নিজস্ব প্রতিবেদক: নেত্রকোনার বারহাট্টায় হ্যান্ডট্রলির চাপায় মনির হোসেন (৭) নামে দ্বিতীয় শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। নিহত শিশু উপজেলার রৌহা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র এবং একই উপজেলার গুলিয়া গ্রামের আ. সালামে ছেলে মনির হোসেন।
মঙ্গলবার (৬ এপ্রিল) ১১টা দিকে নিজ এলাকায় জানাজা শেষে নিহতের দাফন কার্য সম্পন্ন করা হয়েছে। এরআগে গত সোমবার রাত পৌনে ৯টার দিকে গুরুতর আহত অবস্থায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালের নেওয়ার পথে নেত্রকোনা জেলা সদরে পৌঁছা মাত্র শিশু শিক্ষার্থী মারা যান।
অভিযুক্ত হ্যান্ডট্রলি চালক মাসুদ মিয়া ওরফে মাস্কু মিয়া তিনি একই উপজেলার আসমা গ্রামের বাসিন্দা। স্থানীয় মতব্বরদের সহায়তায় শুধু মুচলেকার বিনিময়ে পাড় পেয়ে গেলেন অবৈধ যান হ্যান্ডট্রলির চালক। শিশুর মৃত্যুতে অবৈধ যান জব্দে পুলিশও নেয়নি পদক্ষেপ।
জানা যায়, স্কুলে নির্মাণ কাজ জন্য হ্যান্ডট্রলি দিয়ে সরঞ্জাম নেওয়া হতো নিহত শিশুর বিদ্যালয়ে। গত সোমবার বিকাল ৩টার দিকে স্কুল ছুটির শেষে স্কুলের নির্মাণ সরঞ্জাম পৌঁছে ফেরার পথে মাস্কু মিয়ার হ্যান্ডট্রলিতে চড়ে বাড়িতে ফিরতে ছিলেন মনির হোসেন। রৌহা গ্রামে ভেতর দিয়ে যাবার পথে মোড় ঘুরানোর সময় হ্যান্ডট্রলি থেকে ছিটকে পড়ে পেছনের চাকায় চাপা পড়েন শিক্ষার্থী।
এ সময় স্থানীয়দের সহায়তায় মনির হোসেনকে গুরুতর আহত অবস্থায় বারহাট্টা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হয়। অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশুটিকে মমেক হাসপাতালে রেফার্ড করেন। মমেকে নেওয়ার পথে নেত্রকোনা শহরে পৌঁছামাত্র আনুমানিক রাত ৯টার দিকে শিশুটির মুত্যু হয়। স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গে দেন-দরবারের শেষে ভর্তুকি মূল্যে কৃষি কাজে ব্যবহৃত মেশিন দিয়ে তৈরি অবৈধ যানের চালকের কাছ থেকে মুচলেকা নেওয়া হয়। পরে আজ (মঙ্গলবার) শিশুটির দাফন কার্য সম্পন্ন করা হয়েছে। যার ফলে হ্যান্ডট্রলি চালক ও মালিক রয়ে গেলেন ধরা-ছোঁয়ার বাহিরে।
এ বিষয়ে বারহাট্টা থানার ওসি কামরুল হাসান জানান, ছুটিতে রয়েছি। খবর পয়ে ভারপ্রাপ্ত ওসির দায়িত্বে থাকা এসআই মোস্তাফিজুর রহমান ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। ভুক্তভোগীর পরিবার অভিযোগ দিতে অপারগতা প্রকাশ করেছে। স্থানীয়ভাবে বিষয়টি মিমাংসা করা হয়েছে।
শিশুর মৃত্যুর ঘাটনায় অবৈধ যান জব্দ ও চালকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে কিনা প্রতিবেদকের এ প্রশ্নে তিনি ওসি বলেন, অপমৃত্যু মামলা হয়নি। তবে সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে।
এদিকে স্থানীয়দের অভিযোগ কৃষি কাজের জন্য ভর্তুকি মূল্যে আমদানিকৃত কৃষি যন্ত্রপাতি তৈরিকৃত হ্যান্ডট্রলি, টাক্টর, নসিমন, করিমন এ জাতীয় যানের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। এসব যানের চালকদের নেই লাইসেন্স। গ্রামে-গঞ্জে এসব অবৈধ যানে দুর্ঘটনায় একদিকে শিশুসহ মানুষের মৃত্যুর পাশাপাশি অনেকে পঙ্গুত্ববরণ করছেন। এসব অবৈধ যানের মালিক ও চালকদের বিরুদ্ধে সরকার দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন এমনটা আশা করছেন এলাকাবাসী।