নিজস্ব প্রতিবেদক: নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলা পরিষদ চত্বরে সম্প্রতি সীমানা প্রাচীর ভেঙে নতুন গেইট নির্মাণ নিয়ে ব্যাপক বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, কোনো ধরনের গণবিজ্ঞপ্তি বা পরিষদের খোলামেলা সিদ্ধান্ত ছাড়াই, ঈদের ছুটির সময় সুযোগ বুঝে পুরনো প্রাচীর ভেঙে ফেলা হয় এবং নতুন গেইট নির্মাণ শুরু করা হয়।
স্থানীয়দের দাবি, এটি জনস্বার্থে নয়, বরং প্রভাবশালী এক সরকারি কর্মকর্তার গাড়ি চলাচলের সুবিধার্থে করা হয়েছে। যদিও প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এটি স্থানীয়দের আবেদনের ভিত্তিতে এবং নিরাপত্তাজনিত কারণে করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে পৌরসভার ঠিকাদার মজনু রহমান খন্দকার বলেন, “পৌরসভার একটি কাজের জন্য সাময়িক দেয়াল ভাঙা হয়েছিল, কাজ শেষে আমি আবার দেয়াল মেরামত করে দিয়েছি। কিন্তু পরবর্তীতে গেইট নির্মাণের সঙ্গে আমার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। উপজেলা প্রশাসন তাদের নিজস্ব তত্ত্বাবধানে কাজটি করেছে।
তিনি আরো বলেন গণমাধ্যমে প্রভাব বিস্তারের যে খবর এসেছে এটা মনে হয় সত্য নয়। স্থানীয়দের আবেদনের পেক্ষিতেই হয়তো উপজেলা প্রশাসন এই পদক্ষেপ নিয়েছে।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইউএনও এমদাদুল হক তালুকদার জানান, “স্থানীয়দের লিখিত আবেদন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী গেইট পুনঃনির্মাণ করা হয়েছে। এ বিষয়ে পরিষদের সভায় আলোচনা হয়েছে এবং ভবিষ্যতেও যেকোনো প্রস্তাব যাচাই-বাছাই করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
তবে বিতর্কের কেন্দ্রে থাকা প্রশ্নটি হলো- প্রাচীর ভাঙা ও গেইট নির্মাণের সময় এতটা গোপনীয়তা কেন? কেন এলাকাবাসী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের আগে থেকে জানানো হয়নি?
এ প্রসঙ্গে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক বিপিন বিশ্বাস পরিদর্শন শেষে গেইটটি বড় করার নির্দেশ দেন। অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার তাহমিনা আক্তার স্পষ্ট করে বলেন, “এটি উপজেলা পরিষদের নিজস্ব বিষয়। আমার এতে কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।”
স্থানীয় বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম বলেন, “জনগণের অর্থে নির্মিত সীমানা প্রাচীর এভাবে গোপনে ভাঙা এবং নতুন গেইট তৈরির ঘটনা কোনোভাবেই স্বচ্ছ প্রশাসনিক দৃষ্টান্ত হতে পারে না।”
অন্যদিকে এই পকেট গেট অনুমোদন দিলে উপজেলা পরিষদের পূর্ব পাশে নল্লা এলাকার বাসিন্দারাও পরিষদের ভেতর দিয়ে যাতায়াতের সুবিধা দাবী করবে এবং তারাও একটি পকেট গেইটের আবেদন জানাবে বলে জানা যায়।
এ ঘটনায় উপজেলা পরিষদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবার সম্ভাবনা রয়েছে পাশাপাশি পকেট গেইট নির্মাণে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার অভাব স্পষ্ট বলে মনে করছেন অনেকে।