নিজস্ব প্রতিবেদক: নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে বিয়ের দাবিতে মাদরাসা পড়ূয়া এক ছাত্রের বাড়িতে অবস্থান নিয়েছে এক স্কুল ছাত্রী। এ ঘটনায় ওই মাদরাসা ছাত্র ও বাবা-মাসহ পরিবারের লোকজন বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান।
রবিবার (১১ মে) দুপুরে উপজেলার সমাজ-সহিলদেও ইউনিয়নের সাকরাজ গ্রামের আব্দুস ছালামের ছেলে আলী নূরের বাড়িতে অবস্থান নেয় ওই ছাত্রী। সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ওই ছাত্রী সেখানেই অবস্থান করছে বলে জানা গেছে।
স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, আলী নূর ও স্কুল ছাত্রীর মধ্যে দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে।
আলী নুর উপজেলার সাকরাজ গ্রামের আব্দুস ছালামের ছেলে। তিনি স্থানীয় একটি মাদরাসায় দশম শ্রেণিতে পড়াশোনা করেন।
অপরদিকে স্কুল ছাত্রী উপজেলার সুয়াইর ইউনিয়ের নলজুরী গ্রামের বাসিন্দা ও স্থানীয় একটি স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী। তার বাবা নেই, মা ঢাকায় কাজ করেন। গ্রামে চাচার কাছে থেকে স্কুলে পড়াশোনা কর ওই ছাত্রী।
ভুক্তভোগী ছাত্রীর চাচী জানায়, গত বুধবার রাতে আলী নূর দেখা করতে আসে ছাত্রীর সাথে। তখন পরিবারের লোকজন আলী নূরকে আটকে রেখে তার মা-বাবাকে খবর দেয়। পরে বৃহস্পতিবার সকালে পরিবারের লোকজন গিয়ে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে আলী নূরকে বাড়িতে নিয়ে আসে। তারপর থেকে আলী নূর ও তার পরিবার পক্ষ থেকে কোন যোগাযোগ করেনি। এদিকে ছেলেকে অন্যত্র পাঠিয়ে দেয়।
বিষয়টি জানতে পরে আজ (রবিবার) দুপুরের দিকে বিয়ের দাবিতে আলী নূরের বাড়িতে গিয়ে অবস্থান নেয় ভুক্তভোগী ছাত্রী। এসময় আলী নূরের বাবা-মা তাকে মারধর করে বাইরে বের করে দিয়ে ঘরে তালা লাগিয়ে পালিয়ে যায়। মেয়ের বয়স ১৮ বছর ঠিক থাকলেও আলী নূরের পরিবারের লোকজন বলে ছেলের বয়স কম।
ক্তভোগী ছাত্রী জানায়, আলী নূরের সাথে আমার তিন বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। গত বুধবার রাতে সে আমাকে আনতে গিয়েছিল। তখন আমার পরিবারের লোকজন দেখে তাকে আটকে রাখে। সকালে আলী নূরের বাবা-মা বিয়ের আশ্বাসে তাকে ছাড়িয়ে আনেন। তারা কথা রাখেনি, তাই বাধ্য হয়ে আমি এখানে এসেছি। আলী নূরের বাবা-মা আমাকে মারধর করে ঘর থেকে বের করে দিয়ে দরজায় তালা লাগিয়ে পালিয়ে গেছে। আলী নূরের সাথে মোবাইল ফোনে কথা বলেছি। সে আসবে কিনা কিছু বলে না। বিয়ে করে আমাকে ঘরে না তোলা পর্যন্ত আমি এখানে অবস্থান করবো।
ঘটনাস্থলে থাকা সাকরাজ গ্রামের খায়রুল ইসলাম বলেন, মেয়েটা এসেছে শোনে দেখতে এসেছি। কয়েকদিন আগে রাতে দেখা করতে গিয়ে ছেলেটাকে মেয়ের বাড়িতে আটকে রাখা হয়েছিল। পরে পরিবারের লোকজন মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে ছাড়িয়ে এনেছে। এখন মেয়ে বিয়ের দাবিতে ছেলের বাড়িতে অবস্থান নিয়েছে। পরিবারের লোকজন পালিয়ে না গিয়ে আলোচনা করে বিষয়টা শেষ করার দরকার ছিলো।
এ বিষয়ে জানতে আলী নূরের মোবাইলে ফোন দেওয়া হলে বন্ধ পাওয়া যায়। এমনকি তার বাবার মোবাইল বন্ধ পাওয়া গেছে। ফলে তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
বিষয়টি অবহিত করলে মোহনগঞ্জ থানার ওসি মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়টি আপনার থেকেই প্রথম জানলাম। কেউ আমায় এ বিষয়ে জানায়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।