মাসুদ রানা,জবি প্রতিনিধি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়(জবি)
প্রেসক্লাবের উদ্যোগে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ক্যাম্পাস সাংবাদিকদের ভূমিকা ও পরবর্তী করণীয়” শীর্ষক আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল-২০২৫ অনুষ্ঠিত হয়েছে।বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ক্রিয়াশীল সংগঠন, শিক্ষক,কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে প্রোগামটি আয়োজিত হয়। রবিবার (১৬ মার্চ) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউট অধিভুক্ত পোগোজ ল্যাবরেটরি স্কুল এন্ড কলেজের অডিটোরিয়ামে আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলটি অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিয়াশীল সংগঠনগুলোর মধ্যে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, ইসলামী ছাত্রশিবির, ছাত্র অধিকার পরিষদ,সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সদস্য ও নেতৃবৃন্দরা।
অনুষ্ঠানে জবি প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আহনাফ তাহমিদ ফাইয়াজের সঞ্চালনায় এবং সংগঠনটির সভাপতি সুবর্ণ আসসাইফের সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. সাবিনা শরমীন, দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের সম্পাদক মাহবুব রনি। প্রধান আলোচক ও বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহবুব মোর্শেদ বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল সুযোগ সুবিধা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা পাচ্ছে না। গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে অনেকে অনেক কিছু চায়।
তাই বিভিন্ন জন নানান দাবিদাওয়া নিয়ে আন্দোলন করছে,রাজপথে নামছে। ২৪ এর গণঅভুত্থানে যারা কাঁধে কাঁধ রেখে কাজ করেছেন তাদের মাঝেও আমরা বিভাজন দেখতে পাচ্ছি। এই বিভাজন টা খুব বাস্তব সম্মত কারণ যখন একটা গণঅভ্যুত্থান হয় তখন কিন্তু সমুদ্রের মতো প্রত্যেকটা স্রোত এসে এখানে জমা হয়। সমাজের প্রত্যেকটা মানুষ তাদের সমর্থন ও ভিন্ন মতাদর্শ নিয়ে এখানে যুক্ত হয়।কিন্তু যখন গণঅভ্যুত্থান সফল হয় তখন এই প্রত্যেকেই প্রত্যেকের মতো দেশ গঠনের কথা ভাবে, প্রত্যেকেই প্রত্যেকের মতো দাবি দেওয়া জানাতে থাকে।
এটা খুবই স্বাভাবিক। তবে একটা জিনিস মাথায় রাখতে হবে যে,এই দাবিগুলো জানাতে গিয়ে গণ-অভ্যুত্থানে যে ঐক্য ছিল তা যেন বিনষ্ট না হয়। গণঅভ্যুত্থানের যে ঐক্য সে ঐক্যের প্রধান শিক্ষা হলো আমাদের পারস্পারিক যে বিভেদ ও মতাদর্শিক যে ভিন্নতা তা সত্ত্বেও যেন আমরা পরস্পর ঐক্যবদ্ধ থাকতে পারি। গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে এই বিষয়টি সবচেয়ে কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা যেন ভুলে গেছি কিভাবে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হয়।
গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে সেই ব্যবস্থাই ফিরে যেতে চাই না যেখানে মত প্রকাশের স্বাধীনতা ছিল না, মানবাধিকার ছিল না ভোটাধিকার ছিল না, স্বাধীনভাবে রাজনীতি করতে পারতাম না, স্বাধীনভাবে মিছিল মিটিং করতে পারতাম না সেরকম পরিস্থিতিতে আমরা আর ফিরে যেতে চাই না।
সকলের প্রতিজ্ঞা করা উচিত আমরা আর কখনো ফ্যাসিবাদী, কর্তৃতবাদী ব্যবস্থায় ফিরে যাবো না।” বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. সাবিনা শরমীন বলেন, “২৪ এর জুলাই আন্দোলনে আমরা একটা শিক্ষা পেয়েছি, সে শিক্ষাটা আমাদের সকলকে গ্রহণ করতে হবে।
সে শিক্ষাটা হলো মানুষ অনিয়ম, অন্যায়, দুর্নীতি ইত্যাদি জিনিসগুলো সাময়িক সময়ের জন্য মানতে বাধ্য হলেও কখনোই তারা মন থেকে মেনে নেয় না।এর ফলেই ২৪ এর আন্দোলনে সব মানুষ আন্দোলনে নেমেছে, ফ্যাসিবাদ কে বিদায় করেছে। তাই আমাদের সকলের শিক্ষা নিতে হবে যে পরবর্তীতে আমরা কেউ যেন এরকম ফ্যাসিবাদী চিন্তা ধারা লালন না করি।
এ সময় তিনি বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহবুব মোর্শেদ এর কাছে দাবি জানান যে, আমাদের যারা ক্যাম্পাসের সাংবাদিকতায় থাকতে চায় বা ভবিষ্যতে সাংবাদিকতা নিয়ে ক্যারিয়ার গড়তে চায় তাদের জন্য যে প্রাতিষ্ঠানিক সুযোগ-সুবিধা তারা দিয়ে থাকেন, সেগুলো যেন আমাদের ছাত্র-ছাত্রীরা পেতে পারে তার ব্যবস্থা করে দেন।।”