নিজস্ব প্রতিবেদক: নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলায় চার সন্তানের জনকের ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ। এ মৃত্যুকে ঘিরে রহস্য দেখা দিয়েছে নিহতের প্রতিবেশি ও স্বজনদের মাঝে।
মৃত মোবারক হোসেন (৪২) পূর্বধলার আগিয়া ইউনিয়নে মহিষবেড় গ্রামের আব্দুস সালামের ছেলে। তিন কৃষি কাজ করতেন এবং চার ছেলে সন্তানের জনক ছিলেন তিনি।
শনিবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরের দিকে উপজেলার বিশকাকুনি ইউনিয়নের বিষমপুর গ্রামের মৃতের স্ত্রী’র নয়া স্বামী বাদশা মিয়ার ঘরের বারান্দার পায়রার সাথে ঝুলে থাকার অবস্থায় মৃতদেহ উদ্ধার এবং ময়না তদন্তের জন্য নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে পুলিশ।
এরআগে গত শুক্রবার দিনগত রাত ১০টা থেকে শনিবার ভোর পর্যন্ত যেকোন সময়ে এ মৃত্যুর ঘটনা ঘটে থাকতে পারে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশসহ এলাকাবাসী।
মৃতের মহিষবেড় গ্রামের প্রতিবেশি সোহাগ মিয়া জানান, আনুমানিক তিন মাস আগে মোবারকের স্ত্রী খায়রুন নাহার পরকীয়ার জেরে স্বামীকে তালাক না দিয়ে বাদশা মিয়ার সাথে ঢাকায় চলে যান এবং বাদশা মিয়াকে বিয়ে করেন। এরপর কিছুদিন পর মোবারক ও খাইরুন নাহারের বড় ছেলে জিহাদ (১৯) ঢাকায় অবস্থান জানতে পেয়ে খাইরুন নাহারকে ফিরিয়ে আনতে বাবা-ছেলে ঢাকায় যান। তখন খাইরুন নাহার মোবারক হোসেনকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেছিল এবং ফিরিয়ে আনতে ব্যর্থ হয়ে তারা বাবা-ছেলে ফিরে আসেন।
তিনি আরো বলেন, গত শুক্রবার রাত ১০টার দিকে মোবারক হোসেনের সাথে আমার শেষ দেখা ও কথা হয়েছিল। রাত ১০টার পর মোবারক বিষমপুর গ্রামে যেয়ে থাকতে পারেন। খবর পেয়ে আজ (শনিবার) ৯টার দিকে ঘটনাস্থলে যাই। বিষমপুর গ্রামের অনেক মানুষের সাথে কথা বলে জানতে পারি, গত বৃহস্পতিবার বাদশাসহ মৃতের স্ত্রী খাইরুন নাহার (৩৭) এলাকায় এসেছিলেন। এই তথ্য পেয়ে ভুক্তভোগী মোবারক হয়তো খাইরুন নাহারের নতুন স্বামী বাদশা মিয়ার গ্রামের বাড়িতে গিয়েছিল। এই মৃত্যুকে নিয়ে আমিসহ আমাদের মহিষবেড় গ্রামের অনেকের কাছে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে।
মৃতের চাচা আব্দুর রহমান স্থানীয় সাংবাদিকদের জানান, মোবারক খুব সহজ-সরল ছিল। তাদের সংসারে চারটি ছেলে রয়েছে। সন্তানদেরকে রেখে স্ত্রী খাইরুন নাহার অন্যজনকে বিয়ে করার পরেও মোবারক খাইরুন নাহারের কথা মত সব করতো। তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে আত্মহত্যার নাটক সাজানো হয়েছে। মামলা করার কথা জানান তিনি।
পূর্বধলা থানার ওসি মোহাম্মদ নূরুল আলম জানান, মোবারকের মৃতদেহ উদ্ধার শেষে ময়নাতদন্তের জন্য নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে শুক্রবার দিনগত রাত ১০টা থেকে শনিবার ভোর পর্যন্ত যেকোন সময় আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। ময়না তদন্তের প্রতিবেদন হাতে পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।