টাঙ্গাইল প্রতিনিধি:
টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীতে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে দুটি ঘর ভাংচুর ও শুটকি মাছ সহ স্বণালংকার ও নগদ অর্থ লুটপাটের ঘটনায় ন্যায় বিচারের জন্য থানায় মামলা দায়ের করেছেন ভোক্তভোগী পরিবার। রোববার (১৩ জুলাই) সকালে উপজেলার বীরতারা ইউনিয়নের বলাসুতী গ্রামে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে এ ঘটনা ঘটে । এনিয়ে বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় দেনিক পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও পুলিশের টনক নড়ে।
মামলার বিবরণ ও ভোক্তভূগী বাড়ীর মালিক মামলার বাদী কুরবান আলী অভিযোগ করে জানায়, বিবাদী প্রতিবেশী মৃত তমেজ আলীর ছেলে ওয়ার্ড বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ও তার ছেলে মিজানুর রহমান ও আমিনুর রহমান এবং ওমেদ আলীসহ তার ছেলে রাসেল মিয়া গংরা মিলে আমার বসত ঘরে ভিতরে জমি পাবে দাবী করে ভাড়াটিয়া কিছু সন্ত্রাসী নিয়ে হামলা চালিয়ে দুটি বাড়ী ঘর ভাংচুর করে। ঘরের টিন ও মাটি খুঁড়ে ঘরের খুঁটি তুলে ফেলে ভাংচুর করে ছিন্নভিন্ন করে ফেলে।
এসময় ঘরে থাকা আমাদের ভ্রাম্যমান দোকানের ৫০ হাজার টাকার শুকটি মাছ ও ৬০ হাজার টাকার স্বর্ণালংকার সহ নগদ ৫০ হাজার টাকা টকা এবং পাশের ঘর থেকে ২ লক্ষ ত্রিশ হাজার টাকা মূল্যের স্বর্ণের গহনা লুটে নেয় সন্ত্রাসী দল। এসময় বাঁধা দিতে গেলে সন্ত্রাসীরা বাঁশের লাটি ও কাঠ দিয়ে মারতে আসে। সেই সাথে তারা আমাদের কে কোথাও কোন অভিযোগ না করার জন্য প্রাণ নাশের হুমকি দিয়ে যায়। পুলিশ ঘটনাস্থলে আসার পরে থেকেই শফিকুল গংরা বাড়ী ছেড়ে পালিয়ে যায়। তার পরেও আমরা চরম নীরাপত্তাহীনতায় ভূগছি।
আমরা এখন এই বৃষ্টির দিনে খোলা আকাশের নিচে কীভাবে পরিবার পরিজন নিয়ে রাত কাটাবো। এই স্বাধীন দেশে কেন এই অমানবিক অত্যাচার ? এঘটনায় আমি ১১ জনকে আসামী করে সোমবার(১৪ জুলাই) সন্ধ্যায় থানায় মামলা দায়ের করেছি। বর্তমান সরকার সহ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীসহ পুলিশ প্রশাসনের কাছে অপরাধীদের গ্রেপ্তারসহ দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবী করছি। স্থানীয় নূরুল ইসলাম, আ: বারেক, রফিকুল ইসলাম, এছাহাক আলী, আব্বাছ আলী ছানোয়ারা বেগম ও রওশনআরা, ছালেহা বেগম, মালেকা, শান্তিক বেগম ও নূরজাহান বেগমসহ এলাকাবাসীরা জানান, দিনে দুপুরে এই ভাবে শফিকুল সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে ত্রাসের সৃষ্টি করে হামলা চালিয়ে ঘর-বাড়ীর ভাংচুর করে লন্ডভন্ড করেছে। এখন এই গরীব দুই অসহায় দিনমুজুর পরিবারের উপায় কী? প্রশাসনের কাছে দ্রæত বিচার করছি।
উক্ত ঘটনা নিশ্চিত করে বীরতারা ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ড জামায়াতে ইসলামীর সভাপতি নূর মোহাম্মদ জানান, জমি সংক্রান্ত বিষয়ে বিরোধ কে কেন্দ্র করে স্থানীয় প্রভাবশালী কিছু ব্যাক্তি নিজেরা আর্থিক স্বার্থের জন্য এঘটনাটি ঘটিয়ে এলাকায় অশান্তি সৃষ্টি করেছে যা মোটেই কাম্য নয়। ঘরবাড়ী ভংচুরের ঘটনায় দ্রæত অপরাধীদের গ্রেপ্তারের দাবী জানাচ্ছি। স্থানীয় ইউপি সদস্য মনিফা জানান, সন্ত্রাসী বাহিনীরা যে গরীব অসহায় লোকদের ঘর ভাংচুর করে চূর্ণ করে দিয়েছে। এটা খুই অমানবিক ও দু:খজনক ঘটনা। দোষীদেরকে গ্রেপ্তার সহ কঠিন শাস্তির জোর দাবী জানাচ্ছি।
এবিষয়ে বীরতারা ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি আমির হোসেন তারা জানান, বিষয়টি আমি জেনেছি, মানুষ দিনে কাজ করে রাতে একটু শান্তিুও জন্য নিদ্রা যায়। পাখির বাসাও মানুষ ভাংঙ্গে না তবে ঘর বাড়ী ভাংচুর করা ঠিক হয়নি। এঘটনায় দোষীদের বিচার হওয়া দরকার। অভিযুক্ত বিবাদী শফিকুল গংদের কাছে এবিষয়ে জানতে তাদের বাড়ীতে গেলে কাউকে পাওয়া যায়নি। বাড়ী তালাবদ্ধবস্থায় পাওয়া যায়।
তাদেরকে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা ফোন হলে বন্ধ পাওয়া যায়। এঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ধনবাড়ী থানার ওসি এস এম শহিদুল্লাহ গনম্যাধম কে জানান, শুটকি মাছ ব্যবসায়ীদের বাড়ী ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনায় কুরবান আলী বাদী হয়ে সোমবার (১৪ জুলাই) সন্ধ্যায় ১১ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেছেন। দ্রæত আসামীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।