নিজস্ব প্রতিনিধি:
জলবায়ু ও জনস্বার্থ বিবেচনায় ওরিয়নের কয়লাবিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিলের দাবীতে পরিবেশবাদীদের জোরালো প্রতিবাদ ঢাকায় জলবায়ু কর্মীদের সমাবেশে ওরিয়ন কয়লাবিদ্যুৎ প্রকল্পকে ‘রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপচয়’ আখ্যা। ১৯ মে( সোমবার) ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মাতারবাড়িতে প্রস্তাবিত ওরিয়ন ৬৩৫ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বাতিলের দাবিতে ইয়ুথ ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ, সৌহার্দ্য ইয়ুথ ফাউন্ডেশন, প্রচেষ্টা ফাউন্ডেশন, আমরাই আগামী, উই ক্যান কক্সবাজার, ক্লিন এবং বিডাব্লিউজিইডি এর যৌথ উদ্যোগে এক জোরালো জনসমাবেশ ও মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
এতে শতাধিক পরিবেশকর্মী, ছাত্র, নাগরিক প্রতিনিধি, অধিকারকর্মী এবং কক্সবাজারের ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দারা অংশগ্রহণ করেন। সমাবেশ থেকে বক্তারা বলেন, এই কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশের জনস্বার্থ, পরিবেশ ও অর্থনীতির জন্য এক মরণ ফাঁদ হবে। এটি জলবায়ু বিপর্যয়ের পথকে প্রশস্ত করবে এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদ অপচয়ের এক অন্যতম উদাহরণ হয়ে দাঁড়াবে।।
বক্তারা অভিযোগ করেন, যেখানে ৪৯২ মেগাওয়াট ক্ষমতার সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপনের পরিকল্পনা ছিল, সেই একই জমি একটি আমদানি নির্ভর কয়লাভিত্তিক দূষণকারী প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে — যা নবায়নযোগ্য জ্বালানি নিয়ে সরকারের ঘোষিত অঙ্গীকারের প্রতি এক ধরনের উপহাস। তারা আরও বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বছরে প্রায় ৫ মিলিয়ন টন CO₂ নিঃসরণ হবে, যা বাংলাদেশের জলবায়ু নীতির সঙ্গে সরাসরি সাংঘর্ষিক। শুধু পরিবেশ নয়, ইতোমধ্যে শত শত পরিবার তাদের দীর্ঘদিনের পেশা হারিয়ে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন, পানির সংকট ও শ্বাসকষ্টের মতো রোগ বেড়েছে।
কৃষি, চিংড়ি ও লবণচাষ কার্যত ধ্বংসের মুখে। সমাবেশে বক্তারা প্রশ্ন তোলেন — “যেখানে প্রকল্পটির নির্মাণই শুরু হয়নি, সেখানে কী ভিত্তিতে ২০৩০ সাল পর্যন্ত বারবার সময় ও ঋণ দেওয়া হচ্ছে? কয়লার নামে কার স্বার্থ রক্ষা হচ্ছে?” তারা সরাসরি বলেন, সরকার জনগণের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করছে এবং করদাতার টাকায় দূষণ তৈরি করছে। ১০,৫৭৯ কোটি টাকার রাষ্ট্রীয় ঋণ দিয়ে প্রকল্প বাস্তবায়নের সিদ্ধান্তকে “জনগণের অর্থের অপচয়” হিসেবে অভিহিত করেন বক্তারা। আন্দোলনকারীরা ঘোষণা দেন, অবিলম্বে কয়লাভিত্তিক প্রকল্প বাতিল করতে হবে। এই প্রকল্প বাতিল না হওয়া পর্যন্ত নবায়নযোগ্য জ্বালানির পক্ষে ও কয়লার বিরুদ্ধে সংগ্রাম চলবে। মানববন্ধন ও সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন: বিডব্লিউজিইডি, ক্লিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র প্রতিনিধি, বেসরকারি গবেষক, এবং কক্সবাজারের বাস্তুচ্যুত জেলে ও লবণচাষী পরিবার।