ইবি প্রতিনিধি:
বাসে বাড়তি ভাড়া নিয়ে তর্কের জেরে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) এক ছাত্রীকে বাস সহকারী দ্বারা মারধরের ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে শাখা ছাত্রদল ও ছাত্রশিবির। মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য রাফিজ আহমেদ ও শাখা ছাত্রশিবিরের প্রচার সম্পাদক সৈয়দ আবসার নবী হামযা স্বাক্ষরিত পৃথক দুই বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা যায়।এতে তারা দোষীদের আইনের আওতায় এনে দ্রুত শাস্তি প্রদানের দাবি জানান।
যৌথ বিবৃতিতে শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদ ও সদস্য সচিব মাসুদ রুমী মিথুন বলেন, “একজন নারী শিক্ষার্থীর সঙ্গে এই বর্বর ও লজ্জাজনক আচরণ কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। ভাড়া নিয়ে কথা বলায় একজন শিক্ষার্থীর গায়ে হাত তোলা এবং প্রকাশ্যে হেনস্তা করার ঘটনা শুধু মানবিকতাবিরোধীই নয়, তা নারীর প্রতি চরম অসম্মানও বটে।”
তারা আরও বলেন, “আমরা এই ঘটনার দ্রুত তদন্ত ও দোষী ব্যক্তির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। সেই সঙ্গে, ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে খুলনা-কুষ্টিয়া পরিবহন মালিক সমিতির সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সকল শিক্ষার্থীর নিরাপদ যাতায়াত নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।শাখা ছাত্রদল দৃঢ়ভাবে জানায় শিক্ষার্থীদের মর্যাদা, নিরাপত্তা ও অধিকার রক্ষায় সর্বদা সোচ্চার থাকবে।
যৌথ বিবৃতিতে শাখা ছাত্রশিবির সভাপতি মাহমুদুল হাসান ও সেক্রেটারি ইউসুফ আলী বলেন, “আজ দুপুরে কুষ্টিয়া থেকে ক্যাম্পাস ফেরার পথে ভাড়া নিয়ে তুচ্ছ ঘটনার জেরে একজন ছাত্রীর গায়ে হাত তোলা ও হেনস্তা করার ঘটনা অত্যন্ত ন্যক্কারজনক ও নিন্দনীয়। একজন নারী শিক্ষার্থীর প্রতি এমন সহিংস আচরণ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে দোষী ব্যক্তিকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।”
তারা আরও বলেন, “সাধারণ যাত্রী ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা পরিবহন সংস্থাগুলোর দায়িত্ব। কিন্তু কিছু পরিবহন সংস্থা ও ব্যক্তির বেপরোয়া আচরণ এবং কতিপয় চালক ও সহকারীর ঔদ্ধত্যের কারণে শিক্ষার্থীরা অনিরাপদ বোধ করছে। এ ধরনের ঘটনা যেন ভবিষ্যতে আর না ঘটে সে জন্য প্রশাসনকে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।”
আমরা হেনস্তার শিকার হওয়া শিক্ষার্থীর প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করছি এবং এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার জন্য অনুরোধ জানান।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) দুপুর ১ টার দিকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী ক্যাম্পাসের উদ্দেশ্যে বগুড়া থেকে আসছিলেন। পথিমধ্যে কুষ্টিয়ার চৌড়হাস থেকে তিনি রূপসা বাসে উঠতে চাইলে তারা জনি পরিবহনের বাস দেখিয়ে বলে এটাতে উঠেন। তখন ভুক্তভোগী বাস সহকারীকে বলেন, ‘আমি যেটা বেসিক ভাড়া, ২৫ টাকা দিব’। পরে বাসে উঠার পর টাকা নেওয়ার সময় বাস সহকারী ৪০ টাকা রেখে দেয়। এর প্রতিবাদ করলে বাস সহকারী তাকে বলেন, ‘কোথাকার অশিক্ষিত মেয়ে তুমি, আমি শেখপাড়ায় থাকি ভাড়া কত এটা আমরা জানি না? নাটক শুরু করছো?’ তখন ভুক্তভোগী ছাত্রী তার স্বামীকে ফোন দিতে গেলে ফোন কেড়ে নিয়ে গায়ে আঘাত করে। মুখে ঘুসি, বাপ-মা তুলে গালিগালাজসহ ভুক্তভোগীর ভিডিও ধারণ করে জোর করে গাড়ি থেকে নামিয়ে দেয়।
এ ঘটনার পর ভুক্তভোগীর বিভাগের শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে ৫ টি বাস আটক করে রাখেন।