গাইবান্ধা প্রতিনিধি
গাইবান্ধা পৌরসভার এক প্রকৌশলীর ঘুস চাওয়ার অডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এর আগে ওই প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে এলজিআরডি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন এক ভুক্তভোগী। এ নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। অভিযুক্ত প্রকৌশলীর নাম শফিউল ইসলাম। তিনি গাইবান্ধা পৌরসভার উপসহকারী প্রকৌশলী (সিভিল) হিসাবে কর্মরত। বৃহস্পতিবার রাতে ওই প্রকৌশলীর ঘুস চাওয়ার অডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
১০ মিনিট ১৬ সেকেন্ডের ওই অডিওতে একটি প্রকল্পের কাজে ঘুস চাইতে শোনা যায়। যত টাকার বরাদ্দ সেই অনুসারে তিনি ৬ পার্সেন্ট টাকা দাবি করছেন। ঘুস কম দিতে চাইলে প্রকৌশলী বলেন, এক টাকাও কম দেওয়া যাবে না। টাকা কম দিলে বিল পাশ করা যাবে না। এদিকে ১৫ জানুয়ারি ওই প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য এলজিআরডি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাকে ঘুস চাওয়ার একটি অডিওসহ (অডিওটি দেন পেনড্রাইভে) অভিযোগ দিয়েছেন ফিরোজ কবির নামের এক ভুক্তভোগী ঠিকাদার। অভিযোগের অনুলিপি গাইবান্ধা জেলা প্রশাসককে দেওয়া হয়।
অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ৫ ফেব্রুয়ারি সরেজমিন তদন্ত করেন গাইবান্ধার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আল মামুন। তদন্তের এক মাস পেরিয়ে গেলেও প্রতিবেদন দেওয়া হয়নি। অভিযোগের সত্যতা পেয়েছেন কিনা, জানতে চাইলে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আল মামুন বলেন, তদন্ত চলমান রয়েছে। প্রতিবেদন দাখিল করার আগে কিছু বলা যাবে না। উপদেষ্টাকে দেওয়া অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, আওয়ামী লীগের আশীর্বাদপুষ্ট প্রকৌশলী শফিউল ইসলাম প্রায় ১৩ বছর ধরে গাইবান্ধা পৌরসভা কার্যালয়ে চাকরি করছেন।
দীর্ঘদিন ধরে অনিয়ম করলেও ভয়ে তার বিরুদ্ধে কেউ ব্যবস্থা নিতে পারেননি। ওই প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে ঘুসবাণিজ্য ছাড়াও দুর্ব্যবহার, অনিয়ম-দুর্নীতির আরও অভিযোগ রয়েছে। প্রকল্পের বরাদ্দ টাকার শতকরা ৬ পার্সেন্ট ঘুস দিয়ে ফাইল ছাড় করতে হয় এই প্রকৌশলীর কাছ থেকে ।
অভিযোগকারী ঠিকাদার বলেন, আমি নিজেও ওই প্রকৌশলীকে মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে বিল তুলতে বাধ্য হয়েছি। কেউ প্রতিবাদ করলে, তার কাজে নানাভাবে হয়রানি করতেন। এমনকি একটি সড়কের কাজ দুই থেকে তিনবার করিয়ে নিতেন। তার কর্মকাণ্ডে অতিষ্ঠ হয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। ঘুস চাওয়ার অডিও ফাঁস এবং অভিযোগটি কতটুকু সত্য জানতে চাইলে অভিযুক্ত প্রকৌশলী শফিউল ইসলাম মোবাইল ফোনে বলেন, অভিযোগটির তদন্ত প্রক্রিয়াধীন। তাই এ বিষয়ে আমি কোনো মন্তব্য করব না।