স্বীকৃতি বিশ্বাস, যশোরঃ
আমৃত্যু বিপ্লবী কমিউনিস্ট মুক্তিযোদ্ধা বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সম্মাননীয় সদস্য কৃষক নেতা কমরেড জাকির হোসেন হবি’র স্মরণে শোক সভা অনুষ্ঠিত হয়। আজ সকাল ১১টার সময় যশোর প্রেস ক্লাবের ২য় তলায় শহীদ গোলাম মাজেদ অডিটোরিয়ামে এ শোক সভা অনুষ্ঠিত হয়।
শোক সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগ কেন্দ্রীয় সদস্য ও জেলা কমিটির সম্পাদক তসলিম উর রহমানের সভাপতিত্বে ও বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যতম নেতা ও জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য জিল্লুর রহমান ভিটু সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত শোক সভায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও বাম গণতান্ত্রিক জোটের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক কমরেড ইকবাল কবির জাহিদ,বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগ কেন্দ্রীয় সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য ও জাতীয় কৃষক খেতমজুর সমিতি কেন্দ্রীয় সভাপতি কমরেড অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার , জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শামীম ইমাম,বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যতম নেতা ও জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য কমরেড নাজিম উদ্দিন,জাতীয় কৃষক খেতমজুর সমিতির কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি গাজী আব্দুল হামিদ, সিপিবি যশোর জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য শ্রমিক নেতা মাহবুব মজনু,কমরেড হবি’র সহযোদ্ধা হারুন অর রশিদ,বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগ কেন্দ্রীয় সংগঠক ও কমরেড হবি’র সহধর্মিণী কমরেড সখিনা বেগম দিপ্তি,কৃষক খেতমজুর সমিতি যশোর জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক বিপুল বিশ্বাস, মৈত্রী ভলেন্টার্স এর সদস্য সচিব মামুনুর রশিদ অভয়নগর উপজেলার অন্যতম নেতা ডাক্তার শহীদুল হক , সদর উপজেলার অন্যতম নেতা কমরেড সাহবুদ্দিন বাটুল , বাঘারপাড়া উপজেলা কমিটির অন্যতম নেতা কমরেড ইরাদাদ নয়ন।
কমরেড জাকির হোসেন হবি’র জীবনীর উপর লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জেলা কমিটির অন্যতম নেতা কমরেড পলাশ বিশ্বাস। ইচ্ছা করলে তিনি মেডিকেলে ভর্তি হয়ে একজন বড় চিকিৎসক হতে পারতেন। কিংবা প্রকৌশল কলেজে পড়াশোনা শেষ করে একজন প্রকৌশলী হিসাবে সরকারি চাকরিজীবী থেকে অবসর নিতে পারতেন। জীবনটাও অনেক সুখের হত। কিন্তু তা তিনি করেননি। সারা জীবন শ্রমজীবী মানুষের কথা চিন্তা করে পার্টির সিদ্ধান্তে তিনি অনঢ় থেকেছেন।
অথচ পরিবারের একাধিক ভাই-বোন তাঁর দিকে চেয়েছিলেন-বড় হয়ে জাকির হোসেন সংসারের হাল ধরবেন। কারণ মেধাবী ছাত্র হিসাবে জাকির হোসেনের সুনাম ছিল। কিন্তু তা হয়নি। ১৯৬৭ সালে তিনি খুলনার হাজী মুহাম্মদ মহসিন স্কুল থেকে ২য় বিভাগে মাধ্যমিক এবং ১৯৬৯ সালে খুলনার বিএল কলেজ থেকে ২য় বিভাগে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন।
এরপর মেডিকেল ও প্রকৌশল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েও পার্টি সিদ্ধান্তে বিএল কলেজে রসায়ন নিয়ে ভর্তি হন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি নিজ গ্রাম অভয়নগরের চন্দ্রপুরে গিয়ে পার্টির বাহিনীতে যুক্ত হন এবং সরাসরি প্রতিরোধ যুদ্ধে অংশ নেন। এ সময় তিনি যশোর, নড়াইল এবং মাগুরাতেও যুদ্ধ করেন।
সে সময় পার্টি থেকে তিন জনের গোপন নাম দেয়া হয়। হবি, নবী ও কবি। জাকির হোসেনের নাম ‘হবি’, আমিনুল কামালের নাম ‘নবি’ এবং নাজিম উদ্দিনের নাম ‘কবি’। পরে সেই নামেই তারা পরিচিতি পান। হবি ভাই সারা জীবন দলের পিছনেই সময় ব্যয় করেছেন। অন্য আলোয় ভাল থাকুন প্রিয়জন। গত শনিবার (৮ ই ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের কেন্দ্রীয় সদস্য জাকির হোসেন হবি ভাই যশোর শহরের শংকরপুরের বাসায় মারা যান। তিনি কিছুদিন যাবত অসুস্থ ছিলেন।