লোকমান আহমদ
ঘরের মাঠে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) টানা দ্বিতীয় জয় পেয়েছে সিলেট। ঘরের মাঠে সিলেটের এমন জয়ে দশকর্দের মনে খুশির জোয়ার বইতে দেখা যায়। অত্যন্ত টান টান উত্তেজনামূলক ম্যাচ ছিল খুলনা টাইগার্স মধ্যকার সিলেট স্ট্রাইকার্সের। রোববার সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দিনের প্রথম ম্যাচে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই চাপে পড়ে স্বাগতিক সিলেট স্ট্রাইকার্স। স্কোর বোর্ডে ১৫ রান উঠতেই ২ উইকেট হারায় সিলেট।
রাকিম কর্নওয়াল ৪ ও জর্জ মুনসি ২ রানে ফিরেন। টানা তিন ম্যাচ হারার পর শুক্রবার ঢাকা ক্যাপিটালসকে হারিয়ে সিলেট স্ট্রাইকার্স প্রথম জয় লাভ করে। আর এই জয়ের আনন্দে আত্মহারা হয়ে উপভোগ করেন সিলেটবাসি। রোববার দুপুর থেকে স্টেডিয়ামে ঢুকতে দীর্ঘ লাইন ধরতে দেখা যায় ক্রীড়া প্রেমীদের।
প্রতিদিনই সিলেট স্টেডিয়ামে গ্যালারি ভর্তি দর্শক দেখা যায়। শুধু মাত্র সিলেটের জয় উপভোগ করার জন্যে সিলেটের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসেন ক্রীড়া প্রেমি দর্শকরা। তারই ধারাবাহিকতায় অত্যান্ত আগ্রহের সাথে খেলা উপভোগ করছিলেন দর্শকবৃন্দ। দ্বিতীয় জয়ে সিলেটের দর্শকদেও আনন্দ উল্লাস আরো বেড়ে যায়। টুর্নামেন্টে নিজেদের পঞ্চম ম্যাচে খুলনা টাইগার্সের মুখোমুখি হয়ে সিলেট ৮ রানে জয় লাভ করেছে।
৫ ম্যাচে ২ জয় ও ৩ হারে ৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের ষষ্ঠ স্থানে আছে সিলেট। অন্যদিকে ৪ ম্যাচে ২টি করে জয়-হারে ৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের চতুর্থস্থানে আছে খুলনা। শুরুর চাপে পাওয়ার প্লেতে মাত্র ২১ রান সংগ্রহ করে সিলেট। পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার পর রানের গতি বাড়ান সিলেটের আরেক ওপেনার রনি তালুকদার ও উইকেটরক্ষক জাকির হাসান।
এতে ১০ ওভার শেষে ৬৫ রান পায় সিলেট। ১৩তম ওভারে দলের রান ১শ’তে নেন রনি ও জাকির। ছক্কা মেরে ২৯তম বলে টি-টোয়েন্টিতে নবম হাফ-সেঞ্চুরি করেন জাকির। চার মেরে ৩৯ বলে ১৩তম হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পান রনি। ১৫তম ওভারে রনিকে শিকার করে খুলনাকে ব্রেক-থ্রু এনে দেন পেসার আবু হায়দার। ৫টি চার ও ২টি ছক্কায় ৪৪ বলে ৫৬ রান করেন রনি।
তৃতীয় উইকেটে জাকিরের সাথে ৬২ বলে ১০৬ রানের জুটি গড়েন রনি। দলীয় ১২১ রানে রনি ফেরার পর অ্যারন জোন্সকে নিয়ে ১১ বলে ২৯ এবং অধিনায়ক আরিফুল হকের সাথে ২২ বলে ৩২ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়েন জাকির। এতে ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ১৮২ রানের সংগ্রহ পায় সিলেট। জাকির ৪৬ বলে ৩টি চার ও ৬টি ছক্কার সহায়তায় অপরাজিত ৭৫ রান করেন।
৩টি ছক্কায় জোন্স ২০ এবং ১টি করে চার-ছক্কায় ১৩ বলে অনবদ্য ২১ রান করেন আরিফুল। আবু হায়দার ও জিয়াউর রহমান ২টি করে উইকেট নেন। ১৮৩ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে পাওয়ার প্লেতে ৩ উইকেটে ৪৭ রান তুলে খুলনা। মোহাম্মদ নাইম ১১, ইমরুল কায়েস ২ ও দারউইশ রাসুলি ১৫ রানে আউট হন।
এরপর ছোট-ছোট জুটিতে খুলনাকে লড়াইয়ে রাখেন ওপেনার উইলিয়াম বোসিসতো, অধিনায়ক মেহেদি হাসান মিরাজ ও মোহাম্মদ নাওয়াজ। বোসিসতো ৪৩, মিরাজ ১৫ ও নাওয়াজ ১৮ বলে ৩৩ রানের উপর ভর করে ১৬ ওভার শেষে ৬ উইকেটে ১৩০ রান তুলে খুলনা। শেষ ৪ ওভারে ৫৩ রান দরকার ছিল খুলনার।
৩ ওভারে ৩৪ রান তুললে শেষ ওভারে খুলনার সামনে জয়ের সমীকরণ দাঁড়ায় ১৯ রান। কিন্তু শেষ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ১০ রানের বেশি তুলতে পারেনি খুলনা। শেষ ওভার পর্যন্ত লড়াই করে দলের হার রুখতে পারেননি ১৬ বলে ২৮ রান করা মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন। তানজিম-রিচ টপলি ও রুয়েল মিয়া ২টি করে উইকেট নেন। ম্যাচ সেরা হয়েছেন জাকির।