিছনে থাকছে বা থাকছে না। এজন্য যারাই কর্মসূচি দেয় আমরা তাদের সাথে থাকতে চাই। বাস্তবিক অর্থে এখানে এসে আমাদের যেটা মনে হয়েছে যে এখানে কিছু শিক্ষার্থীর মধ্যে নেতাবনে যাওয়া একটা প্রবণতা কাজ করছে। উনারা ছাত্রসংগঠনের নেতৃবৃন্দদের একবার বলছেন আহ্বান করেছে অন্যদিকে বলছেন আহ্বান করছেন না। মনে করছিলাম সকল ছাত্রসংগঠন সহ সকল শিক্ষার্থীরা একসাথে বসে একটি প্লাটফর্ম থেকে আন্দোলন ঘোষণা করা হবে। কিন্তু এখানে এসে দেখি একবার বলা হচ্ছে সাংবাদিকদের ডেকেছি; শিক্ষার্থীদের ডাকি নাই আবার বলা হচ্ছে ছাত্রসংগঠনের নেতাকর্মীদের ডাকি নাই। আমরা বলতে চাই- ছাত্রসংসদ চালু হওয়া আমার মনে হয় প্রত্যেকটা শিক্ষার্থীর প্রাণের দাবি। ছাত্রসংসদ কোন দল, গুষ্টি বা কোন মুষ্টিময় মানুষের সম্পদ না। এটা সকল শিক্ষার্থীদের সম্পদ এজন্য আমার কাছে মনে হয় এটা আরো ইনক্লুসিভ হওয়া উচিত ছিল। বোনদের অংশগ্রহণ সহ সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এক প্লাটফর্মে আসার আহ্বান করছি।’

Share.
Leave A Reply

মোঃ আব্দুল আওয়াল হিমেল
প্রকাশক ও সম্পাদক 
দ্যা মেইল বিডি ডট কম
মোবাইল: +৮৮০ ১৩১৪-৫২৪৭৪৯
ইমেইল: themailbdnews@gmail.com
ঠিকানা: ১০২/ক, রোড নং-০৪, পিসি কালচার হাউজিং সোসাইটি, শ্যামলী, ঢাকা-১২০৭

নিউজরুম: +৮৮০ ১৩১৪-৫২৪৭৪৯
জরুরী প্রয়োজন অথবা টেকনিক্যাল সমস্যা: +৮৮০ ১৮৩৩-৩৭৫১৩৩

© 2025 Themailbd.com. Designed and developed by Saizul Amin.
Exit mobile version