বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ কিম্বা মাধ্যমিক বিদ্যালয় নয়, একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শতবর্ষের মিলনমেলা ঘিরে সাজ সাজ রব কয়েকটি গ্রামে। বছরব্যাপী চলা প্রস্তুতির সেই মাহেন্দ্রক্ষণ আগামী ১৮ই জানুয়ারি।
ঐদিন দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে উদযাপন কমিটি। ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার ব্রহ্মপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এটি। বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯২৫ সালে। উপজেলার মধ্যে বিদ্যালয়টির সুনাম দীর্ঘদিনের। শতবছরে এই বিদ্যালয় থেকে হাজার হাজার ছাত্র,ছাত্রী প্রাথমিক শিক্ষার পাঠ নিয়েছে। কেউ যেমন অঙ্কুরে বিনাশ হয়েছে তেমনি কেউ মাধ্যমিক, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের গন্ডি পেরিয়ে দেশের বড় বড় পদ অলংকৃত করেছে। কেউ হয়েছে ডাক্তার, কেউ হয়েছে ইঞ্জিনিয়ার, কেউ ব্যবসা বাণিজ্য করে কোটি টাকার মালিক হয়েছে তেমনি কেউ কৃষি শ্রমিক, ভ্যান রিকশা শ্রমিক, কেউ গ্রামের মাতব্বর, কেউ গ্রামের সাধারণ মানুষ। সব শ্রেণি পেশার মানুষের মিলনমেলা হবে শতবর্ষের অনুষ্ঠানে
। তাদের একটিই পরিচয় তারা ব্রহ্মপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিল। প্রায় দেড় হাজার নানান বয়সের মানুষ ইতিমধ্যে রেজিষ্ট্রেশন সম্পন্ন করেছে। পাশেই মৌবন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের খেলার মাঠ জুড়ে সুবিশাল প্যান্ডেল করা হয়েছে। স্কুল আঙ্গিনা সহ এক কিলোমিটার জুড়ে একমাস আগে থেকেই আলোকসজ্জা করা হয়েছে। চুনকাম করা হয়েছে গাছের গোড়ায়, দেয়ালে দেয়ালে শোভা পাচ্ছে মনীষীদের বাণী। এমন আয়োজন দেখে আবেগ আপ্লুত এলাকাবাসী। শতবর্ষের মিলনমেলা ঘিরে বেশ কয়েকটি মিটিং হয়েছে স্কুল প্রাঙ্গনে। বিভিন্ন উপ কমিটি কাজ করছে অনুষ্ঠান উপলক্ষে। মুল অনুষ্ঠানে ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষকদের দেওয়া হবে সংবর্ধনা।
শিল্পী মনির খান সহ ঢাকা থেকে আসবে দেশের সাড়াজাগানো শিল্পীরা। রেজিষ্ট্রেশন করা প্রাক্তন শিক্ষার্থীসহ আমন্ত্রিত অতিথি, বিদ্যালয়ের বর্তমান সাড়ে তিন শতাধিক শিক্ষার্থীসহ ২ হাজার মানুষের জন্য আয়োজন করা হয়েছে দুপুরের খাবার।
সকলের জন্য থাকবে শতবর্ষের টি শার্ট। সব মিলে এক এলাহী কান্ড। শতবর্ষ উদাপন কমিটির সদস্য সচিব ব্যাংকার আবু জাফর জানান আমি এই বিদ্যালয়ের১৯৮৯ ব্যাচের ছাত্র ছিলাম, আমরা ২০১৪ সালে বিজিপিস ৮৯ ফাউন্ডেশন নামে একটি সংগঠন গড়ে তুলি। আমাদের ব্যাচের ১০৭ জন বন্ধু এই সংগঠনের সদস্য।
৮৯ ফাউন্ডেশন এর মাধ্যমে আমরা বিগত ১০ বছর ধরে শিক্ষা বৃত্তি প্রদান সহ নানান কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছি। এসব করতে গিয়েই বিদ্যালয়টির শতবর্ষ পালনের সিদ্ধান্ত নিই। পরে এলাকার সুধীজন,কয়েকটি গ্রামের মোড়ল মাতব্বরদের সাথে একাধিক মিটিং করে আমরা কার্যক্রমটি হাতে নিয়েছি।
বিশাল এই কর্মযজ্ঞে এলাকাবাসীর স্বতস্ফুর্ত সহযোগিতা পেয়েছি। উদযাপন কমিটির আহবায়ক ফরহাদ হোসেন এফসিএ জানান এই বিদ্যালয় থেকে আমাদের শিক্ষায় হাতেখড়ি। আমরা আজ যে যে অবস্থায় আছি এই মিলনমেলার মাধ্যমে সকলের সাথে দেখা সাক্ষাৎ, আনন্দ আড্ডায় একটি দিন কাটাতে পারব এতে সকলের মাঝে সৌহার্দ্য সম্প্রীতির মেলবন্ধন হবে আশা করি। ছবিতে : বর্তমান প্রধান শিক্ষক হুমায়ুন কবীর।