দুর্গাপুর (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি –
শিক্ষক সংকটে ব্যাহত হচ্ছে নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার সুসং সরকারি মহাবিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম। কলেজে ৩৫ জন শিক্ষকের পদ থাকলেও কর্মরত আছেন মাত্র ২৪ জন। বিভিন্ন বিষয়ে পর্যাপ্ত শিক্ষক না থাকায় ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান।
১৯৭০ সালে যাত্রা শুরু করে সুসং সরকারি মহাবিদ্যালয়। জাতীয় করণ হয় ২০১৬ সালে। প্রতিষ্ঠানটিতে বর্তমানে প্রায় ৫ হাজার শিক্ষার্থী পড়ালেখা করছেন। কিন্তু পাঁচ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য নেই পর্যাপ্ত শিক্ষক। শিক্ষক সংকটে নিয়মিত ক্লাস নিতে হিমশিম খাচ্ছেন শিক্ষকরা। এতে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি হতাশ অভিভাবকরাও।
এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে একাধিকবার চাহিদাপত্র পাঠানো হলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তাই দ্রুত পর্যাপ্ত শিক্ষক পদায়নের দাবি কলেজ কর্তৃপক্ষের।
কলেজের তথ্যমতে,উচ্চ মাধ্যমিক ও ডিগ্রি দুইটি স্তর রয়েছে কলেজটিতে। উচ্চ মাধ্যমিকে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শাখা বর্তমানে চালু রয়েছে। সব মিলিয়ে ১৯টি বিষয়ে পাঠদান করা হয়। কলেজের প্রায় ৫ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য অধ্যক্ষ,উপাধ্যক্ষ, সহযোগী অধ্যাপক,সহকারী অধ্যাপক ও প্রভাষক মিলে শিক্ষক পদ রয়েছে ৩৫টি।
এর মধ্যে শিক্ষক ২৪ জন কর্মরত আছেন। বর্তমানে শুন্য রয়েছে ১১টি শিক্ষকের পদ। সামনের বছরের ফেব্রুয়ারী মাস নাগাত আরো ০৪ জন প্রভাষকের পদ শুন্য হবে। সব মিলিয়ে প্রতিষ্ঠানটিতে ২০০ জনের বেশি শিক্ষার্থীর বিপরীতে আছেন মাত্র একজন শিক্ষক।
শিক্ষকরা বলছেন, চলমান পরিস্থিতিতে অতিথি শিক্ষক দিয়ে জোড়াতালি দিয়ে কোনোমতে চালানো হচ্ছে কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম। কলেজে খন্ডকালীন শিক্ষক দিয়ে অতিরিক্ত ক্লাশ নেয়ার কারনে প্রতি মাসে অতিরিক্ত গুনতে হচ্ছে প্রায় ২ লাখ টাকা। সরকারি ভাবে নিয়োগ না থাকায় পাঠদান তথা শিক্ষা কার্যক্রম চরমভাবে ব্যহত হচ্ছে।
কাম্যসংখ্যক শিক্ষক না থাকায়,সেকশন অনুযায়ী উচ্চ মাধ্যমিক পযার্য়ে বাংলা, ইংরেজী ও আইসিটি বিষয়ের পাঠদান নেয়া যায় না।এদিকে নৃ-তাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীসহ নানা ধর্ম-বর্ণের অধিবাসী অধ্যুষিত প্রত্যন্ত অঞ্চলের এ কলেজটিতে অনার্স কোর্স চালু করা এই জনপদের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবী।
বিভিন্ন সময় করা হয়েছে মানববন্ধন। অনার্স কোর্স চালুর জন্য কলেজে রয়েছে যথেষ্ট অবকাঠামো। এলাকাবাসীর চাহিদার প্রেক্ষিতে কলেজ কর্তৃপক্ষ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আবেদন করায় শিক্ষা মন্ত্রণালয় ১৮টি বিষয়ে অনার্স কোর্স চালুর অনুমতি প্রদান করে। কিন্তু জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক এ সংক্রান্ত কার্যক্রম স্থগিত রাখায় অনার্স চালুর বিষয়টিও স্থবির হয়ে রয়েছে।
কলেজের ইতিহাস বিভাগের প্রভাষক আইনুল হক বলেন,শিক্ষকের অভাবে কলেজে নিয়মিত ক্লাস নেয়া এবং সিলেবাস শেষ করতে অনেক বেগ পেতে হচ্ছে। তাছাড়া কলেজে অতিথি শিক্ষক থাকলেও সেকশন মোতাবেক ক্লাশ না করানোতে অনেক সময় ক্লাস নিতেও আগ্রহ হারাচ্ছেন।
এ প্রসঙ্গে সুসং সরকারি মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো: রেদওয়ানুর রহমান বলেন,কলেজের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয় ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে বেশ কয়েকবার চিঠি পাঠিয়েছি। শিক্ষার্থীদের সঠিক পাঠদান, শিক্ষকের পদ সৃজন, কলেজে অনার্স কোর্স চালু এবং কলেজে শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে সকলের সহযোগীতা চাই।