ঝালকাঠি সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অমান্য করে অনিয়মের মাধ্যমে ডাক্তারের জাল স্বাক্ষরে বিনামূল্যের মূল্যবান ও অত্যাবশ্যকীয় ঔষধ নেয়ার সময় এবার হাতেনাতে ধরা পড়ে ঔষধ কোম্পানীর এক প্রতিনিধি। অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় ঔষধ কোম্পানীর ঐ প্রতিনিধিকে পুলিশের নিকট সোপর্দ করেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও টিআইবি-সনাক, ঝালকাঠির স্বেচ্ছাসেবকবৃন্দ।
রবিবার (৬ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে।টিআইবি’র সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক), ঝালকাঠির সদর হাসপাতাল কেন্দ্রিক অ্যাক্টিভ সিটিজেন্স গ্রুপের (এসিজি) সদস্যরা ও ইয়ুথ এনগেজমেন্ট অ্যান্ড সাপোর্ট (ইয়েস) গ্রুপের সদস্যরা হাসপাতালে কমিউনিটি মনিটরিং কার্যক্রম পরিচালনা করতে গেলে অভিযোগের বিষয়টি তারা দেখতে পান। এসময় টিআইবি’র সদস্যরা ঔষধ কোম্পানীর ঐ প্রতিনিধিকে তার অনিয়মের বিষয়ে চ্যালেঞ্জ করলে তিনি উল্টো নিজের প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করেন। পরে সদস্যরা তাকে তথ্য-প্রমানসহ সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়কের নিকট নিয়ে যান। হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. শামীম আহমেদ অভিযোগের বিষয়ে সত্যতা পাওয়ায় থানা পুলিশকে খবর দিয়ে তাদের নিকট সোপর্দ করেন।
পরে সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. শামীম আহমেদের সভাপতিত্বে হাসপাতালের ডাক্তার ও স্টাফদেরকে নিয়ে হাসপাতালের সভাকক্ষে একটি জরুরি সভা করা হয়। এসময় ঔষধের অনিয়মের অভিযোগের বিষয়টিসহ টিআইবি-সনাকের পক্ষ থেকে ইতোপূর্বে প্রদানকৃত যেসকল সমস্যা সমাধানের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে সেগুলো সমাধানে সংশ্লিষ্টদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরকে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়ার জন্য পুনরায় কঠোর নির্দেশনা প্রদান করেন হাসপাতালের তত্বাবধায়ক। সভায় সনাকের স্বাস্থ্য বিষয়ক উপ-কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. নজরুল ইসলাম তালুকদারের নেতৃত্বে এসিজি, ইয়েস ও টিআইবি’র কর্মীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
অ্যাক্টিভ সিটিজেন্স গ্রুপের (এসিজি) সমন্বয়ক আরিফুর রহমান রায়হান বলেন, ‘নিয়মিত কার্যক্রমের অংশ হিসেবে আমরা সকালে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে কমিউনিটি মনিটরিং কার্যক্রম পরিচালনা করতে যাই। এসময় অনিয়মের মাধ্যমে ডাক্তারের জাল স্বাক্ষরে পুনরায় বিনামূল্যের মূল্যবান ও অত্যাবশ্যকীয় ঔষধ নেয়ার বিষয়টি আমাদের নিকট দৃশ্যমান হয়। আমরা ঔষধ কোম্পানীর এক প্রতিনিধিকে ডাক্তারের জাল স্বাক্ষরে ঔষধ নেয়ার বিষয়টি চ্যালেঞ্জ করি। তিনি তার অনিয়মের কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। উল্টো তিনি আমাদের উপর ক্ষিপ্ত ও চড়াও হন। পরে টিআইবি’র ইয়েস সদস্যদের সহযোগিতায় কোম্পানীর ঐ প্রতিনিধিকে আমরা তথ্য-প্রমানসহ হাসপাতালের তত্বাবধায়কের নিকট নিয়ে যাই। সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. শামীম আহমেদ অভিযোগের বিষয়ে সত্যতা পাওয়ায় থানা পুলিশকে খবর দিয়ে তাদের নিকট সোপর্দ করেন।’
ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. শামীম আহমেদ বলেন, ‘ভূয়া স্লিপে ডাক্তারের জাল স্বাক্ষরে ঔষধ নেয়ার অভিযোগের বিষয়ে সত্যতা পাওয়ায় ঔষধ কোম্পানীর এক প্রতিনিধিকে প্রমানসহকারে হাতেনাতে ধরা হয়। পরে থানা পুলিশের নিকট তাঁকে সোপর্দ করা হয়।’
উল্লেখ্য, এর আগে গত ২০ মে হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও)’র জাল স্বাক্ষরে ঔষধ নেয়ার অভিযোগে সদর হাসপাতালের ইন্টার্নী নার্সদের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ টিআইবি-সনাকের স্বেচ্ছাসেবকরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে অবহিত করলে প্রশিক্ষণকালীন কার্যক্রম সাময়িক স্থগিত করেছিলেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।