নিজস্ব প্রতিবেদক: নেত্রকোনায় আট বছর বয়সি পুত্রকে হত্যার দায়ে পিতার যাবজ্জীবন সাজা দিয়েছেন আদালত। সেইসাথে ২০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড দেন আদালত।
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পিতা হলেন- নেত্রকোনা সদর উপজেলার কাঞ্চনপুর গ্রামের আবদুল জব্বারের ছেলে মো. এরশাদ মিয়া (৩৬)।
বুধবার (১৪ মে) বিকালে নেত্রকোনা জেলা ও দায়রা জজ মো. হাফিজুর রহমান আসামির উপস্থিতিতে এ রায় প্রদান করেন।
আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আবুল হাশেম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলার বরাতে আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আবুল হাশেম জানান, ১৫ বছর আগে ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার সাততী গ্রামের মতিয়র রহমানের মেয়ে মোছা. আফরোজা আক্তারের সাথে এরশাদ মিয়ার বিয়ে হয়। এরইমধ্যে তাদের সংসারে দুটি সন্তান হয়। প্রথম সন্তান মো. শাখাওয়াত হোসেন আরাফ। তার ছিল বয়স আট বছর। প্রসবের সময় মারা যায় দ্বিতীয় সন্তান। বিয়ের পর থেকেই স্বামী এরশাদ মিয়া স্ত্রী আফরোজাকে প্রায় সময়ই নির্যাতন করতেন। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে প্রায় চার বছর আগে স্বামীর বাড়ি থেকে চলে যান আফরোজা। তিনি পাশের কান্দুলিযা গ্রামে মামা লিটনের বাড়িতে থাকতেন।
এ সময়ে এরশাদ স্ত্রী ও সন্তানের কোন খোঁজ খবর রাখতেন না। আফরোজা মামার বাড়িতে থেকে সেলাই মেশিনে কাজ করে সন্তান নিয়ে সাংসার চালাতেন। একপর্যায়ে গত ২০২০ সালের ১০ নভেম্বর স্বামীকে তালাক দেন আফরোজা। তালাক দেওয়ায় এরশাদ মিয়া স্ত্রীর প্রতি ক্ষিপ্ত হন। পরে ২০২১ সালের ১৬ জানুয়ারী এরশাদ মিয়া কান্দুলিয়া গ্রামে গিয়ে একমাত্র ছেলে সাখাওয়াত হোসেনকে নিজ বাড়িতে নিয়ে আসেন এবং ছেলেকে তাকে হত্যা করেন।
খবর পেয়ে পুলিশ এরশাদ মিয়াকে আটক করে। এ ঘটনায় আফরোজা আক্তার ওইদিনই স্বামী এরশাদ মিয়ার বিরুদ্ধে নেত্রকোনা সদর মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন। পুলিশ তদন্ত শেষে একই বছরের ১৫ এপ্রিল আসামি এরশাদ মিয়ার বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়।
সরকার পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন পাবলিক প্রসিকিউটর আবুল হাসেম এবং আসামি পক্ষে আইনজীবি ছিলেন অ্যাডভোকেট পুরবী কুন্ড।