জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) হিম উৎসবে ঘুরতে এসে নওয়াব ফয়জুন্নেসা হলে বান্ধবীর আবাসিক কক্ষ থেকে আটক হয় এক বহিরাগত যুবক। বহিরাগত যুবক হলেন চট্টগ্রামের আশরাফুল আলম পারভেজ ওরফে যাযাবর পারভেজ। তিনি হিম উৎসবে ঘুরতে এসেছিলেন বলে জানিয়েছেন।
শনিবার (১৮ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নওয়াব ফয়জুন্নেসা হলের একটি কক্ষ থেকে হল কর্তৃপক্ষ তাকে আটক করে।আটক যাযাবর পারভেজের বাড়ি চট্টগ্রামের আগ্রাবাদের ডাবলমুরিং থানায়। তিনি ২০১১ সালে এসএসসি পরীক্ষা দেন বলে জানিয়েছেন। তার সর্বশেষ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সম্পর্কে জানা যায়নি।
জানা যায়, শনিবার আনুমানিক রাত ১০টার দিকে নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের প্রথম বর্ষের এক নারী শিক্ষার্থীর সঙ্গে কপালে টিপ দিয়ে প্লাজু পরে ও মুখে ঘোমটা দিয়ে হলে প্রবেশ করেন। এসময় পোশাক ও হাঁটা দেখে আশপাশের কয়েকজন শিক্ষার্থীর সন্দেহ হয়। পরে তারা হল সুপারকে সিসিটিভি ফুটেজ চেক করতে বলেন।
সিসিটিভি ফুটেজ চেক করে হল সুপারসহ ওই নারী শিক্ষার্থীর কক্ষে গিয়ে অভিযুক্ত পারভেজসহ একসঙ্গে দেখতে পান তারা। এরপর পারভেজকে আটক করে হল প্রভোস্ট ও প্রক্টরিয়াল বডির উপস্থিতিতে পুলিশে দেওয়া হয়। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া হিসেবে আটক পারভেজকে শারী ও টিপ পরিয়ে দেয় হলের ক্ষুব্ধ আবাসিক শিক্ষার্থীরা।
আটকৃত পারভেজ ঘটনা স্বীকার করে বলেন, আমরা দুইজন ভালো বন্ধু। সাত বছরের বন্ধুত্ব আমাদের। তাকে আমিই বিয়ে দিয়েছি। দুজনেই লালন ভক্ত আমরা। আমি হিম উৎসবে বেড়াতে এসেছি। হলে আসার সময় আমি কপালে টিপ পরে মুখ ও শরীর চাদরে মুড়িয়ে হলে প্রবেশ করি।
তবে অভিযুক্ত নারী শিক্ষার্থী বলেন, আমরা উভয়েই ভালো বন্ধু। হিম উৎসবে সে এসেছিল। রাতে থাকার জায়গা না থাকায় তাকে হলে নিয়ে এসেছি। আমরা কেউ আপত্তিকর অবস্থায় ছিলাম না।এদিকে অভিযুক্ত নারী শিক্ষার্থীর স্বামীকে ফোন দেওয়া হলে তিনি পারভেজকে চেনেন না বলে জানান। পরে পারভেজকে ওই নারী শিক্ষার্থী শুধু ফেসবুক বন্ধু বলে উল্লেখ করেন।
নওয়াব ফয়জুন্নেসা হলের সহ-হল সুপার নাদিয়া সুলতানা সংবাদমাধ্যমকে জানান,হলের মেয়েরা ওই ছাত্রীর রুমে সেই পুরুষের উপস্থিতি বুঝতে পেরে আমাকে জানালে তৎক্ষনাৎ আমি হলের খালাকে সঙ্গে নিয়ে রুমে যাই। দরজা খোলার পর আমি তাকে খাটের ওপরে বসে থাকা অবস্থায় দেখতে পাই। আমি হল প্রভোস্টকে জানাই।
হল প্রভোস্ট অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, অভিযুক্তদের প্রক্টরিয়াল বডির কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখা হবে। দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, হল কর্তৃপক্ষের কাছে খবর পাওয়ার পর তাৎক্ষণিকভাবে প্রক্টরিয়াল টিমকে পাঠাই। এরপর আটক ছেলেকে পুলিশে হস্তান্তর করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। হল অভিযুক্ত নারী শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে শাস্তির মুখোমুখি করা হবে।