কটিয়াদী(কিশোরগঞ্জ)প্রতিনিধিঃ
এবারো কিশোরগঞ্জ জেলার মধ্যে কটিয়াদী উপজেলায় একটি পুজা মণ্ডপ সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে৷ প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে পূজারীরা দেখার জন্য আসছেন৷ আকর্ষণীয় ডিজাইন এবং আধুনিক আলোকসজ্জা ও চিত্রকর্ম এটিকে ফুটিয়ে তুলছে বহুগুণ।
উপজেলার পৌর এলাকায় পূর্বপাড়া সহা পাড়া মহল্লায় যুব সংঘের উদ্যোগে এই পূজাটির আয়োজন করা হয়েছে৷
সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত পূজারিদের ভীড় লেগেই আছে এই মণ্ডপে৷ কিশোরগঞ্জের আশপাশের জেলা থেকেও অনেকেই আসছে পরিবার নিয়ে পূজা ঘুরে দেখার জন্য৷ এর আধুনিক আলোকসজ্জা ও ডিজাইন মুগ্ধ করে সবাইকে। এর আসল সৌন্দর্য ফুটে ওঠে রাতের বেলায়৷ সবগুলো আলোকসজ্জা একসাথে জ্বলে ওঠার পরই সৌন্দর্য ছড়িয়ে পড়ে। দূর থেকে গেইট দেখলে মনে হয় বিশাল কোন অট্টালিকা দাঁড়িয়ে আছে৷ আধুনিক প্রবেস গেইট দৃষ্টিনন্দিত। রুচিশীল যে কাউকে সহজেই মুগ্ধ করবে৷
পার্শ্ববর্তী নরসিংদী জেলা থেকে ঘুরতে আসা দর্শনার্থী প্রনব সাহা বলেন,’এটি দেখার পর পুজার আনন্দ বহুগুণ বেড়ে যায়। পরিবার নিয়ে আসছি কটিয়াদীর পুজা ঘুরতে৷ আমার দেখা সবচেয়ে বড় পূজা এটি৷’
শ্যামল চন্দ্র দে নামে আরেক পূজারী বলেন,’আশপাশের কয়েক জেলার মধ্যে এটি হয়তো সবচেয়ে আকর্ষণীয় পুজা৷ অনেক গুলো পুজা ঘুরে দেখছি৷ কিন্তু এই পুজাটা সবচেয়ে অন্যরকম আকর্ষণ মনে হচ্ছে৷ আমাদের সাথে যারা আসছে সবাই মুগ্ধ হয়েছে দেখার পর৷’
পূজাটির আয়োজক কমিটির সদস্য ও পৌর পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি বাবুজিৎ সাহা বলেন,’আমরা দূর থেকে কারিগর ও জিনিসপত্র এনে এই পুজা তৈরি করেছি৷ সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে, এখানে দুর থেকে মানুষ এসে পুজা দেখে মনের মধ্যে তৃপ্তি পায় এবং পুজার আনন্দ বহুগুণ বেড়ে যায় এটা আমাদের জন্য সার্থক। ১০ বছর ধরে আমরা সাহা পাড়ার যুব সংঘের পক্ষ থেকে এটির আয়োজন করে আসছি৷’
উপজেলায় শান্তিপূর্ণভাবে উৎসবের মধ্য দিয়ে পালিত হচ্ছে হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব সারদীয় দুর্গাপূজা। পূজামন্ডপগুলোতে নানা উপকরণ দিয়ে দেবী দুর্গাকে পূজা আর আরধনা করছেন ভক্তরা। ভক্তরা দেবী দুর্গার কাছে সব ধরণের অশুভ শক্তি বিনাশ করে দেশবাসীর জন্য শান্তিকামনা করেন। ঢাকের বাজনা, শঙ্ক আর উলুধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠেছে । চন্ডিপাঠ আর পূজারমন্ত্র ধ্বনিত হচ্ছে পূজামন্ডপগুলোতে।
সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত পূজারিদের আনাগোনায় মুখরিত মণ্ডপ। সববয়সী নারীপুরুষ আসছেন ঘুরতে। ছোটদের হাত ধরে শিশুরাও আসছে প্রতিমা দেখতে।
পরিবার পরিজনকে সাথে নিয়ে এক মণ্ডপ থেকে আরেক মণ্ডপ চলছে ছুটাছুটি। মণ্ডপ গুলোতে চলছে আরাধনা আর ঢুল তবলার সাথে সাথে পূজার আনুষ্ঠানিকতা৷ একসাথে নেচে গেয়ে আনন্দে মেতেছে সবাই। মণ্ডপ গুলোর আশপাশে দৃষ্টিনন্দিত আলোকসজ্জা দিয়ে সাজানো হয়েছে৷ জেলায় সবচেয়ে বেশি ও আকর্ষণীয় পুজা হয় কটিয়াদীতে। ফলে বিভিন্ন স্থান থেকে এখানে ঘুরতে আসেন পুজারীরা৷ পুজার নিরাপত্তায় রয়েছে সেনাবাহিনী ও পুলিশের নিয়মিত টহল।
জেলায় সবচেয়ে আকর্ষণীয় পুজা হয় কটিয়াদী উপজেলায়৷ এখানে এবার মোট ৩৩ টি পূজা মণ্ডপে পুজা হচ্ছে। এর মধ্যে, পৌর এলাকাতে ১৪টি ও উপজেলায় পূজা মন্ডপ রয়েছে ১৯টি। আগামী ১৩ অক্টোবর বিজয়া দশমীর মধ্যে দিয়ে ৫ দিনব্যাপী হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজার পরিসমাপ্তি ঘটবে।
অতীতের চেয়ে শান্তিপূর্ণ ও উৎসব মুখর পরিবেশে পূজা উদযাপন করার কথা জানান পূজারী ও আয়োজকরা।
কটিয়াদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ওয়াহিদুজ্জামান বলেন,’নিয়মিত তদারকি ও সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করায় শান্তিপূর্ণভাবে পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে৷ কোন অভিযোগ এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি৷’