নিজস্ব প্রতিবেদক: ‘‘মানুষ মানুষের জন্য – জীবন জীবনে জন্য’’ এই কথাটি যেনো মিথ্যে প্রমানিত হতে যাচ্ছে শিক্ষক নুর মোহম্মদের কাছে। চিকিৎসা নামক মহাযুদ্ধে স্ত্রীকে বাঁচাতে যুদ্ধ করেই যাচ্ছেন। বাড়িতে অসুস্থ স্ত্রী মাহমুদা খাতুন কে রেখে কোন কাজই ঠিকমতো করতে পারছেন না। স্ত্রী মাহমুদার (৩৬) দুটি কিডনিই নষ্ট। স্থানীয় চন্ডিগড় উচ্চ বিদ্যালয়ের একজন ইংরেজি শিক্ষকের পক্ষে বিশাল খরচ চালানো সম্ভব হচ্ছে না। নিজস্ব সহায় সম্বল যা আছে ইতোমধ্যে সবই শেষ হয়েছে চিকিৎসার খরচ মেটাতে গিয়ে। প্রায় পাঁচ বছর ধরে চলছে তার চিকিৎসা।
দুর্গাপুর পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ড এর বাগিচাপাড়া এলাকার আলহাজ¦ মৌলভী হাফিজ উদ্দিনের তৃতীয় কন্যা মাহমুদা খাতুন। মেয়ের চিকিৎসার জন্য মাসে প্রয়োজন প্রায় ৩০ হাজার টাকা। নিজের আয়ের বাইরে জমি জমা বিক্রি করে সহয় সম্বল শেষ করে মেয়েকে বাঁচাতে চলছে পিতার প্রাণান্ত চেষ্টা।
ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালসহ অন্যান্য হাসপাতালে টানা পাঁচ বছর ধরে চলছে এই চিকিৎসা। বর্তমানে ডায়ালাইসিস সেবা নিতে প্রতিমাসেরই লাগছে টাকা। অর্থসংকটে মাঝপথেই ডায়ালাইসিস বন্ধ করতে হচ্ছে তাদের। হাতে টাকা নাই, টাকা জোগাতে না পেরে চিকিৎসা বন্ধ করে দেয়ার চিন্তাই করছেন তারা। চিকিৎসা মেটাতে ঋণে জর্জরিত হয়ে পথে বসছে এই সমভ্রান্ত পরিবারটি।
শিক্ষক নুর মোহাম্মদ জানান, হাসপাতালের কিডনি ইউনিট, আমার স্কুলের চাকরি এবং রোগী নিয়ে আসা-যাওয়া করতে করতে আমি এখন খুবই ক্লান্ত। স্ত্রীকে বাঁচাতে আমার সহায় সম্বল সব শেষ করেছি। বর্তমানে ডায়ালাইসিসের খরচ জোগাতে হিমসিম খেতে হচ্ছে। মানুষের কাছ থেকে ধার-দেনা আর কতো নেয়া যায়।
তিনি আরো বলেন, কিডনিরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. আসাদুজ্জামান স্যার জানিয়েছেন, বর্তমানে ঈকউ তে অতিক্রান্ত হয়েছে। তার দুটি কিডনিই বিকল অবস্থায় রয়েছে। এই মুহুর্তে দেশের বাইরে কিডনি প্রতিস্থাপন (ট্রান্সপ্লান্ট) ছাড়া স্ত্রীকে বাঁচানোর কোন উপায় নাই। এতে প্রায় ৩০ লাখ টাকা ব্যায় হবে। স্ত্রীকে বাঁচাতে বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয় স্বজন সহ সমাজে বিত্তবানদের এগিয়ে আসার অনুরোধ জানাচ্ছি।
মৌলভী হাফিজ উদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, প্রতি মাসে প্রায় ৩০ হাজার টাকা জোগার করতে না পারলে বন্ধ হয়ে যাবে তাঁর মেয়ের চিকিৎসা। মাহমুদার দুটি কিডনিই বিকল। মেয়ের জামাইয়ে স্কুলের বেতন ছাড়া কোন আয় নাই, এতোদিন ধার-দেনা ও সহায় সম্বল বিক্রি করে চিকিৎসার খরচ চালিয়েছি। এখন আর পারছিনা।
কিডনী ডিজিজ বা ঈকউ তে অতিক্রান্ত হয়েছে। তার দুটি কিডনির অবস্থা খুবই খারাপ ও লাস্ট স্টেজে আছে। এই মুহুর্তে দেশের বাইরে নিয়ে কিডনি প্রতিস্থাপন (ট্রান্সপ্লান্ট) করা ছাড়া মেয়েকে বাঁচানোর কোন উপায় নাই। এর জন্য প্রায় ৩০ লাখ টাকার প্রয়োজন। আমাদের পক্ষে এতোটাকা জোগার করা মোটেও সম্ভব নয়। শেষ পর্যন্ত কি হয় জানি না। আমার মেয়ে কে বাঁচাতে সকল বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয় স্বজন সহ সমাজে বিত্তবানদের সহায়তা চেয়েছেন তিনি।