রুহুল আমিন,ডিমলা(নীলফামারী)
উপার্জনের একমাত্র অবলম্বন ভ্যানটি চুরি হয়ে গেছে। সাত দিন হলো ঘোরেনি ভ্যানের চাকা। সেই সঙ্গে আর ঘুরছে না জীবনের চাকাও। আশপাশের বিভিন্ন হাটবাজারে ও পথেঘাটে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও ভ্যানের সন্ধান মেলেনি। ভ্যান হারিয়ে এখন অসহায় হয়ে পড়েছেন চালক মো. আরমিয়া (৫০)।
আরমিয়া নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার ২নং বালাপাড়া ইউনিয়ন ৪নং ওয়ার্ড ভাসানীপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। স্বামী-স্ত্রীসহ পাঁচ সন্তানের সংসার চলে ভ্যানের চাকায়। এখন কোথায় যাবেন, কী করবেন, কী খাবেন—এই ভেবে তাঁর কাটছে দিনরাত।
সরেজমিন দেখা গেছে, টিনশেড ঘরের মাটির বারান্দায় বসে আছেন আরমিয়া ও তাঁর স্ত্রী শামসুরনেহার। তাঁদের চোখেমুখে হতাশার ছাপ। কথা বলতে গিয়ে চোখের জলে বুক ভিজিয়ে ফেলেন।
এনজিও থেকে থেকে ৮০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে অটোভ্যানটি কিনেছিলেন আরমিয়া। গত ৬ অক্টোবর রবিবার সন্ধ্যা ৭ টায় দিকে ডাঙ্গারহাটের কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে ভ্যান রেখে মাগরিবের নামাজ পড়তে যান। নামাজ শেষ এসে দেখেন তার ভ্যান চুরি হয়ে গেছে।
আরমিয়া জানান, তিনি মাত্র পাঁচ মাস আগে একটি বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) থেকে ৮০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে ভ্যান কিনেছিলেন। ভ্যান চালিয়ে যা আয় হয়, তা দিয়ে সাত সদ্যসের সংসার খচর ও সন্তানের লেখাপড়ার ব্যয় বহন করে ঋণের কিস্তির টাকা দেন।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে আরমিয়ার স্ত্রী শামসুরনেহার বলেন, ‘ওই ভ্যানই হামার পরিবারে সব। ভ্যান চালেয়া লোকটা (স্বামী) প্রতিদিন বাজার খরচ কিনি আনে, ছয়ালার(সন্তান) নেখাপড়ার খরচ দেয়। এলা হামার কী হবে? খামো কি, ছয়ালা পড়াশুনা করিবে ক্যামন করি আর লোন (ঋণ) শোধ করিমো কী দিয়া?’
সত্যতা শিকার করে প্রতিবেশী মডেল বলেন, ভ্যান চালকদের ভ্যান চুরি মেনে নেওয়ার মতো না। সে খুবই গরিব মানুষ। ভ্যান চুরি যাওয়াতে আরমিয়া এখন দিশেহারা। ছাত্র প্রতিনিধি সাজ্জাদ হোসেন সৌম ন্যাক্কাজনক ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, এলাকায় চুরি, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস ও মাদকদ্রব্য বন্ধের জন্য প্রশাসনের দৃশ্যমান উদ্যোগ নিতে হবে।
এছাড়াও গত ২৫ আগষ্ট একই মসজিদের মাঠ থেকে মোখলেসার রহমানের উপার্জনের একমাত্র সম্বল ভ্যানটিও চুরি হয়।
২নং বালাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম চৌধুরী’র সাথে ভ্যান চুরির ব্যাপারে যোগাযোগ করলে বলেন, ভ্যান চুরি মসজিদ মাঠে ঘটেছে। মসজিদ এরিয়ায় সিসি টিভি লাগাতে মসজিদ কমিটির সমস্যা কোথায়?