জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) বাংলা ভাষার বিকাশ, উপনিবেশিক প্রভাব ও বিউপনিবেশায়ন বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারডিসিপ্লিনারি রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট কনসোর্টিয়াম (আইআরডিসি)-এর আয়োজনে কলা ভবনের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের কক্ষে ‘বাংলা ভাষা বিকাশের ধারা ও বিউপনিবেশায়ন’ শীর্ষক সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয়।
সেমিনারে মূল বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট লেখক, চিন্তক ও কবি মুসা আল-হাফিজ। বাংলা ভাষার ঐতিহাসিক বিকাশ ও বিভিন্ন উপনিবেশিক শক্তির প্রভাব নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে তিনি বলেন, “ইংরেজ, ফরাসি, ডেনিশ ও আর্যরা উপনিবেশিক শাসনের সুবিধার্থে নিজেদের ভাষা প্রচার করেছিল।
আমাদের ভাষা ও সংস্কৃতিকে ধ্বংসের জন্য হীনমন্যতায় নিপতিত করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু বাংলা ভাষা তার শক্তিশালী ঐতিহ্য ও বৈশিষ্ট্যের কারণে টিকে আছে এবং বিকশিত হয়েছে।” সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন আইআরডিসি-এর সভাপতি ও ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বিলাল হোসাইন। প্যানেল আলোচক হিসেবে ছিলেন বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. পারভীন আক্তার জেমী এবং ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোঃ আনিসুর রহমান। অধ্যাপক ড. পারভীন আক্তার জেমী বলেন, “ভাষা নদীর প্রবাহের মতো— এটি কোনো ভৌগোলিক বা রাজনৈতিক সীমানায় আবদ্ধ থাকতে পারে না।
বাংলা ভাষাকে দমিয়ে রাখার চেষ্টা করা হলেও তার শক্তি ও মর্যাদা অক্ষুণ্ণ থেকেছে। আমাদের এ ভাষার সঠিক চর্চা নিশ্চিত করতে হবে।” ড. মোঃ আনিসুর রহমান বলেন, “ভাষার ইতিহাস জাতির পুনর্গঠনে ভূমিকা রাখে। বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র ভাষাভিত্তিক রাষ্ট্র।
আমাদের নতুন প্রজন্মকে বাংলা ভাষার সঠিক ইতিহাস ও চর্চার গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতন করতে হবে।” এছাড়াও ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোঃ রইছ উদ্দীন সেমিনারে বক্তব্য রাখেন। সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও গবেষকদের উপস্থিতিতে আয়োজিত এ সেমিনারে বাংলা ভাষার ইতিহাস, উপনিবেশিক প্রভাব ও বিউপনিবেশায়নের গুরুত্ব নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়। বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষা ও তার বিকাশে সম্মিলিত প্রচেষ্টার প্রয়োজনীয়তার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়।