উবায়দুল্লাহ রুমি, ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার উচাখিলা ইউনিয়নের গো-হাটা ও শ্মশানের জমি নিয়ে বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা এবং ধর্মীয় সম্প্রীতি বিনষ্টের অপচেষ্টার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছে ‘ইত্তেফাকুল উলামা’ ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা শাখা। সোমবার দিবাগত রাতে ঈশ্বরগঞ্জ প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনে ইসলামি আন্দোলন ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা শাখার সভাপতি মুফতি হাবিবুল্লাহ লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।
তিনি বলেন, “বাঙালির হাজার বছরের ইতিহাস ধর্মীয় সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। অথচ সম্প্রতি উচাখিলা ইউনিয়নের একটি শ্মশানকে কেন্দ্র করে কিছু উগ্রচিন্তাধারার ব্যক্তি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মিথ্যাচার করছে এবং সাম্প্রদায়িক উস্কানি ছড়াচ্ছে।” তিনি অভিযোগ করেন, গত ২৭ এপ্রিল ওই গোষ্ঠী মানববন্ধনের নামে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার প্রধান সড়ক অবরোধ করে যানজট সৃষ্টি করে এবং রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স চলাচলেও বাধা দেয়।
তারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব এরশাদুল আহমেদের পদত্যাগ দাবি করে উস্কানিমূলক স্লোগান তোলে। সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, মানববন্ধনে শ্মশান ভাংচুর ও উচ্ছেদের যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। ২৮ এপ্রিল বিকেলে স্থানীয় উলামায়ে কেরাম, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও এলাকাবাসী সরেজমিনে পরিদর্শন করে এমন কোনো ঘটনার প্রমাণ পাননি। এমনকি স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যরাও ভাংচুর বা উচ্ছেদের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। মুফতি হাবিবুল্লাহ জানান, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে শ্মশানের ক্ষতিগ্রস্ত পিলার সংস্কার এবং মন্দির উন্নয়নের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
তবে এরপরও কিছু উগ্রচিন্তাধারার লোকজন ধর্মীয় সম্প্রীতি নষ্টের অপচেষ্টা করছে। সংবাদ সম্মেলনে তিনটি দাবি উত্থাপন করা হয়: ১. ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ। ২. মিথ্যাচার ও সাম্প্রদায়িক উস্কানিদাতাদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান। ৩. আগামী ২৯ এপ্রিল উপজেলা পরিষদ চত্বরে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ কর্মসূচি ও বৃহত্তর মানববন্ধন আয়োজন, যাতে সর্বস্তরের তৌহিদী জনতার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়। এই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বক্তারা ঈশ্বরগঞ্জে ধর্মীয় সম্প্রীতি অক্ষুণ্ণ রাখার আহ্বান জানান এবং সকলকে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার অনুরোধ করেন। পরে রাতেই আলোচনা স্বাপেক্ষে মানববন্ধন কর্মসুচি স্থগিত করা হয়।