নিজস্ব প্রতিবেদক//
ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ ঢালচর ইউনিয়ন বিএনপির নব্য নেতা জসিম পাটোয়ারীর নৈরাজ্যে অসহায় দ্বীপের মানুষেরা। জেলেদের নদীর হার দখল, জেলে চাউল আত্মসাৎ, সালিশ বাণিজ্য, ভূমি দখলসহ নানা অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। ৫ আগস্ট পরবর্তী রাতারাতি বদলে গেছে তার অর্থনৈতিক চিত্র। তাকে টাকা দিলে মিলে সকল সমস্যার সমাধান। অভিযুক্ত জসিম পাটোয়ারী ঢালচর ইউনিয়ন বিএনপির নেতা পরিচয়দানকারী। তিনি ওই ইউনিয়নের বাসিন্দা মৃত রফিজল পাটোয়ারীর ছেলে।
অনুসন্ধানে গিয়ে স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা যায়, জসিম পাটোয়ারী আওয়ামীলীগ রাজনীতির সাথে দীর্ঘদিন পর্যন্ত সম্পৃক্ততায় রয়েছেন। সে দক্ষিণ আইচা থানা যুবলীগের ৪০ নাম্বার সদস্য ছিলেন। অপকর্মের দায়ে তাকে যুবলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এদিকে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর তিনি বিএনপির বড় নেতা বনে গেছেন। এরপর থেকে তার তান্ডব শুরু হয়। তিনি ঢালচর বিএনপির নির্যাতিন নেতাকর্মীদেরকে তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছেন। সাধারণ মানুষকে মিথ্যা মামলায় ঠেলে দিয়ে তাদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। বাজার ইজারা, নদীর হার দখল, এবং রাস্তার কাজ দিবে বলে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি।
আরও জানা যায়, গত ২৭-০৫-২০২৫ তারিখে জেলে চাউল জেলেদের মাঝে বিতরণ না করে তিনি তার সহযোগী মো.রফিক ক্বারী সহ আত্মসাৎ করেছেন। এছাড়া গত ০১-০৬-২০২৫ তারিখে নিম্নচাপে ক্ষতিগ্রস্থ ঢালচরলর অসহায় মানুষের জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঢেউটিন,চাউল, ত্রান সামগ্রী এবং নগদ আর্থিক পাঠানো হলে তা বিক্রি করে দেন জসিম পাটোয়ারী ও তার সহযোগী রফিক ক্বারী। সম্প্রতি ঢালচর ইউনিয়ন জাতীয় মৎস্যজীবি সমিতির কমিটি গঠন করা হয়। সেই কমিটিতে টাকার বিনিময়ে তার চাচাতো ভাই যুবলীগ সদস্য ইলিয়াছ পাটওয়ারীকে মৎস্যজীবি সমিতির পদে রাখেন তিনি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঢালচরের স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, জসিম পাটোয়ারীর অত্যাচারে এলাকায় থাকা দায় হয়ে পড়েছে।
সে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ও আমাদের জ্বালিয়ে খেয়েছে, এখন আবার নিজের খোলস পাল্টে বিএনপির সঙ্গে মিশে গিয়ে আমাদের আতঙ্কে পরিণত হয়েছে। অবৈধ উপায়ে অর্জিত তার অঢেল সম্পত্তি ও টাকা পয়সা রয়েছে। এসব টাকা পয়সা বিভিন্ন পর্যায়ের গুন্ডা পান্ডা এবং নেতাদের মধ্যে বিলিয়ে দিয়ে নিজেই এখন অঘোষিত সম্রাটে পরিণত হয়েছে। পুলিশকে ম্যানেজ করে সে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করছে। আমরা তার অত্যাচার থেকে মুক্তি চাই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দক্ষিণ আইচা বাজারের এক মুদি দোকানী ভুক্তভোগী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সুদের টাকা নিয়ে সময় মতো পরিশোধ করতে না পারায় তাকে মারধর সহ শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছিল। সে এখন অসহায় গরীব জেলেদের চাউল আত্মসাৎ করেন। এসব ঘটনা থেকে রক্ষা পেতে জসিম পাটোয়ারীকে যথাযথ শাস্তির আওতায় আনতে স্থানীয় প্রশাসন ও বিএনপির হাইকমান্ডের নজর দেওয়ার দাবি জানান।
অভিযোগ অস্বীকার করে ঢালচর বিএনপির নেতা জসিম পাটোয়ারী বলেন, আমার বিরুদ্ধে সব অভিযোগ মিথ্যা। কেউ প্রমাণ করতে পারবে না। আমাকে প্রতিহিংসা করে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ছড়ানো হচ্ছে। কোনো অভিযোগ প্রমাণ করতে পারলে রাজনীতি ছেড়ে দেব। চরফ্যাশন উপজেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি কয়ছর আহমেদ কমল বলেন, আওয়ামী লীগের বিভিন্ন প্রোগ্রামে অংশ নিয়েছেন এমন কিছু ছবি আমাদের কাছে আসছে। আমরা দলীয় হাইকমান্ডদের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা নিবো।