নিজস্ব প্রতিবেদক: নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার অন্যতম প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কেন্দুয়া সরকারি কলেজ। দীর্ঘদিন ধরে এই প্রতিষ্ঠানটি উচ্চ শিক্ষার প্রসারে অনন্য ভূমিকা রেখে আসছে। শিক্ষার গুণগত মান, সুশৃঙ্খল পরিচালনা ও প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশে শিক্ষার্থীদের সাফল্য অর্জনের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানটির রয়েছে বিশেষ অবদান। তবে সম্প্রতি কলেজটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের পদ নিয়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা এবং উৎসুক দৃষ্টি সবার।
চলতি বছর ৩১ ডিসেম্বর তারিখে কেন্দুয়া সরকারি কলেজের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের পদটি শূন্য হতে যাচ্ছে। বিদায়ী ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জাহাঙ্গীর আলম তালুকদার জানিয়েছেন, নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে দায়িত্ব হস্তান্তর হবে, এবং এতে কোনো পেছনের দরজা দিয়ে পদ পাওয়ার সুযোগ নেই। তবে এই পদে বসার জন্য এখন থেকেই একাধিক প্রার্থী নিজেদের জায়গা সুসংহত করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন।
বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া তথ্যে এখন পর্যন্ত পাঁচজন সিনিয়র শিক্ষক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পদে প্রতিযোগিতায় নেমেছেন। এই পাঁচ প্রার্থী হলেন, সহকারী অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম খসরু, প্রভাষক নুরে আলম সিদ্দিকী, প্রভাষক বজলুর রহমান, প্রভাষক সুলতানা জামান ও প্রভাষক আহম্মদ আব্দুল্লাহ হারুন। প্রতিযোগিতার এই মঞ্চে প্রত্যেকেই নিজেদের শিক্ষাগত যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতা প্রদর্শনের মাধ্যমে পদটি অর্জনের চেষ্টা করছেন।
রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক নূরে আলম সিদ্দিকী জানান, “নিয়োগ প্রক্রিয়া সিনিয়রিটির ভিত্তিতে হোক, এটাই আমরা চাই। খসরু ভাই আমাদের মধ্যে সবচেয়ে সিনিয়র। বিকল্প হিসেবে চাইলে আমরাও দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত আছি।”
রাষ্ট্রবিজ্ঞানের প্রভাষক বজলুর রহমানও একইভাবে সিনিয়রিটির ভিত্তিতে নিয়োগের পক্ষে কথা বলেন। তিনি জানান, “নিয়ম ভেঙে কেউ যদি অন্যকে টপকে যায়, তা আমি সমর্থন করব না।”
ইসলামের ইতিহাসের প্রভাষক সুলতানা জামানও বলেন, “খসরু স্যার আমাদের সবার সিনিয়র, তাকেই অধ্যক্ষ করা উচিত। তবে আমাদের কাউকে দিলেও আমরা দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত।”
ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রভাষক আহমদ আব্দুল্লাহ হারুন মন্তব্য করেন, “নিয়মতান্ত্রিকভাবে যে কোনো সিদ্ধান্ত আমি স্বাগত জানাবো।”
কেন্দুয়া সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ পদ নিয়ে সচেতন মহলের মধ্যে বেশ কিছু মতামত উঠেছে। তাদের মতে, এই গুরুত্বপূর্ণ পদটি দেয়ার ক্ষেত্রে শিক্ষার মান এবং প্রতিষ্ঠান পরিচালনার দক্ষতাকে প্রাধান্য দেয়া উচিত। ব্যক্তিগত স্বার্থ নয়, বরং প্রতিষ্ঠানের সুশাসন, শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়ন এবং শিক্ষার্থীদের কল্যাণ নিশ্চিত করাই হবে মূল বিবেচ্য বিষয়।
কেন্দুয়া সরকারি কলেজের নতুন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কে হবেন। তা নিয়ে কেন্দুয়া এলাকায় চলছে আলোচনা আর নানা জল্পনা-কল্পনা। আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হবে এবং এই পদের দায়িত্ব নতুনভাবে পালনের জন্য একজন উপযুক্ত ব্যক্তি মনোনীত হবেন।
প্রতিষ্ঠানটির উন্নয়ন, শিক্ষার গুণগত মান বজায় রাখা, এবং শিক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ সাফল্য অর্জনের লক্ষ্য নিয়ে এই প্রতিযোগিতা শেষ হবে বিধি মোতাবেক। সেই প্রতিযোগিতা শেষে কেন্দুয়া সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা পাবেন তাদের নতুন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ। এখন সময়ের অপেক্ষা পালা। কে হচ্ছেন কেন্দুয়া সরকারি কলেজের নতুন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ।