নিজস্ব প্রতিবেদক: নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলায় হতদরিদ্র মানুষের জন্য বরাদ্দকৃত ভিজিএফের চাল পাচারের সময় ১০ বস্তা চাল উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় নাজিরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল আলীর সম্পৃক্ততার অভিযোগ উঠেছে। যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে স্থানীয় জনতা।
মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) বিকেলে নাজিরপুর বাজারে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রায় পাঁচ শতাধিক মানুষ জড়ো হয়ে চেয়ারম্যানের অপসারণ ও গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়ে ঘণ্টাব্যাপী প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেন।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, গরিব-অসহায়দের জন্য বরাদ্দকৃত ১০ কেজি করে চাল ঈদ উপহার হিসেবে দেওয়া হলেও অনেক পরিবার তাদের প্রাপ্য চাল পায়নি। অভিযোগ রয়েছে, চেয়ারম্যান আব্দুল আলী ও তার ছেলে স্বাধীন এবং বিশ্বস্ত লোকজনের মাধ্যমে সরকারি চাল পাচারের চেষ্টা করেন।
এরআগে সোমবার (২৪ মার্চ) রাত ১০টার দিকে উপজেলার পশ্চিম নাজিরপুর এলাকায় পুলিশের তল্লাশি চৌকিতে একটি অটোগাড়িতে পাচারের উদ্দেশ্যে নেওয়ার সময় ১০ বস্তা সরকারি চাল ধরা পড়ে।
কলমাকান্দা থানার ওসি মুহাম্মদ ফিরোজ হোসেন বলেন, খবর পেয়ে সরকারি ১০ বস্তা চাল উদ্ধার করা হয়। পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া স্থানীয়রা জানান, এটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। দীর্ঘদিন ধরেই দুর্নীতি ও আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে চেয়ারম্যান আব্দুল আলীর বিরুদ্ধে। সরকারি অনুদান লুটপাট করে নিজ স্বার্থে ব্যবহার করার অভিযোগে এলাকাবাসী তার পদত্যাগ ও গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছে।
বিক্ষোভকারীরা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, যদি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে চেয়ারম্যানকে অপসারণ না করা হয়, আরও কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। এমনকি উপজেলা পরিষদ ঘেরাও করা হবে।
এ ঘটনার পর থেকে চেয়ারম্যান আব্দুল আলী ও তার ছেলে স্বাধীন গা ঢাকা দিয়েছেন বলে জানা গেছে। তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে জনগণের সেবা করা যেখানে দায়িত্ব, সেখানে দুর্নীতির মাধ্যমে সাধারণ মানুষের হক লুটপাট করা অত্যন্ত লজ্জাজনক ও নিন্দনীয়। চেয়ারম্যান আব্দুল আলী যদি সত্যিই এই ঘটনায় জড়িত থাকেন, তবে এটি স্থানীয় প্রশাসনের জন্য এক বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর পদক্ষেপ না নিলে ভবিষ্যতে আরও বড় দুর্নীতির ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।