নিজস্ব প্রতিবেদক: গত তিন দিনের ভারি বৃষ্টিপাত আর ভারতের মেঘালয় রাজ্য থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নেত্রকোনার চারটি উপজেলায় বন্যা দেখা দিয়েছে। বন্যার কারণে ১৮৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। দুর্গাপুর, কলমাকান্দা, পূর্বধলা ও সদর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে পানিবন্দি মানুষের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে।
নেত্রকোনা জেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ ইমদাদুল হক জানান, বন্যার কারণে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে পানি ঢুকে পড়ায় দুর্গাপুরের ৬২টি, কলমাকান্দার ৯৩টি, পূর্বধলার ১১টি এবং নেত্রকোনা সদরের ২০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
নেত্রকোনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, গত কয়েক দিনের অব্যাহত ভারি বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নেত্রকোনার সোমেশ্বরী, উব্দাখালী, কংশ, ও ধনু নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। সোমবার (৭ অক্টোবর) সকাল ৯টার দিকে কংশ নদের পানি জারিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। আগের দিন রবিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে এই নদীর পানি একই পয়েন্টে ১৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছিল। সোমবার সকালের দিকে উব্দাখালী নদীর পানি কলমাকান্দা পয়েন্টে বিপদসীমার ১০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়।
জানা গেছে, পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নতুন করে রবিবার সন্ধ্যার দিকে পূর্বধলার জারিয়া ইউনিয়নে নাটেরকোনায় সাত কিলোমিটার বেড়িবাঁধের আনসার ক্যাম্পের পশ্চিম পাশের অংশ ভেঙে গেছে। এতে পূর্বধলা ও নেত্রকোনা সদর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে পানি প্রবেশ করেছে। এর আগে বাঁধটির অনেক স্থানে পানি ছুঁই ছুঁই করায় বাঁধটি রক্ষায় আনসার সদস্য ও স্থানীয়রা বালুর বস্তা ও মাটি ফেলে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা ব্যর্থ হন। পূর্বধলা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণে কাজ করছে বলে জানা গেছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, বন্যার্তদের সহযোগিতায় ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১১টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এসব আশ্রয় কেন্দ্রে ১১৫টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। বন্যাদুর্গত এক হাজার পরিবারের মাঝে চাল, ডাল, তেল শিশুখাদ্য ও গোখাদ্যের জন্য নগদ অর্থ বিতরণ করা হয়েছে।
নেত্রকোনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সারোয়ার জাহান জানান, নেত্রকোনায় তিন দিনে সর্বোচ্চ পরিমাণ বৃষ্টিপাতের রেকর্ড হয়েছে। গত তিন দিনে ৭৫৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করারা কথা জানান তিনি।