নিজস্ব প্রতিবেদক: নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলায় সরকারি খাদ্য গুদামে মজুদে গড়মিল থাকার ঘটনায় সহযোগিতা ও দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেনকে শোকজ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) মঙ্গলবার নেত্রকোনা জেলা ভারপ্রাপ্ত খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা (ডিডি ফুড) মো. মোয়েতাছেমুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এরআগে গত ১০ জুলাই ময়মনসিংহ আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা (আরসি ফুড) মো. আশরাফুল আলম তাকে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য চিঠি প্রদান করেন।
এতে দায়িত্বে অবহেলা ও অনিয়মে সহযোগিতার কারণে কেন তার বিরুদ্ধে “সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮” অনুযায়ী প্রশাসনিক ও বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট সুপারিশ করা হবে না, তার সন্তোষজনক জবাব ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে বিভাগীয় কার্যালয়ে পাঠাতে বলা হয়েছে।
এ দিকে খালি বস্তা আত্মসাৎ ও অনিয়মের অভিযোগে উপজেলার সদর খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি এলএসডি) হুমায়ুন কবিরকে গত ১০ জুলাই প্রত্যাহার (স্ট্যান্ড রিলিজ) করা হয়।
প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, বার্ষিক পরিদর্শনের অংশ হিসেবে গত ২৯ জুন বারহাট্টা সদর খাদ্য গুদাম পরিদর্শনে যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খবিরুল আহসান। পরিদর্শনকালে গুদামে নির্দিষ্ট পরিমাণের চেয়ে ৯ দশমিক ৪৪০ মেট্রিক টন ধান অতিরিক্ত পান তিনি। এছাড়া চার হাজার ৪৬৭টি খালি বস্তার ঘাটতি পাওয়া যায়। সেই অনুযায়ী খাদ্য বিভাগে পরিদর্শন রিপোর্ট পাঠান ইউএনও।
এমন গড়মিলের প্রতিবেদন পেয়ে নড়েচড়ে বসে খাদ্য বিভাগ। পরে ১০ জুলাই গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হুমায়ুন কবিরকে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়। আর দায়িত্বে অবহেলা ও অনিয়মে সহযোগিতার অভিযোগে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. দেলোয়ার হোসেনের কাছে ব্যাখ্যা তলব করে খাদ্য বিভাগ।
ব্যাখ্যা তলবের চিঠি ও খাদ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত জুন মাসে কয়েকটি সাপ্তাহিক প্রতিবেদনে গুদামের মজুদের বিষয়ে ভুল তথ্য জেলা কার্যালয়ে দিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির। পরে জেলা কার্যালয় কর্তৃক বাস্তব প্রতিবেদনে এর কোন মিল পাওয়া যায়নি। কিন্তু গুদামের মজুদসহ সার্বক্ষণিক মনিটরিং ও এই বিষয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে ১৫ দিন পরপর মাসে দুটি রিপোর্ট পাঠানোর দায়িত্ব উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের। নিয়ন্ত্রণকারী কর্মকর্তা হিসেবে ওসিএলএসডি’র সার্বিক কার্যক্রম মনিটরিংয়ের বাধ্যবাধকতা থাকলেও তা সঠিকভাবে পালন না করে উল্টো অনিয়মে সহযোগিতা করেন দেলোয়ার হোসেন। ফলে দায়িত্বে অবহেলা ও অনিয়মের কারণে তার কাছে ব্যাখ্যা তলব করেছে খাদ্য বিভাগ।
বারহাট্টা উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. দেলোয়ার হোসেন জানান, গত ১৫ জুনে যে রিপোর্ট পাঠিয়েছি, সেই পর্যন্ত গুদামে মজুদ ঠিক ছিলো। গড়মিল পরে হয়েছে। এর দায় আমার নয়। ৩০ জুন ইউএনও পরিদর্শন করে গড়মিল পেয়েছেন। ওই সময় আমি সহযোগিতায় ছিলাম মাত্র। যথাযথ সময়ে আজই শোকজের জবাব পাঠিয়েছি।
এ বিষয়ে নেত্রকোনা জেলার ভারপ্রাপ্ত খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. মোয়েতাছেমুর রহমান বলেন, দায়িত্ব অবহেলা ও অনিয়মে সহযোগিতার অভিযোগে তাকে শোকজ করা হয়েছে। জবাব পাওয়ার পর এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।