কে. এম সাখাওয়াত হোসেন: শ্রমিকদের বকেয়া পাওনা পরিশোধ এবং শ্রমিক ও ছাত্র নেতাদের উপর হামলাকারী পুলিশ সদস্যদের বিচারের দাবিতে নেত্রকোণায় মশাল মিছিল হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) রাত ৭টার দিকে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন নেত্রকোণা জেলা সংসদের উদ্যোগে নেত্রকোণা পৌরশহরের সাতপাই কালিবাড়ি মোড় থেকে মশাল মিছিলটি যাত্রা করে। তেরিবাজার ও ছোট বাজার হয়ে শহীদ মিনারের সামনে ্
পরে শহীদ মিনারের সামনে সংগঠনের সভাপতি আহাম্মেদ তানভীর মোকাম্মেলের সভাপতিত্বে ও আজিজুর রহমান সায়েমের সঞ্চালনায় সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক পৃথ্বীরাজ রুদ্র ও অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, আন্দোলনরত শ্রমিকদের উপর পুলিশি হামলা এবং বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি দিলীপ রায়ের উপর পুলিশি হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
বক্তারা বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে স্টাইল ক্রাফটস লিমিটেড, অ্যাপারেলস প্লাস ইকো লিমিটেড, টিএনজেড অ্যাপারেলস লিমিটেডসহ কয়েকটি গার্মেন্টস কারখানার শত শত শ্রমিক তাদের বকেয়া পাওনা বুঝে পাওয়ার দাবিতে আন্দোলন করছেন। আন্দোলন চলাকালে গত ২৩ মার্চ স্টাইল ক্রাফটস লিমিটেডের শ্রমিক রাম প্রসাদ সিং জনি মৃত্যুবরণ করেছেন। যা একটি কাঠামোগত হত্যাকাণ্ড। রাম প্রসাদ সিং জনির কাঠামোগত হত্যাকাণ্ডের বিচার ও শ্রমিকদের বকেয়া পাওনা পরিশোধ নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শ্রম উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াসহ সরকারের দায়িত্বশীলদের কোন তৎপরতা বা বক্তব্য আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়নি। উল্টো আন্দোলনরত শ্রমিকদের উপর পুলিশি হামলার ঘটনা ঘটেছে। মুখে দায় ও দরদের রাজনীতির কথা বললেও এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারও আদতে পুঁজিপতিদের স্বার্থরক্ষাকারী সরকার। অভ্যুত্থানের পরেও আমরা দেখেছি বকেয়া বেতনের দাবিতে আন্দোলনরত শ্রমিকদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।
বক্তারা আরো বলেন, বকেয়া পাওনা পরিশোধের দাবিতে আন্দোলনরত শ্রমিকদের উপর পুলিশি হামলার ঘটনা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নিপীড়ক চরিত্রেরই বহিঃপ্রকাশ। শ্রমিকদের এই ন্যায্য আন্দোলনে ইতোমধ্যে সংহতি জানিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নসহ অপরাপর প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠন। আজকে শ্রমিকদের শ্রম ভবন ঘেরাও কর্মসূচিতে সংহতি জানাতে গিয়ে পুলিশি হামলা ও আটকের শিকার হয়েছেন বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি দিলীপ রায়। ছাত্র ইউনিয়নের পক্ষ থেকে দিলীপ রায়ের উপর পুলিশি হামলা ও তাকে আটকের নিন্দা জানাই। দিলীপ রায় স্বৈরাচার হাসিনাবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম নেতা। নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের কথা বলা হলেও আদতে অভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী ছাত্র নেতাদের বিরুদ্ধে খড়্গ হস্ত হয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। আমরা অবিলম্বে দিলীপ রায়ের মুক্তি চাই।
একইসাথে শ্রমিকদের বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধ এবং শ্রমিকদের উপর হামলাকারী পুলিশ সদস্যদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানাই। সরকার যদি তার নিপীড়ক চরিত্রের পরিবর্তন না ঘটায় তবে ছাত্র-শ্রমিক-জনতা সম্মিলিতভাবে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলার ঘোষনা দেন বক্তারা।