মাহমুদুর রহমান রনি (বরগুনা) প্রতিনিধি:- বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাব ও ভারী বর্ষণে ও নদীতে পানি বাড়ায় বরগুনার পাথরঘাটার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানির তোড়ে উপজেলার অনেক স্থানে বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উপজেলা নাচনাপাড়া ইউনিয়নের মানিকখালী বেড়িবাঁধ ভেঙে জোয়ারের পানি প্রবেশ করে প্লাবিত হয়েছে লোকালয়। ভেঙে যাওয়া বেড়িবাঁধের কারণে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় হাজারো মানুষের। বৃহস্পতিবার (৫ জুন) ভেঙে যাওয়া বেড়িবাঁধে সাঁকো নির্মাণ করে নৌবাহিনীর উন্মুক্ত করে দেয় জনসাধারণের জন্য।
গতকাল (২৯ মে) শনিবার পাথরঘাটা উপজেলার নাচনাপাড়া ও কাঠালতলী ইউনিয়নের সংযোগ সড়কটির ২০ মিটার জায়গা হলতা নদীর পানির তোড়ে ভেঙে যায়। ফলে দুই ইউনিয়নের মানুষের চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তলিয়ে যায় অন্তত ছয়টি গ্রাম। এই দুই ইউনিয়নের জনগণের চলাচলে ভোগান্তি নিরসনের উদ্যোগ নেন বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সদস্যরা। গত রোববার (১ জুন) সকালে নৌবাহিনী বরগুনা কন্টিনজেন্টের সদস্যরা জনসাধারণের চলাচলের জন্য ভেঙে যাওয়া সড়কে অস্থায়ী সাঁকো নির্মাণকাজ শুরু করেন। এবং আজ (৫ জুন) চলাচলের জন্য সাঁকোটি প্রস্তুত করা হয়।
জানা গেছে, অস্বাভাবিক জোয়ারের কারণে পাথরঘাটা উপজেলার নাচনাপাড়া ইউনিয়নের হলতা নদীর বেড়িবাঁধ মানিকখালী অংশে ভেঙে প্রায় ছয়টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পাঁচটি গ্রামের মানুষের চলাচলে ব্যাপক সমস্যা হয়।
এব্যাপারে স্থানীয় আখতারুজ্জামান খান বাদল বলেন, এর আগে যত কাজ হয়েছে ২ থেকে ৩ বছর লাগছে। এত দ্রুত যে এই সাঁকো (ব্রিজ) টি হবে আমরাও ভাবিনি। এজন্য আমাদের অনেক উপকার হয়েছে, আমার এখান থেকে চলাচল করতে পারতাম না।নৌকা বা অনেকটা দূর থেকে ঘুরে বাজারে আসতে হতো। এজন্য আমরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে আমরা ধন্যবাদ জানাই।
স্থানীয় ব্যাবসায়ী নূরুল আমিন শিকদার বলেন, নৌবাহিনীকে এত দিন দেখেছি আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করতে। এরা যে এতটা মানবিক, তা জানা ছিল না। দিনভর বৃষ্টিতে ভিজে পানির মধ্যে পিলার বসিয়ে সাঁকো নির্মাণ করছে। এটা দেখে চোখ জুড়িয়ে গেছে।
স্থানীয় সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম বলেন, এই সাঁকো টা না হলে ২ পাড়ের হাজারো মানুষের চলাচলে ব্যাপক ভোগান্তি হতো। এই রকম একটি সুন্দর কাজ আসলেই প্রশংসনীয় বটে। স্থানীয় লোকজন উপজেলা প্রশাসন ও নৌবাহিনীর তত্ত্বাবধানে এত দ্রুত কাজ করায় আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ তাদের।
এ ব্যাপারে নৌবাহিনীর কমান্ডার (বরগুনা) এম ওয়ালী উজ জামান সাংবাদিকদের বলেন, ২৯ মে নিম্নচাপের কারণে বেড়িবাঁধসহ ২০ মিটার রাস্তা ভেঙে যায়। ফলে এই এলাকার পাঁচটি গ্রামের মধ্যে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। দুর্ভোগে পড়েছেন হাজারো মানুষ। সমস্যা নিরসনের জন্য বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় বেড়িবাঁধসংলগ্ন অস্থায়ী সাঁকো (পোল) নির্মাণ করা হয়েছে, আজকে সাঁকোটি চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিজানুর রহমান বলেন, নিম্নচাপের প্রভাব ও ভারী বর্ষণের কারণে বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ায় কয়েকটি গ্রামের মানুষের চলাচলে ব্যাপক সমস্যা হয়। এটি জানার পরে স্থানীয় সকলের সাথে কথা বলে উপজেলা পরিষদের অর্থায়নে ও বাংলাদেশ নৌবাহিনী সার্বিক সহোযোগিতায় সাঁকোটি নির্মান করা করেছে।