শেখ জহিরুল ইসলাম, নান্দাইল ময়মনসিংহ প্রতিনিধি।
ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলা সদরে চন্ডীপাশা নতুন বাজার এলাকায় সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) জায়গায় অবৈধভাবে নির্মিত প্রায় ২৬টি স্থাপনা উচ্ছেদ করেছে উপজেলা প্রশাসন, যা আনুমানিক মূল্য ১০ কোটি টাকা। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) ক্যারিশমেটিক নেতৃত্ব এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগের সহযোগিতায় এখন পর্যন্ত উপজেলার সবমিলিয়ে ৫০ কোটি টাকার সরকারি সম্পদ উদ্ধার করা হয়েছে।
বুধবার (১৬ অক্টোবর) বেলা ১১টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত উপজেলার পৌর শহরের চন্ডীপাশা নতুন বাজার ময়মনসিংহ কিশোরগঞ্জ মহাসড়কে অবৈধভাবে গড়ে উঠা এসব স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়।
জানা গেছে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অরুণ কৃষ্ণ পালের নেতৃত্বে অভিযানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফয়জুর রহমান, নান্দাইল মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরিদ আহমেদ, সড়ক ও জনপথ বিভাগের (কিশোরগঞ্জ) উপ-সহকারী প্রকৌশলী বিজয় বসাক। এছাড়াও অভিযানে সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করে গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী।
এদিকে সরকারি জায়গায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করায় স্থানীয় বাসিন্দারা প্রশাসনকে সাধুবাদ জানান। সরকারি জায়গায় অবৈধ স্থাপনা ভেঙ্গে দেওয়া সাধারণ মানুষ প্রশাসনকে সাধুবাদ জানান এবং উদ্ধারকৃত সরকারি জায়গায় আর কেউ যেন কখনোই আর কোনো ধরনের অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করতে না পারেন, সেই জন্য যাত্রী সাধারণের জন্য যাত্রী ছাউনি ও খোলা জায়গায় যানবাহন স্ট্যান্ড নির্মাণ অথবা সরকারের পক্ষ থেকে দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা নির্মাণের জোর দাবি জানান।
এদিকে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে প্রশাসনের কাছে পুনর্বাসনের জোর দাবি জানানো হয়। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা বলেন, সরকারি জায়গায় যেসব স্থাপনা আছে সবগুলোই যেন উচ্ছেদ করা হয়। কিন্তু সরকারি জায়গায় অনেকগুলো অবৈধ স্থাপনা রেখেই উচ্ছেদ অভিযান শেষ করেছে প্রশাসন, যা নিন্দাজনক ও সাধারণ জনমনে প্রশ্নবিদ্ধ। এতে করে কিছু মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হলো আবার কিছু মানুষ বহাল তরবিয়তেই থেকে যাবে।
সুজন নামক এক ব্যবসায়ী বলেন, দীর্ঘদিন যাবৎ আমি একটা জায়গায় চায়ের দোকান বসিয়ে ব্যবসা করে সংসার চালিয়েছি। কিন্তু আমাকে সেই জায়গা থেকে উঠিয়ে দেয়া হয়েছে। এখন আমি কোথায় যাবো, কী করবো? প্রশাসনের কাছে আমার অনুরোধ যেন অন্য একটা জায়গায় হলেও ব্যবসার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়। অন্যথায় আমাকে পুরো পরিবার নিয়ে পথে বসে যেতে হবে।
এবিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফয়জুর রহমান বলেন, সরকারি জায়গাতে কোনো অবৈধ স্থাপনা থাকবে না। যদি কেউ পুনরায় অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করতে চায় তবে ভ্রাম্যমাণ আদালতে জেল-জরিমানা হতে পারে। উচ্ছেদ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
এদিকে উচ্ছেদ অভিযান প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অরুণ কৃষ্ণ পাল বলেন, নতুন করে অভিযান চালিয়ে নান্দাইলের গুরুত্বপূর্ণ কিছু জায়গা আমরা দখলমুক্ত করেছি, যার পরিমাণ আনুমানিক ১ একর। এমনকি এই জমির আনুমানিক মূল্য হবে দশ কোটি টাকা। উচ্ছেদ অভিযান কার্যক্রম শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত সবমিলিয়ে ৩.৬০ একর আনুমানিক মূল্য ৫০ কোটি টাকার সরকারি সম্পদ উদ্ধার করা হয়েছে।