বিএনপিকে টপকিয়ে জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন বাংলার বুকে হতে দেওয়া হবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক।
সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে তৃণমূল নাগরিক আন্দোলনের উদ্যোগে স্থানীয় নির্বাচনের আগে জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে নাগরিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন ফারুক।
ফারুক বলেন, বিএনপি অতীতে জনগণের সাথে কখনো বিশ্বাসঘাতকতা করেনি। ভবিষ্যতেও করবে না। তার প্রমাণ ’৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে যখন স্বাধীনতার ঘোষণা করার জন্য কোনো মানুষ ছিল না, তখন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা করেছিলেন। আর বর্তমানে তারেক রহমানের প্রতি মানুষের যে ভালোবাসা। তিনি যে জনপ্রিয়তা পেয়েছেন তাতেই প্রমাণ করে। আর একটি দল আছে, যারা স্বাধীনতা বিরোধী ছিল।
তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, কিসের তালবাহানা শুরু করেছেন আপনারা? এই সরকারকে দোষারোপ করার জন্য কি তালবাহানা শুরু করেছেন? গণতন্ত্রের স্বপক্ষের শক্তি হচ্ছে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি তারা এখনো রাস্তায়। জনগণের অধিকার আদায়ের জন্য বিএনপি আন্দোলন সংগ্রাম করে যাবে যে পর্যন্ত না জনগণের অধিকার ফিরে আসে।
প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার রক্তের উপর প্রতিষ্ঠিত আপনার সরকার। ছাত্র-জনতা বিশ্বাস নিয়ে আপনাকে এই দায়িত্ব দিয়েছে। দয়া করে এই বিশ্বাস অবহেলা করবেন না। যারা আপনার কানে কানে কথা বলে। তারা আওয়ামী লীগকে আবার পুনর্বাসনের চেষ্টা করছে তাদেরকে রুখে দিতে হবে।
বিরোধী দলের সাবেক এই চিপ হুইপ বলেন, আপনি এমন একটা নির্বাচন দেন। যে নির্বাচন দেখে মোদির বগলে বসে থাকা হাসিনাও যেন বলে এটাই বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, অনেকেই বলেন দিল্লি-তুরস্কের মতো দল করবেন? যে আদলে এই দল করেন না কেন। আমাদের কোনো বাধা নেই। কারণ এদেশে বহু দলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। আমাদের নেতা তারেক রহমান বলেছেন দল করেন আর দলে আসেন। দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে তার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান সরকারকে সহযোগিতা করে।
ফারুক আরও বলেন, তালবাহানা শুরু করেছেন। বিএনপিকে টপকিয়ে জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন বাংলার বুকে এটা হতে দেওয়া হবে না। বিএনপিকে আন্ডারএস্টিমেট করবেন না। বিএনপির ধৈর্যের বাঁধ এখনো ভাঙ্গেনি।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার উদ্দেশ্যে সাবেক এই সংসদ সদস্য বলেন, সচিবালয়ে গ্যাপটি মেরে থাকা আওয়ামী লীগের দোসর কিছু সচিব, কিছু ডিসি-এসপি। যারা ড. ইউনুস সরকারকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে তাদের নাম কেন প্রকাশ করছেন না, তাদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নিচ্ছেন না?
সরকারের উদ্দেশ্যে ফারুক বলেন, কোনো তালবাহানা চলবে না। তালবাহানা করে ফখরুদ্দীন-মইনুদ্দিনের মতো দুই বছর ক্ষমতায় থাকতে চাচ্ছেন। এসব তালবাহানা চলবে না, নির্বাচন দিতে হবে, আমাদের সমর্থন আছে। তারপরও কেন শেখ হাসিনার দোসর সচিবালয়ে বসে আছে। সত্য কথা বললেই বলবেন ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য আমরা তাড়াহুড়া করছি। ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নয়। ক্ষমতায় আমরা বেশ কয়েকবার গিয়েছি। দেশের জনগণের অধিকারের জন্য আমরা বলছি দ্রুত একটা নির্বাচনের দরকার। তাই বারবার নির্বাচনের কথা বলছি। নির্বাচন বিলম্বিত করে দিল্লিতে বসে থাকা শেখ হাসিনা আবার উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়ে দেশে আগুন জ্বালাবে এটা হতে দেওয়া যাবে না।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি মোহাম্মদ মফিজুর রহমান লিটনের সভাপতিত্বে নাগরিক সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হারুনুর রশিদ, যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য মাইনুল ইসলাম, কৃষকদলের সহ-সভাপতি ভি পি ই ইব্রাহিম, তাঁতি দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান মনির, মৎস্যজীবী দলের সদস্য ইসমাইল হোসেন সিরাজী, জাতীয়তাবাদী চালক দলের সভাপতি জসিম উদ্দিন কবির, কর্মজীবী দলের সাধারণ সম্পাদক আলতাব হোসেন সরদার সহ প্রমুখ।