ইবি প্রতিনিধি:
নানা আয়োজনে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের শুভ জন্মাষ্টমী পালন করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের(ইবি) সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।
শনিবার (১৬ আগস্ট) সকাল ১১ টার দিকে ইবি থানা সংলগ্ন সবুজ চত্বরে পূজা উদযাপন শেষে দুপুর দেড় টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনে ধর্মালোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয় ।ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের পূজা উদযাপন পরিষদ এসব অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
এই দিন সকাল ৯ টার দিকে শ্রীকৃষ্ণের বিগ্রহ স্থাপনের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। পরে পূজা অর্চনা, শ্রীমদ্ভাগবত পাঠ, ভজন কীর্তন, ভোগ আরতি, মহাপ্রসাদ বিতরণ, ধর্মালোচনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ধর্মীয় নাটক ও কীর্তন মেলা অনুষ্ঠিত হয়।
ধর্মালোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ। প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান, অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. দেবাশীষ শর্মা, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জয়শ্রী সেন, ঝিনাইদহ স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক রথীন্দ্রনাথ রায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য প্রদান করেন।
হিসাব বিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগের অধ্যাপক ড. অরবিন্দ সাহার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক ছিলেন ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. পরেশ চন্দ্র বর্মণ এবং বিশেষ আলোচক ছিলেন বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. তপন কুমার রায়। পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ রায় স্বাগত বক্তব্য দেন।
এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ, শিক্ষার্থীবৃন্দ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক এস এম সুইট, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ইবি শাখার আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদ, ইসলামী ছাত্রশিবির ইবি শাখার সভাপতি মাহমুদুল হাসান, ছাত্র ইউনিয়ন ইবি সংসদের সভাপতি নূর আলম সহ ছাত্র সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মদিনা সনদের উল্লেখ করে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, ‘মদিনার সমাজে যারা অমুসলিম ছিলেন, সকলের ধর্মীয় স্বাধীনতাকে রাসুলে পাক (সাঃ) স্বীকার করেছেন, তাদের ধর্মচর্চার সুযোগ দিয়েছেন। সনাতন ধর্মাবল্বীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, এখানে সমান মর্যাদা সহকারে আপনাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান আপনারা করতে পারবেন। এই নিশ্চয়তা আমি আপনাদেরকে দিচ্ছি। সবাইকে গ্রহণ করার মানসিকতা হলো সকল ধর্মের মূল মন্ত্র। সব ধর্মের একটা মূল মন্ত্র আছে, সেটা হলো মানবিকতা। সে আদর্শে আমরা সবাই অনুপ্রাণিত।’
তিনি আরও বলেন, ‘ব্যক্তি মানুষ এবং সমাজকে সুন্দর করতে হলে দুষ্টের দমন এবং শিষ্টের লালনের দরকার। সকল ধর্মের মধ্যে এই ধর্মীয় বক্তব্যের সাদৃশ্য পাওয়া যায়। সকল ধর্মে মানবতাকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে; দুষ্টের দমনের কথা বলা হয়েছে; পশুত্বচর্চার বিরোধিতা করা হয়েছে। এই দৃষ্টিভঙ্গিতে আমরা সবাই এক। মনুষ্য সমাজে ধর্মের চর্চার গুরুত্ব অনেক। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ছাত্র তাদের ধর্মীয় পরিচয় ভুলে গিয়ে মানুষ পরিচয় নিয়ে তারা পাশাপাশি থাকবে, এই চেতনা ধারণ করা দরকার।’