রুহুল আমিন,ডিমলা(নীলফামারী)
তিস্তা নদীর তীর রক্ষায় জিও ব্যাগ ফেলার কাজে ধীরগতি, অনিয়ম, বালু উত্তোলনের কারণে তীর ভেঙে ফসল নষ্টের প্রতিবাদে নীলফামারীর ডিমলায় মানববন্ধন করা হয়েছে। আজ শুক্রবার বিকেলে উপজেলার খালিশা চাপানি ইউনিয়নের বাইশপুকুর এলাকায় নদীতীরবর্তী বাসিন্দারা এ কর্মসূচি পালন করেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে তিস্তা নদীর তীর রক্ষায় ২০ কোটি টাকার প্রকল্প চলমান। এর মধ্যে ডিমলা উপজেলার খালিশা চাপানি ইউনিয়নের বাইশপুকুর এলাকায় তিস্তা ব্যারেজের ৫০০ মিটার ভাটিতে জিও ব্যাগ ফেলার প্রকল্প রয়েছে। এতে ৬ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। চারটি প্যাকেজে ভাগ করে ঠিকাদার নিয়োগ করে পাউবো। তবে কাজ সম্পন্ন করছে সাব ঠিকাদার।
মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, শুরু থেকেই বাঁধ নির্মাণের কাজে গাফিলতি ছিল। দুই মাস আগে কাজ শুরু হয়। এখনো প্রকল্পের ২০ ভাগ কাজ শেষ হয়নি। অথচ ২৫ দিনের মধ্যে সম্পূর্ণ কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। ঠিকাদারের গাফিলতি ও ধীরগতির কাজের কারণে তীরের বাসিন্দারা নিয়মিত ভাঙনের কবলে পড়ছে। সামান্য বর্ষায় ভাঙন আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে।
বক্তারা আরও বলেন, তিস্তায় এখন বাঁধ-বাণিজ্য শুরু হয়েছে। সরকারি টাকা লুটপাট করতে অসময়ে প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। কাজের অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে কথা বলে কোনো ফল হয় না। কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। বাঁধ নির্মাণে অনিয়ম-দুর্নীতির কারণেই ফসল এখন ঝুঁকিতে পড়েছে। পাউবোর কর্মকর্তারা ব্যস্ত প্রকল্প ও ব্যয় বাড়ানো নিয়ে। স্থানীয় কিছু লোকজনকে নিয়ে পাউবো কর্মকর্তারা এসব অনিয়ম ও দুর্নীতি করছেন। কাজ হচ্ছে দায়সারাভাবে।
মানববন্ধনে স্থানীয় বাসিন্দা আলতাফ হোসেন, জাহিদার হোসেন, সিরাজুল ইসলাম, উপজেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহব্বায়ক আশরাফুল ইসলাম, মুখ্য সংগঠক মাসুদ, জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যুগ্ম আহব্বায়ক আবু ইউসুফ, সিনিয়র সদস্যসচিব জিয়ারুল হক, মুখপাত্র রাশেদুজ্জামান প্রমুখ বক্তব্য দেন। স্থানীয়দের অভিযোগ, ভাঙন প্রতিরোধে প্রতিবছর বালুর বস্তা (জিও ব্যাগ) ফেলা হয় নদীতে। নদীর ভাঙন এলাকায় বালু উত্তোলন করে আবার সেখানেই বালুর বস্তা ফেলে প্রতিরোধ তৈরি করা হয়। এই প্রতিরোধব্যবস্থা শুধু পানিতে টাকা ফেলা। ভাঙন এলাকায় বালু উত্তোলন করা হলেও তা বন্ধে কোনো পদক্ষেপ নেই পাউবো ও স্থানীয় প্রশাসনের।
এ বিষয়ে ডালিয়া পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী বলেন, কাজ দরপত্র অনুযায়ী হচ্ছে। বরাদ্দ পেতে দেরি হওয়ায় কাজ দেরিতে শুরু হয়েছে। এ ছাড়া উজানের ঢলে হঠাৎ পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় কাজের ব্যাঘাত ঘটেছে। এখন পানি কমছে দ্রুত কাজ শেষ হবে।