নিজস্ব প্রতিবেদক: নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলায় চাঁদা না পেয়ে পেট্রোল পাম্প ভাঙচুর করেছে আল আমিন (২৫) নামে এক যুবক। এতে ১০-১২ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে।
শনিবার (২৬ এপ্রিল) এ ঘটনায় পেট্রোল পাম্প মালিক বাদী হয়ে থানায় অভিযোগ করেছেন।
এরআগে শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার ইসলামপুর এলাকায় নেত্রকোনা-মোহনগঞ্জ সড়কের পাশে থাকা ’মেসার্স শুভ্র শান্তি ফিলিং স্টেশন’ নামে ওই পেট্রোল পাম্পে হামলা চালায় ওই যুবক। এতে পাম্পটিতে জ্বালানি ও তেল সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।
অভিযুক্ত আল আমিন উপজেলার ইসলামপুর গ্রামের মৃত মাসুম মিয়ার ছেলে। তার একটি পোল্ট্রি ফার্ম রয়েছে।
বারহাট্টা থানার ওসি কামরুল হাসান এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ওই যুবক মানসিক ভারসাম্যহীন। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়েছিল। ওই যুবক পুলিশের সাথেও খারাপ আচরণ করেছে। তার পরিবারকে এ বিষয়ে চাপ দেওয়া হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে পরমর্শ করে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাকে অবশ্যই আইনের আনা দরকার।
স্থানীয় কয়েকজন অভিযুক্ত আল আমিনকে মানসিক ভারসাম্যহীন দাবি করলেও পেট্রোল পাম্প মালিক দীপক কুমার সাহার দাবি- আল আমিন মানসিক ভারসাম্যহীন নয়। মানসিক ভারসাম্যহীন হলে তিনি পোল্ট্রি ফার্মের ব্যবসা করেন কেমনে?
পুলিশ,স্থানীয় লোকজন ও ভুক্তভোগীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, গত ১৩ বছর ধরে উপজেলার ইসলামপুর এলাকায় ওই পেট্রোল পাম্পটি অবস্থিত। পাম্পের পাশেই বাড়ি আল আমিনের। শুরুতে কিছুদিন পাম্পে চাকরি করেছেন আল আমিন। গত কয়েক মাস যাবত পাম্প মালিকের কাছে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিলেন আল আমিন। চাঁদা না দেওয়ার পাম্প মালিককে প্রায় সময় গালাগাল করতেন তিনি।
গত শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ছুরি নিয়ে মালিক দীপক কুমার সাহাকে আঘাত করতে আসেন আল আমিন। এসসময় তিনি দৌড়ে পাম্পের পাশের একটি কক্ষে তালা লাগিয়ে নিজেকে রক্ষা করেন। পরে সিমেন্টের পিলার দিয়ে আঘাত করে জ্বালানি তেল সরবরাহের তিনটি মেশিনের ভেঙে ফেলেন আল আমিন। এক পর্যায়ে লোকজন এগিয়ে আসার পর তিনি চলে যান। এ ঘটনায় পাম্প মালিক দীপক কুমার বাদী হয়ে থানায় অভিযোগ করেছেন।
পাম্প মালিক দীপক কুমার সাহা বলেন, আল আমিন ভারসাম্যহীন নয়। কয়েক মাস যাবত আমার কাছে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিল। টাকা না দেওয়ায় সে আমাকে প্রায়ই গালাগাল করতো। গতরাতে হঠাৎ ছুরি নিয়ে আমাকে আঘাত করতে আসে। আমি একটি কক্ষে গিয়ে আশ্রয় নেই। পরে সিমেন্টের পিলার দিয়ে আঘাত করে মেশিনগুলোর যন্ত্রপাতি ভেঙে চলে যায়। এতে আমার ১০-১২ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। স্থানীয়দের সাথে পরামর্শ করেই এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ দিয়েছি।
স্থানীয় ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি ও ইসলামপুর গ্রামের বাসিন্দা মিলন মিয়া বলেন, আল আমিন মানসিক ভারসাম্যহীন নয়। সে একটা বেয়াদব। পাম্পে ভাঙচুর চালিয়ে ব্যাপক ক্ষতি করে এখন পাগলের অভিনয় করছে। আইন অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
এদিকে অভিযুক্ত আল আমিনের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খবিরুল আহসান বলেন, এ ঘটনায় আমার কাছে এখনো কেউ অভিযোগ করেনি। শুনেছি অভিযুক্ত নাকি মানসিক ভারসাম্যহীন।
অঘটন ঘটিয়ে কেউ হয়তো পাগলের অভিনয় করতে পারে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়া অপরাধীকে মানসিক ভারসাম্যহীন বলা ঠিক কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি (ইউএনও) বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিতে পুলিশের সাথে কথা বলব।