জবি প্রতিনিধি:
সম্প্রতি পিএসসি কর্তৃক বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারে বাংলা বিভাগ ও ভাষা বিজ্ঞান বিভাগ একীভূতকরণের অযৌক্তিক সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে আজ (১২ আগষ্ট) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শান্ত চত্ত্বরে একটি বিশাল প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বক্তারা বিসিএস ক্যাডারে বাংলা বিভাগের সাথে ভাষাবিজ্ঞান বিভাগ একীভূতকরণের বিভিন্ন কুফল তুলে ধরেন।
সমাবেশে বাংলা বিভাগের ২০ তম আপর্তনের শিক্ষার্থী তৌসিফ আলম তার তুলনামূলক বিশ্লেষণাত্ত্বক বক্তব্যে বলেন, ”বাংলা বিভাগ এবং ভাষাবিজ্ঞান বিভাগ সম্পূর্ণ আলাদা দুটি বিভাগ। বাংলা বিভাগে বাংলা ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি, ইতিহাস, সমালোচনা, ও সৃজনশীল লেখালেখি নিয়ে কাজ করে। অপরদিকে ভাষাবিজ্ঞান হলো ভাষা সম্পর্কিত বিজ্ঞানভিত্তিক অধ্যয়ন, যা কেবল বাংলা নয়, বিশ্বের সব ভাষাকে নিয়ে গবেষণা করে।
এখন যদি শিক্ষা ক্যাডার এ ভাষাবিজ্ঞান বাংলা এর সাথে যুক্ত করা হয় তবে পাঠদানের অমিল, নিয়োগে বিভ্রান্তি, ন্যায্যতার প্রশ্ন, বিষয়ের উদ্দেশ্য হারানো সহ বিভিন্ন সমস্যার মুখোমুখি হবে। তাই আমার মতে আলাদা ভাষাবিজ্ঞান শিক্ষা ক্যাডার বা ভাষা বিজ্ঞান গবেষণা শাখা তৈরি করা যেতে পারে, যা ভাষা-সংক্রান্ত নীতি, ভাষা পরিকল্পনা, ভাষা প্রযুক্তি উন্নয়নে কাজ করবে। এতে দুই বিভাগই নিজেদের মূল উদ্দেশ্য অক্ষুন্ন রেখে এগিয়ে যেতে পারবে।”
এছাড়া বাংলা বিভাগের ২০ তম আবর্তনের আরেক শিক্ষার্থী সাবিদুল ইসলাম শিহাব বলেন, ” যদি আমরা তুলনা করি, ইংরেজি বা গণিতের মতো বিষয়গুলো যেমন আমাদের সূচনা লগ্ন থেকে আজীবন প্রয়োজন হয়ে থাকে, তেমনি একটি বিষয় হলো বাংলা। তাই এ ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতাও তুলনামূলকভাবে বেশি। উপরন্তু, শিক্ষা ক্যাডারে আসন সংখ্যা সীমিত, যেখানে অনেক বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী যথাযথ সুযোগ পাচ্ছেন না।”
এছাড়া ২০ তম আবর্তনের আরেক শিক্ষার্থী আফিয়া স্নেহা বাংলার মতো ভাষাবিজ্ঞান কে আলাদা সুযোগ দেওয়া নতুবা দুটো ডিপার্টমেন্ট কে এক করে অত্র বিষয়ে ক্যাডার সংখ্যা দ্বিগুন করে বাংলা ও ভাষাবিজ্ঞান নাম দেওয়ার প্রস্তাব করেন। উল্লেখ্য, পিএসসি (বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন) সম্প্রতি তাদের এক বিজ্ঞপ্তিতে বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারে বাংলা বিভাগ ও ভাষা বিজ্ঞান বিভাগ একীভূতকরণের ঘোষণা দেন। যার ফলে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।