নিজস্ব প্রতিবেদক: গত কয়েকদিন ধরে ঢল ও বৃষ্টিপাত বন্ধ থাকায় নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার সোমেশ্বরী নদীর পানি দ্রুত কমতে শুরু করেছে। নিম্নাঞ্চলের পানি ধীরে ধীরে নামার সাথে সাথেই ভেসে উঠছে ক্ষয়ক্ষতির চিত্র। এবার ঢলের পানিতে তলিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাড়ি-ঘর, রাস্তা-ঘাট সহ ভেসে গেছে পুকুরের মাছ। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আমন ধানের ক্ষেত।
উপজেলা কৃষি অফিসে তথ্য মতে, চলতি মৌসুমে ঢলের পানিতে তলিয়ে গিয়েছিল প্রায় ১০ হাজার হেক্টর জমি। তার মধ্যে পানি কমে তিন হাজার হেক্টর জমির ধান রক্ষা পেলেও পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সাত হাজার হেক্টর রোপা আমন ধান। সরকারি হিসাবে যার মূল্য প্রায় ৯৭ কোটি টাকা। মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলা কৃষি অফিসার নিপা বিশ্বাস এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, উপজেলার সাতটি ইউনিয়নে এ বছর ১৬ হাজার ৪২০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের আবাদ করা হয়। এর মধ্যে পাঁচটি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলে ঢলের পানিতে তলিয়ে পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সাত হাজার হেক্টর আমন ক্ষেত ও ৫০ হেক্টর জমির শাকসবজি।
গাওকান্দিয়া গ্রামের সাইদুল ইসলাম বলেন, ধান ক্ষেত সব পঁচে গেছে, যা আছে এখনো তা পানির নিচে। ঢল আমাদের নি:স্ব করে দিয়ে গেছে।
একই ইউনিয়নের শ্রীপুর গ্রামের জলিল মিয়া বলেন, জমি কইরাই পোলাপান গুলারে লইয়া বাঁইচা আছি। এহন পানিতে তো সব শেষ, কি হইবো আমাদের আল্লাহই জানেন।
গাঁওকান্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য (প্যানেল চেয়ারম্যান) নুরুল আমীন বলেন, ঢলের পর বাড়িঘর ও আমন ক্ষেত থেকে ধীরে ধীরে পানি কমতেছে, কিন্ত আশ-পাশে যে ক্ষতি হয়েছে তা গত পাঁচ বছরেও পুষিয়ে নেওয়া যাবে না। ক্ষেতে যা ধান আছে সবই নষ্ট হয়ে গেছে।
দুর্গাপুরের উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মো. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, সাম্প্রতিক পাহাড়ি ঢলে অত্র উপজেলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আমন ধানের। কৃষি বিভাগের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সরকারি প্রণোদনার মাধ্যমে সহযোগীতার আওতায় আনা হবে।