নিজস্ব প্রতিবেদক: নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার কৃষকরা বর্তমানে সেচের খরচের চাপে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পাম্প মালিকরা প্রতি কাঠা জমির জন্য এক মন ধান আদায় করছেন। যা কৃষকদের জন্য অত্যন্ত ব্যয়বহুল হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই অতিরিক্ত খরচ মেটানো এখন তাদের পক্ষে প্রায় অসম্ভব।
কৃষকরা জানান, ধানের বাজারমূল্য কম থাকায় ফসল উৎপাদন খরচের সঙ্গে সেচের খরচ বহন করা কঠিন হয়ে পড়েছে। আগে সেচের জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা দিলেই চলতো। কিন্তু বর্তমানে ধান আদায়ের নিয়ম চালু হওয়ায় খরচ কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। এতে সাধারণ কৃষকরা আর্থিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছেন।
চাষি রবিউল ইসলাম বলেন, “আগে সেচের জন্য টাকা দিতে হতো। কিন্তু এখন প্রতি কাঠায় এক মন ধান নেওয়ার কারণে আমাদের খরচ অনেক বেড়ে গেছে। বর্তমানে ধানের দাম কম থাকায় আমরা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছি।”
পাম্প মালিক রনি এ বিষয়ে বলেন, “একটা সেচ পাম্প স্থাপনে অনেক খরচ হয়, তাছাড়া অবৈধ সংযোগের কারণে সেচ স্কীমগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাই এক হাজার দুইশো টাকার কমে সেচ খরচ আমাদের পোষায় না।”
কৃষকরা মনে করেন, প্রতি কাঠায় পাঁচশো থেকে সাতশো টাকা সেচ খরচ হিসেবে নির্ধারণ করা হলে তা সবার জন্য গ্রহণযোগ্য হবে। এতে সাধারণ কৃষকরা আর্থিক সংকট থেকে কিছুটা মুক্তি পেতে পারেন এবং ফসল উৎপাদন অব্যাহত রাখতে পারবেন।
একজন কৃষক বলেন, “সেচের জন্য নির্ধারিত টাকার পরিমাণ ঠিক করা হলে আমরা ফসল উৎপাদনে লাভবান হতে পারব।”
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমদাদুল হক তালুকদার বলেন, “বাস্তবতার নিরিখে সেচ রেট নির্ধারণ করে দেবে সেচ কমিটি। নির্ধারিত রেটের বেশি নেয়ার অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।”
স্থানীয় কৃষি বিশেষজ্ঞরাও মনে করেন, সেচ খরচের বিষয়টি বাস্তবসম্মতভাবে নির্ধারণ করা উচিত। বর্তমানে সেচ খরচ অতিরিক্ত হওয়ার কারণে কৃষকদের ওপর চাপ সৃষ্টি হচ্ছে, যা দেশের কৃষি অর্থনীতিতেও বিরূপ প্রভাব ফেলছে।
কেন্দুয়া উপজেলার কৃষকরা সেচ খরচ কমানোর দাবি জানিয়ে বলেছেন, পাম্প মালিকদের উচিত ধানের পরিবর্তে টাকার বিনিময়ে সেচ প্রদান করা, যাতে কৃষকরা কিছুটা স্বস্তি পায় এবং দেশের কৃষি অর্থনীতি আরো শক্তিশালী হয়।