নিজস্ব প্রতিবেদক: নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার গড়াডোবা ইউনিয়নের বাশাটি বাজারের ৬২ বছর বয়সী তরকারি ব্যবসায়ী তারা মিয়া গত শুক্রবার রাতে নৃশংসভাবে খুন হয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তারা মিয়ার বাড়ি গড়াডোবা ইউনিয়নের ওয়াই গ্রামে বাসিন্দা। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বাশাটি বাজারে পেয়াজ-রসুন বিক্রির ব্যবসা করতেন। প্রতিদিনের মতো বাজার শেষে তিনি রাত ৯টা থেকে ১০টার মধ্যে সাইকেলযোগে বাড়ি ফিরতেন। তবে ঘটনার দিন তিনি সাইকেল নিয়ে যাননি এবং ধারণা করা হচ্ছে, তিনি হেঁটেই বাড়ি ফিরছিলেন। ফেরার পথে কাটাহুসিয়া গ্রামের চৌপার পুল এলাকায় তার উপর হামলা চালানো হয় এবং তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। পরে তার ক্ষতবিক্ষত মরদেহ সাতারখালী খালের কাঁদায় পড়ে থাকতে দেখা যায়।
তারা মিয়ার স্ত্রী বলেন, “আমার স্বামীর সাথে কারো কোনো ঝগড়া-বিবাদ ছিল না। আমার জানামতে তার তেমন কোনো শত্রু ছিল না। প্রতিদিনের মতো সে রাত ৯টা থেকে ১০টার মধ্যে বাড়ি ফিরে আসে এবং স্থানীয় ওয়াই বাজারে বন্ধুবান্ধবের সাথে সময় কাটিয়ে রাত ১২টা থেকে ১টার মধ্যে ঘরে ফেরে। কিন্তু গতরাতে সে আর বাড়ি ফেরেনি। আমি সেহরির সময় তাকে দেখতে না পেয়ে আমার ছেলে ও দেবরকে বলি খোঁজ নিতে। পরে জানতে পারি তার লাশ সাতারখালী খালে পাওয়া গেছে।”
নিহতের ভাই সোলায়মান বলেন, “রাতের শেষে ভাবির কাছ থেকে জানতে পারি ভাই রাতে বাড়ি ফেরেননি। অনেক খোঁজাখুঁজির পর আমরা কাটাহুসিয়া গ্রামের চৌপার পুল এলাকায় সাতারখালী খালে তার মরদেহের খোঁজ পাওয়া যায়। আমার ভাইয়ের সাথে কারো কোনো শত্রুতা ছিল না। তাকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডের সঠিক বিচার চান তিনি।”
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কাটাহুসিয়া গ্রাম এবং তার আশেপাশের এলাকায় সন্ধ্যার পর থেকে রাতভর মাদকাসক্তদের আড্ডা বসে। স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে, চৌপার পুল এলাকা বখাটেদের অন্যতম মাদকসেবনের জায়গা। স্থানীয়রা সন্দেহ করছেন, তারা মিয়ার হত্যাকাণ্ডের সাথে মাদকাসক্ত বখাটেদের সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারে।
কেন্দুয়া থানার ওসি মিজানুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, “ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি আমরা বিশেষ গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করছি এবং পুলিশের বিভিন্ন সংস্থা একযোগে কাজ করছে। আমরা আশা করছি দ্রুতই আসামিদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হবো।”
তারা মিয়ার নৃশংস হত্যাকাণ্ডে পুরো এলাকাবাসী শোকাহত এবং আতঙ্কিত। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দ্রুত বিচারের দাবিতে এলাকাবাসীর পাশাপাশি নিহতের পরিবারও আহবান জানিয়েছে।