আল নোমান শান্ত,দুর্গাপুর (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি –
নুসরাত জাহান জুঁই (১৮)। বাবা মারা গেছে ১৫ বছর আগে। মায়ের আয়েই কোনোরকমে চলে জীবন-জীবিকা। ছোট থেকেই কষ্টে বেড়ে উঠা পড়াশোনা চালাতে হয়েছে কষ্ট করে। ছোট থেকেই স্বপ্ন ছিল চিকিৎসক হওয়ার এবার সব বাধা জয় করে চলতি বছর নীলফামারী মেডিকেল কলেজে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেয়েছে জুঁই।
নেত্রকোনার দুর্গাপুর পৌর শহরের ৫নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা নুসরাত জাহান জুঁই (১৮)। দুই ভাই-বোনের মধ্যে সে ছোট। মা’কে নিয়েই তার বসবাস। উপজেলার একটি বেসরকারি হাসপাতালে কর্মরত মা সেবিকা ফাতেমা খাতুন। বুধবার (২২ জানুয়ারি) বিকেলে গিয়ে কথা হয় জুঁই এর সঙ্গে।
পাশে ছিলেন তাঁর মা ফাতেমা খাতুন। তাঁরা জানান,২০২২ সালে সুসঙ্গ আদর্শ বিদ্যানিকেতন বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন। বিজ্ঞান বিভাগে পান জিপিএ- ৫। ২০২৪ সালে এইচএসসি পাস করেন সুসং সরকারি মহাবিদ্যালয় কলেজ থেকে। সেবারও পান জিপিএ-৫। নুসরাত জাহান জুঁই বলেন,আমি ছোটবেলা থেকেই ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন দেখেছি। বাবা সেই ছোট্ট থাকতেই দুনিয়া ছেড়ে চলে গেছেন। এ পর্যন্ত পড়াশোনা করতে মা অনেক কষ্ট করেছেন। ভাই এখন একটা চাকরি করে।
তার সংসারও আছে। এখন চিকিৎসক হয়ে মায়ের দুঃখ ঘোচাতে চাই। টাকার অভাবে যারা চিকিৎসা করাতে পারে না, সে সকল গরিব মানুষদের চিকিৎসা সেবা দিতে চাই। জুঁই আরো বলেন,মহান আল্লাহর অশেষ কৃপায় মেডিকেলে চান্স পেয়েছি। মায়ের যৎসামান্য আয়ে কোনোরকমে চলছে
। মা ফাতেমা খাতুন বলেন, আমি অনেক কষ্টে ছেলে মেয়ে কে বড় করেছি। সারাটা জীবনই কষ্ট করে গেলাম। যখন শুনতে পেলাম আমার মেয়ে মেডিকেল চান্স পেয়েছে আনন্দে দুচোখের পানি ধরে রাখতে পারিনি। আল্লাহর কৃপায় আমার মেয়ে মেডিকেল চান্স পাওয়ায় মা হিসাবে অনেক গর্বের।
কিন্তু পড়াশোনার খরচ নিয়ে চিন্তা। এদিকে জুঁই এর এ কৃতিত্বে খুশি শিক্ষক ও স্বজনরা। গত রোববার প্রকাশিত মেডিকেল কলেজের ভর্তি পরীক্ষার ফলাফলে ৪৯৩২ তম স্থান অর্জন করে সে। তবে সীমিত আয়ের এই পরিবারটি এতোদিন মেয়েদের পড়াশোনার খরচ বহন করলেও মেডিকেলে পড়াশোনার খরচ মেটানো যেন এখন তাদের জন্য কিছুটা কঠিন হয়ে পড়েছে।