ভোলা প্রতিনিধি॥
ভোলার চরফ্যাশন উপজেলায় চাঞ্চল্যকর এক ঘটনার জন্ম দিয়েছেন মুরাদ হাওলাদার নামের এক যুবক। অভিযোগ উঠেছে, তিনি স্থানীয় এক কাঠ মিস্ত্রির মো. ইয়াকুব মুন্সির স্ত্রী আয়েশা বেগম (৩৬), তাঁর ৬ সন্তানের মধ্যে তিন সন্তান, নগদ অর্থ এবং স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে পালিয়ে গেছেন মুরাদ। এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে ব্যাপক আলোচনা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
শুক্রবার (২৭ জুন) দুপুরে সন্তানরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ করে মায়ের সন্ধান চান। ঘটনাটি ঘটেছে গত ২৪ জুন (মঙ্গলবার) বেলা ১১টার দিকে চরফ্যাশন উপজেলার জিন্নাগড় ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা কাট মিস্ত্রি মো. ইয়াকুব মুন্সির স্ত্রী আয়েশা বেগমকে নিয়ে পালিয়ে যায় একই এলাকার আব্দুর রব হাওলাদারের ছেলে মুরাদ হাওলাদার। লিখিত অভিযোগে বলা হয়, মুরাদের সহযোগী ছিলেন ইউএনও অফিসের কর্মচারী সোহাগ ও তার স্ত্রী পপি।
ক্ষুব্ধ স্বামী ইয়াকুব মুন্সি বলেন,“আমি ঘটনার দিন বাজার থেকে ফিরে দেখি, ঘরে তালা লাগানো, চাবি নিচে রাখা। ছেলেরা জানায়, মা নেই। আমি অনেক খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে। পরেদিন সন্তানদের কাছে জানতে পারি আমাদের এলাকার মুরাদ ও তার বন্ধু ইউএনও অফিসের সোহাগ প্রায় সময় আমাদের বাসায় আশা যাওয়া করতো।
মুরাদ ও সোহাগ সন্তানদের হুমকি দিয়েছে যদি আমাকে বলে তাহলে সন্তান ও তার মা এবং আমাকে একবারে মেরে ফেলবে এই ভয়ে তারা আগে আমাকে বলিনি।” তিনি আরও বলেন, “ইউএনও অফিসের সোহাগের সহযোগিতায় মুরাদ হাওলাদার আমার ঘরে থাকা ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা, দুই ভরি স্বর্ণালঙ্কার এবং তিন সন্তানসহ আমার স্ত্রীকে নিয়ে পালিয়ে যায় । আমি এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার চাই।”
ইয়াকুবের ছেলে ইয়াসিন বলেন,“আমরা ৫ ভাই ১ বোন, সবাই বাবা-মায়ের সঙ্গে সুখেই ছিলাম। কিন্তু মুরাদ ও তার সহযোগী সোহাগ আমাদের পরিবার ভেঙে দিয়েছে। তারা আমাদের মা-কে অর্থ ও প্রলোভন দেখিয়ে ভুল পথে পরিচালিত করেছে। থানায় সাধারণ ডায়েরি করে নম্বর (০১৭২৪—–২৪২) ট্র্যাক করলে জানতে পারি, সোহাগ ও তার স্ত্রী এ ঘটনার সঙ্গে সরাসরি জড়িত।” স্থানীয়দের ভাষ্য মতে,“ইয়াকুবের স্ত্রী আয়েশা প্রায় মোবাইলে অনেক সময় ধরে কথা বলতেন এবং ইয়াকুব কাজে বাইরে থাকলে মুরাদ প্রায়ই তার বাসায় যেতেন এবং মাঝে মধ্যে তার সঙ্গে বন্ধু সোহাগও আসতেন। এখন শুনতেছি মুরাদ ইয়াকুবের তিন সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে পালিয়েছেন।
তারা আরও বলেন, মুরাদ এর আগেও এমন ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন,দুইজন নারীকে নিয়ে এর আগেও পালিয়ে যান তিনি।” এই ঘটনায় স্থানীয়রা অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। এই বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত মুরাদ হাওলাদারের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে তালা ঝুলছে এবং তার ভাই সংবাদকর্মীদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন। অপর অভিযুক্ত ইউএনও অফিসের কর্মচারী সোহাগ হাওলাদার বলেন,“আমি এই ঘটনায় জড়িত না। আমাকে ষড়যন্ত্র করে ফাঁসানো হচ্ছে।”
ফোন ট্র্যাকিংয়ের বিষয়ে তিনি বলেন, আমি গত বৃহস্পতিবার অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ছিলাম,সেদিন আমার দুইটা মোবাইল ফোন এবং আমার স্ত্রীর মোবাইল ফোন আমার কাছে ছিল।হাসপাতালে থাকাকালে মুরাদ আমার দুইটা মোবাইল ফোন আমার পরিবারের কাছে রেখে একটি ফোন নিয়ে চলে যায়।
চরফ্যাশন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজান হাওলাদার বলেন,“আমরা অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত চলছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাসনা শারমিন মিথির মুঠোফোনে একাধিকবার কল করেও তাকে পাওয়া যায়নি। ফলে এ বিষয়ে তাঁর কোনো বক্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি।