দ্যা মেইল বিডি / খবর সবসময়

; ;

দ্যা মেইল বিডি ডট কম

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধিত অনলাইন পত্রিকা, নিবন্ধন নং- ১১

নিজস্ব প্রতিবেদক: নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার কৃষি অফিসের জরিপ অনুযায়ী জানা গেছে, চলতি বছর লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে বেশি ধান উৎপাদন হয়েছে। কিন্তু বাজারের দামের তুলনায় সরকারি গুদামে ধানের দাম বেশি থাকার পরও কৃষক গুদামে ধান বিক্রি করছে না। কৃষক গুদামে বোরো ধান বিক্রি করার আবেদন করার পরও কেন ধান নিয়ে গুদাম মুখি হচ্ছেন না এমন প্রশ্ন তাদের মনেও।

চলতি মাসের ৯ তারিখ খাদ্য নিয়ন্ত্রক সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর মোট এক হাজার ৮৯ মেট্রিকটন ধান কেনা হবে। তার মধ্যে তারা মাত্র এক টন ধান কিনেছে। কৃষি অফিস কর্মকর্তা শারমিন সুলতানা গত ৯ মে বলেছিলন, তিনি এক হাজার ৬১৬ জন আগ্রহী কৃষকের নামের তালিকা খাদ্য নিয়ন্ত্রক বারাবর পাঠিয়েছেন। কিন্তু খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা তথ্য অনুযায়ী তিনি দুই হাজার একশো জন কৃষকের তালিকা পেয়েছেন। তিনি আরও জানিয়েছিলেন দাম বেশি থাকার পরও কৃষক কেন ধান নিয়ে কেন আসছে না বুঝতে পারছি না । ধান নিয়ে গুদাম মুখি হওয়ার জন্য কৃষকের উদ্দেশ্যে তিনি মাইকিং করাবেন বলেও জানিয়েছিলেন। কিন্তু আজ ১৪ মে পর্যন্ত সেরকম কোন উদ্যোগ বারহাট্টায় দেখা যায়নি।

কৃষি অফিস থেকে বোরো ধান বিক্রয়ে আগ্রহী কৃষকের তালিকার কয়েকজন কৃষকের সাথে যোগাযোগ করে জানা যায়, তাদের নাম তালিকায় কিভাবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে তা তারা জানেন না। কেউ কেউ বলছে সে কোন কৃষকই না। আবার কেউ কেউ জানান তারা এলাকায় থাকেন না।

বারহাট্টা সদর ইউনিয়নের নিশ্চিন্তপুর ব্লকের ছয় নম্বর তালিকাভুক্ত রফিকুল ইসলাম বলেন, আমার কোন জমিজমা নেই। আমি অন্যের জমি করে সামান্য খোরাকী পেয়েছি। আমার নাম কিভাবে অন্তর্ভুক্ত হলো আমি জানি না।

চিরাম ইউনিয়নের নৈহাটি ব্লকের বজলু তালুকদার বলেন, আমি অল্প পরিমাণ ধান পাই। কোন দিনই গুদামে ধান বিক্রি করিনি। একই বক্লের ৫নং কৃষক গোলাম মোস্তফার ছেলে আলম বলেন, কৃষি অফিসের তালিকার ব্যপারে আমাদের কিছু জানা নেই। আমাদের জমি আছে, কিন্তু আমরা মাত্র খোরাকীর বুঝ জমি চাষ করেছি। বিক্রি করার মত ধান নেই। কৃষি অফিসের লোকজন বাজারে বসে বসে মুখ দেখে দেখে এই সব লিষ্ট করেছে।

নৈহাটি গ্রামের মোস্ত মিয়া বলেন, আমি যা ধান পেয়েছি এগুলো আমার খাওয়ার জন্যই যথেষ্ট হয় না বিক্রি করবো কোথায় থেকে?

