ডা.এম.এ.মান্নান
নাগরপুর (টাঙ্গাইল)প্রতিনিধিঃ
টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা ঘিরে প্রতিমা তৈরীর ধুম পড়েছে। কারিগরদের দম ফেলার ফুসরত নেই। কয়েকদিন বাদেই প্রতিমার গায়ে পড়বে রঙের আঁচড়। বাঁশ-কাঠ আর কাদামাটি দিয়ে তৈরি প্রতিমাগুলো দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন সনাতন ধর্মের লোকজন।
সোমবার (১অক্টোবর) সরেজমিনে উপজেলার কয়েকটি মন্দিরে ঘুরে দেখা গেছে, মন্দিরে কারিগররা প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। একনিষ্ঠ চিত্তে নিপুণ হাতের ছোঁয়ায় মাটি লাগানোর কাজে ব্যস্ত শিল্পীরা। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কেউ কাদা তৈরি করছেন, কেউ আবার কাদা দিয়ে হাত-পা বানাচ্ছেন। বেশিরভাগ এলাকাতেই প্রতিমাতে কাদামাটি লাগানোর কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এরপর শুরু হবে প্রতিমাতে রংতুলির ছোঁয়া ও সাজসজ্জার কাজ।
মৃৎশিল্পী দীণেশ পাল বলেন, প্রতিবছর দুর্গা প্রতিমা তৈরির উপকরণের দাম ও চাহিদা বাড়লেও বাড়েনি প্রতিমার দাম। তবে চলতি বছর প্রতিমার চাহিদা গত বছরের তুলনায় বেশি। এবার কিছুটা হলেও পুষিয়ে নিতে পারবেন তারা।
প্রতিমা তৈরির কারিগর রমেন পাল বলেন, অতীতে যেভাবে মানুষ মাটির তৈরি জিনিসপত্র ব্যবহার করতো, সেই চাহিদা না থাকায় আমাদের প্রায় সারা বছরই অলস সময় কাটাতে হয়। তবে দুর্গাপূজা চলাকালে প্রতিমা তৈরি করে যে টাকা আয় হয় তা দিয়ে কোনোমতে সারা বছর সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়ে। আবার চলতি বছর প্রতিমা তৈরির উপকরণের দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। কিন্তু ক্রেতারা প্রতিমার দাম বাড়াচ্ছে না। এতে আমাদের যে টাকা আয় হওয়ার কথা, তা আর হচ্ছে না।
নাগরপুর উপজেলা পূজা উদযাপন পরিচালনা কমিটির সভাপতি শিব শংকর সূত্রধর বলেন, উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে ১৩০ মণ্ডপ ও মন্দিরে দুর্গোৎসবের যাবতীয় প্রস্তুতির কাজ চলছে। দুর্গোৎসব নির্বিঘ্ন করতে উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ২ অক্টোবর মহালয়ার মধ্যে দিয়ে শারদীয় দুর্গোৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়বে। আগামী ৯ অক্টোবর ষষ্ঠী, ১০ অক্টোরর সপ্তমী, ১১ অক্টোবর অষ্টমী, ১২ অক্টোবর নবমী, ১৩ অক্টোবর বিজয়া দশমীর মধ্যে দিয়ে ৫ দিনব্যাপী হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজার পরিসমাপ্তি ঘটবে।