গোবিপ্রবি প্রতিনিধিঃ-
জুলাই ছাত্র আন্দোলনে হামলাকারী ও আন্দোলনের বিপক্ষে বিক্ষোভ মিছিল করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের হুমকি দানকারীদের দীর্ঘ এক বছরেও বিচার করতে পারেনি গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (গোবিপ্রবি) প্রশাসন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জুলাই ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও হুমকি দেওয়ার সাথে জড়িতদের চিহ্নিত করার জন্য ইতিপূর্বে দুটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। এর মধ্যে সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. রাজিউর রহমানের নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিটি তাদের কাছে কোনো অভিযোগ আসেনি উল্লেখ করে তদন্ত রিপোর্ট জমা দেন। এতে শিক্ষার্থীরা তীব্র আপত্তি জানান। অধিকতর তদন্তের জন্য উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. সোহেল হাসানের নেতৃত্বে আরেকটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কয়েকদিন পর তিনি ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে তদন্ত কমিটি থেকে পদত্যাগ করেন। এরপর নতুন করে সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামাল হোসেনের নেতৃত্বে ৫৩ সদস্য বিশিষ্ট নতুন তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে তদন্ত কমিটির কয়েকজন সদস্য তদন্ত বিলম্বের ষড়যন্ত্রের কথা উল্লেখ করে বলেন, “কিছু শিক্ষক ইচ্ছে করে নিয়মিত মিটিংয়ে উপস্থিত থাকতে চান না। কারণ অধিকাংশ সদস্য উপস্থিত না থাকলে মিটিং হবে না এবং দীর্ঘদিনেও বিচার-প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে না। তারই অংশ হিসেবে গতকাল মিটিংয়ে ১৬ জন সদস্য উপস্থিত ছিলেন না, যার ফলে মিটিং বাতিল হয়ে পরবর্তী সপ্তাহে মিটিং ডাকা হয়েছে।”
ইতিপূর্বে গঠিত তদন্ত কমিটি থেকে পদত্যাগ করার বিষয়ে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. সোহেল হাসান বলেন,“আমি শৃঙ্খলা বোর্ডের সদস্য, তদন্ত কমিটির রিপোর্ট তো আমাদের কাছেই আসবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময়। তাই আমি আলাদা করে তদন্ত কমিটিতে না থাকলেও সমস্যা নেই।”
দীর্ঘদিনেও বিচার না হওয়ার বিষয়ে তদন্ত কমিটির প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামাল হোসেন বলেন, “ইতিপূর্বে সহযোগী অধ্যাপক ড. রাজিউর রহমানের নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি গঠন হয়। সে সময় তাদের কাছে কেউ কোনো অভিযোগ জমা দেয়নি উল্লেখ করে রিপোর্ট জমা দেন। যার প্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীরা অনেকেই প্রতিবাদ জানালে উপ-উপাচার্যের নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কিছুদিন পর তিনি পদত্যাগ করেন। আমাদের কমিটি কয়েক মাস হলো হয়েছে। আমাদের কমিটি অনেক বড়, ফলে সবকিছু করতে বেশ সময় লাগছে। আমরা এর আগে একটি মিটিং করেছি, আজ আরেকটি হওয়ার কথা ছিল কিন্তু অধিকাংশই আসেনি। আগামী মঙ্গলবার আবার ডেট দেওয়া হয়েছে।”
পুরো বিচার প্রক্রিয়া কবে শেষ হতে পারে—এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, *“আসলে এটা বলা কঠিন। অনেক বড় কমিটি, দীর্ঘ প্রক্রিয়া শেষ করতে কতদিন সময় লাগবে তা এখন বলা যাচ্ছে না।”