নিজস্ব প্রতিবেদক: চড়া দামে সার, কীটনাশক ও সেচ বিল দিয়ে ধান উৎপাদন করে খরচের সাথে হিসাব মিলছে না কৃষকদের। চলতি বাজারে প্রতি মন ধান বিক্রি হচ্ছে নয়শো থেকে সাড়ে নয়শো টাকা। এক মন ধান বিক্রি করলে সাথে আরও চার-পাঁচ কেজি বেশি ধান দিতে হচ্ছে কৃষককে। এতো পরিশ্রম করে ধান উৎপাদন করে বিক্রি করতে গিয়েও হয়রানির শিকার হচ্ছে কৃষক। সরকারিভাবে শুকনো ধানের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে এক হাজার ৪৪০ টাকা।
নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে জানা যায়, এই পর্যন্ত কৃষি অফিস থেকে একুশো কৃষকের তালিকা এসেছে। তারা গুদামে ধান দেবে বলে আবেদন করেছেন। বারহাট্টা উপজেলায় দু’টি খাদ্য গুদামে এক হাজার ৮৯ মেট্রিকটন ধান ও ছয় হাজার ৬৭২ মেট্রিকটন চাল কিনা হবে বলে জানিয়েছে খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. দেলোয়ার হোসেন।
তিনি বলেন, আমি গত কয়েকদিন আগে কৃষকদের উদ্দেশ্যে মাইকিং করেছি এর পরও এই পর্যন্ত মাত্র এক টন ধান কিনতে পেরেছি।
বারহাট্টা খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবীর বলেন, আমার কাছে এই পর্যন্ত সাতটি ইউনিয়ন থেকে পাঁচশো ৬১ জন কৃষকের তালিকা পৌঁছেছে। গত এপ্রিল মাসের ২৭ তারিখ আনুষ্ঠানিকভাবে ধান, চাল সংগ্রহের উদ্বোধন হয়েছে। এই পর্যন্ত আসমা ইউনিয়নের গুমুরিয়া গ্রামের মোস্তফা নামের একজন কৃষকের কাছ থেকে এক টন ধান কেনা হয়েছে। এছাড়া অন্য কোন কৃষক এখনও আসেনি। গুদামে ধান দিতে হলে ১৪ শতাংশ এর উপরে ময়েশ্চারাইজার হলে নেওয়া যায় না। তাই হয়তো কৃষকের অনিহা। কিন্তু এই পর্যন্ত একশো ৬৮ মেট্রিকটন চাল সংগ্রহ করেছে বলে জানিয়েছে এই কর্মকর্তা।
কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, গুদামে ধান নিয়ে গেলে তাদরে নানা ধরনের হয়রানির শিকার হতে হয়। প্রথমেই ধানের নমুনা নিয়ে আদ্রতা পরীক্ষা করাতে হয়। এরপর একই জায়গায় শুকানো ধান গুলো নিয়ে যাওয়ার পর গুদামের দায়িত্বে থাকা লোকগুলো বলে উপরের বস্তার ধানগুলো ভাল নিচেরগুলো ভিজা ইত্যাদি বলে নান ধরনের হয়রানি করে।
বারহাট্টা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শারমিন সুলতানা বলেন, আমাদের অফিসে আদ্রতা পরিক্ষা করার মেশিন আছে। প্রথমেই যদি কৃষক আমার এখানে অল্প ধানের নমুনা নিয়ে আসে তাহলেই সহজে পরিক্ষা করতে পারে। ১৪ শতাংশ ময়েশ্চারাইজার থাকলে হয়রানি করার সুযোগ নেই।
কতজন কৃষক আবেদন করেছে ও এখনও আবেদনের সুযোগ আছে কি না জানতে চাইলে শারমিন সুলতানা বলেন, বারহাট্টা উপজেলা প্রায় ৩৪ হাজার কৃষক রয়েছে। তার মধ্যে এই পর্যন্ত আমার এখানে এক হাজার ৬১৬ জন কৃষক গুদামে ধান দেয়ার জন্য আবেদন করেছে। আবেদনের তালিকাটি ইতোমধ্যেই উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কাছে প্রেরণ করেছি। এখনও আবেদন করার সুযোগ রয়েছে বলে জানান তিনি।