জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলায় দশানী নদীতে অবৈধভাবে নির্মিত দুটি বাঁধের কারণে উজানের তিন ইউনিয়নে শতাধিক বিঘা জমির পাকা ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হওয়ায় স্থানীয় কৃষকরা চরম ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। এ অবস্থায় দ্রুত বাঁধ অপসারণ ও পানি প্রবাহ নিশ্চিত করতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী।
দশানী নদী বকশীগঞ্জের মেরুরচর, সাধুরপাড়া ও বাহাদুরাবাদ ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হলেও গত ১০ দিনে স্থানীয়রা নদীতে দুটি বাঁধ নির্মাণ করে। এতে উজানের পানি ভাটিতে না গিয়ে উল্টোদিকে ছড়িয়ে পড়ায় সাধুরপাড়া, বগারচর ও বাহাদুরাবাদ ইউনিয়নের ২০টি গ্রামের ফসলি জমি জলমগ্ন হয়ে যায়।
ইতোমধ্যে কয়েকশত বিঘা জমির ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ বিষয়ে স্থানীয় কৃষকরা জানান, ধান কাটার মাত্র ১৫-২০ দিন বাকি থাকতে এমন পরিস্থিতিতে তাদের ফসল নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। অনেকেই পানিতে ডুবে থাকা ধান জরুরি ভাবে কেটে তুলছেন, তবে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি এড়ানো সম্ভব হচ্ছে না। ষ সাধুরপাড়ার সাবেক শিক্ষক গোলাম কিবরিয়া মনু বলেন, “বাঁধ না সরালে এলাকায় খাদ্য সংকট ও স্থায়ী জলাবদ্ধতা দেখা দেবে।
সাবেক ইউপি সদস্য গাজী সহিজল হক অভিযোগ করেন, “ভাটির বাঁধে উজানের পানি আটকে কৃত্রিম বন্যা সৃষ্টি করা হয়েছে।” স্থানীয় বিএনপি নেতা আবুল কাশেম দাবি করেন, “নদীর গতিপথ বদলে দেওয়ার মতো কাজের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।” ঘটনাটির প্রতিক্রিয়ায় বকশীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. মাসুদ রানা জানান, অবৈধ বাঁধ নির্মাণ একটি ফৌজদারি অপরাধ।
দ্রুত বাঁধ অপসারণ ও দায়িত্বপ্রাপ্তদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম সতর্ক করে দিয়ে বলেন, “জলাবদ্ধতা বাড়লে রোপা আমন চাষও ব্যাহত হতে পারে।” ইউএনও’র আশ্বাস সত্ত্বেও স্থানীয়রা দ্রুত সমাধান না পেলে মানববন্ধনসহ তীব্র প্রতিবাদের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন স্থানীয় এলাকাবাসী। এ বিষয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন তৈরি করে তা প্রকাশের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বকশীগঞ্জ জামালপুর প্রতিনিধিঃ রাহিন হোসেন রায়হান।