এই বক্লের ১০নং কৃষক দুলাল মিয়াকে ফোন দিলে ঢাকা থেকে রেহান মিয়া নামে এক ভদ্রলোক ফোন রিসিভ করে বলে আমি রিকশায় আছি।

আসমা ইউনিয়নের গুমুরিয়া ব্লকের ২নং কৃষক জুয়েল মিয়া বলেন, আমি কোন কৃষক নই। তবে নাম টা হয়তো কেউ দিয়েছে।

সিংধা ইউনিয়ন চন্দ্রপুর ব্লকের কৃষক তালিকার ৯নং ব্যক্তির নাম্বারে ফোন দিলে তিনি বলেন, তালিকায় কেমনে নাম দেওয়া হয়েছে তা তিনি জানেন না। একই ব্লকের ২নং তালিকা ভুক্ত ব্যক্তিকে ফোন দিলে ছাইকুল মিয়া নামের এক ব্যক্তি ফোন রিসিভ করে বলেন, তালিকায় কেমনে নাম আসলো তার জানা নেই।

এছাড়া রায়পুর, সাহতা, বাউসীসহ সাত ইউনিয়নের যাদের সঠিক নাম আছে তারাও জানেন না কবে নাগাদ গুদামে ধান কেনা শুরু করবে আর কবে শেষ হবে। গ্রামের সহজ সরল কিছু কৃষক ভাবছে ধান কেনার সময় হলে তালিকায় দেওয়া মোবাইল নাম্বারে ফোন করবে। আবার কোন কোন কৃষক বলছেন, মাঠ পর্যায়ে কৃষি অফিসাররা এসে দেখে দেখে কিছু কৃষককে সুবিধা দিয়ে প্রকৃত কৃষকদের বঞ্চিত করছে। তাদের দাবী প্রকৃত কৃষক সব সময় অবহেলিত। তাদের মধ্যে যাদের গুদামে ধান বিক্রির অভিজ্ঞতা আছে। তারা বলছে গুদামে ধান নিয়ে যাওয়ার পর ভাল ধানও খারাপ হয়ে যায়।

খাদ্য গুদামে কৃষক কর্তৃক ধান বিক্রির আগ্রহী তালিকা থেকে মাত্র ৩০টি নামের তালিকা যাচাই করে এই রকম অনিয়ম পাওয়া গেছে বাকী গুলো জানা সম্ভব হয়নি।

বারহাট্টা উপজেলায় ১৬ জন সহকারী কৃষি অফিসার মাঠে কাজ করার পরও এমন অনিয়ম কেন হলো জানতে চাইলে বারহাট্টা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শারমিন সুলতানা বলেন, আমি জানি আমার সহকারী অফিসারগণ মাঠে গিয়ে কৃষকের কাছাকাছি থেকে কাজ করে। তারা মাঠ পর্যায়ে যাচাই-বাছাই করে কৃষকের তালিকা দেওয়ার কথা। সেই ক্ষেত্রে যদি তারা ইচ্ছাকৃত অনিয়ম করে তাহলে অবশ্যই তাদের জবাবদিহির আওতায় আনা হবে।

বারহাট্টা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খবিরুল আহসান বলেন, এ বিষয়ে কৃষি কর্মকর্তার সাথে কথা বলেছি। অনিয়ম যদি কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারী করে থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Share.
Leave A Reply

মোঃ আব্দুল আওয়াল হিমেল
প্রকাশক ও সম্পাদক 
দ্যা মেইল বিডি ডট কম
মোবাইল: +৮৮০ ১৩১৪-৫২৪৭৪৯
ইমেইল: themailbdnews@gmail.com
ঠিকানা: ১০২/ক, রোড নং-০৪, পিসি কালচার হাউজিং সোসাইটি, শ্যামলী, ঢাকা-১২০৭

নিউজরুম: +৮৮০ ১৩১৪-৫২৪৭৪৯
জরুরী প্রয়োজন অথবা টেকনিক্যাল সমস্যা: +৮৮০ ১৮৩৩-৩৭৫১৩৩

© 2025 Themailbd.com. Designed and developed by Saizul Amin.
Exit mobile version