বিপ্লব হোসেন, ইবি প্রতিনিধি:
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে(ইবি) বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির শাখার আয়োজনে ‘কুরআনিক কুইজ-২০২৫ প্রতিযোগিতা’ বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার( ২২ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৮ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্র নজরুল কলা ভবনের গগণ হরকরা গ্যালারীতে এটি অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল নুরুল ইসলাম সাদ্দাম, বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন কেন্দ্রীয় কলেজ কার্যক্রম ও ব্যবসায় শিক্ষা সম্পাদক মো.শহিদুল ইসলাম। এসময় ইবি গ্রীন ফোরামের সেক্রেটারি অধ্যাপক ড.মোস্তাফিজুর রহমান, ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওবায়দুল ইসলাম, ইবি শিবির শাখার সভাপতি মাহমুদুল হাসান ও সেক্রেটারি ইউসুব আলী উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া শিবির নেতাকর্মীসহ প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী এতে অংশগ্রহণ করেন।
কুইজে মোট ১০ জনকে পুরস্কৃত করা হয়েছে। এতে ১ম পুরস্কার বিজয়ী ইনফরমেশন এন্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি বিভাগের শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল মামুন, যথাক্রমে ২য়,৩য়, ৪র্থ, ৫ম ও ৬ষ্ঠ আইন বিভাগের শিক্ষার্থী নাজমুস সাকিব, ওবাইদুল্লাহ আল, মাহবুব মল্লিক তানজিম হোসাইন, শেখ মোহাম্মদ, মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন, ৭ম আল ফিকহ এন্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী নাজমুছ সাদাত, ৮ম ইনফরমেশন এন্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি বিভাগের শিক্ষার্থী রাহিকুল ইসলাম, ৯ম বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী ফখরুল ইসলাম এবং ১০ম পুরস্কার বিজয়ী ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী তানভীর শেখ।
এর আগে ‘ক্যারিয়ার গাইডলাইন প্রোগ্রাম ২০২৫’ এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল নুরুল ইসলাম সাদ্দাম বলেন, ‘থিঙ্ক গ্লোবালি বাট অ্যাক্ট লোকালি’, আপনি বৈশ্বিকভাবে চিন্তা করেন কিন্তু ডোমেসটিক্যালি কাজ করেন তবে দেশ এগিয়ে যাবে। মুসলিমদের এগিয়ে যেতে হলে গবেষণায় দক্ষ হতে হবে, ইহুদীরা বিশ্ব পরিচালনা করছেন এই গবেষকদের কোটি কোটি টাকা দিয়ে কিনে নেয়ার মাধ্যমে। আব্বাসীয়রা জ্ঞানের ভান্ডার গড়ে তুলেছিলেন বলেই অটোমানরা আসার পরও তাদের একটা প্রভাব ছিলো। আব্বাসীয়রা তাদের আয়ের অনেক বড় অংশ গবেষণায় ব্যয় করতো, মেধার মূল্যায়ন করতো বলেই আধিপত্য বিস্তার করতে পেরেছিলো।
মেধা যাদের আছে তাদের পশ্চিমারা পলিটিক্যালি সাইন করে না, তাই তারা বিশ্ব চালাতে পারছেন, আর আমরা মেধাবীদের পলিটিক্যালি সাইন করে নামমাত্র মেধাবীদের দাড় করিয়ে দেয়, যাতে দেশ উন্নত না হয়। তাই আগামীতে বহির্বিশ্বের চক্রান্ত রুখে দিয়ে দেশকে এগিয়ে নিতে হলে গবেষণার মূল্যায়ন ও এ খাতে অর্থ বরাদ্দ দরকার।
আমাদের আইটি সেক্টরে দক্ষ হতে হবে, দক্ষতার ক্ষেত্রে পশ্চিমারা যতটা আপডেট আমরা ততটা পিছিয়ে।
আগে জেনারেশন চেঞ্চ হতে ৫০-৬০ বছর লেগেছে, কিন্তু এখন তথ্য-প্রযুক্তির উৎকর্ষতার সাথে সাথে এতো বেশি রোবোটিক্স সিস্টেমের দিকে, সিগন্যালিক সিস্টেমের দিকে এ সোসাইটি এগিয়ে যাচ্ছে যে জেনারেশন চেঞ্জ হতে সময় লাগে ৫ বছর।
আমরা যদি লেখাপড়ার মান, কারিগরি শিক্ষা ও শিক্ষাপদ্ধতি চেঞ্জ না করি বেকারত্বের হার অনেক বেশি বেড়ে যাবে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এরকম কোনো পদক্ষেপ নেই, ইউজিসিতে কিছু গদবাঁধা মাথা বসে আছে, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকগুলো রাজনীতি নিয়ে ব্যস্ত, এ দেশ কোন দিক থেকে এগোবে!! বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে যদি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কারিকুলাম না চলে সেখানে কাকে নিয়ে কিভাবে দেশ গড়বো।
আমরা ইসলামী সংগঠন হিসেবে দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে তার লায়বিলিটির জায়গাগুলো খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি। বিশ্বের দরবারে একটা জাতিকে উন্নত করতে গেলে, মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে হলে একাডেমিক এক্সিলেন্সির কোনো বিকল্প নেই। বিশ্বে আজ যারা রাজত্ব করছে তাদের ক্ষেত্রে একাডেমিক এক্সিলেন্সি বড় নিয়ামক শক্তি হিসেবে ভূমিকা পালন করছে।
বেকারত্বের সমস্যা, করাপশনের প্রবণতা ও নোংরা রাজনীতি মাসেল পাওয়ারের দিকে ধাবিত করে। তাই ক্যাম্পাসগুলোতে মেধার চর্চা করতে হবে। আমরা বর্তমান কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সাথে একাধিকবার বসেছি তাদের জানিয়েছি যুবকদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেন, বিদেশি ইনভেস্টর নিয়ে আসেন, নাহলে বেকারত্বের এ ব্যর্থতার দায়-দায়িত্ব আপনাদের নিতে হবে। তবে শুধু ডিজিটাল দাসত্বের দিকে যেনো এগিয়ে না যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। তবেই অন্ধের মতো সরকারি চাকুরির প্রতি নেশা কমবে, বেসরকারি চাকুরিতে আগ্রহ বাড়বে এবং উদ্দোক্তা তৈরি হবে। Without skill, honesty is valueless, but without morality skill is less valueless। তাই দেশের যুবসমাজকে সৎ-দক্ষ উভয়ই হতে হবে তাহলে দেশ মাথা উঁচু করে দাড়াবে বিশ্ব দরবারে।’