কে. এম. সাখাওয়াত হোসেন: গত ২০ জুলাই বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গাজীপুরের বড়বাড়ি মোড় এলাকায় পায়ে গুলিবিদ্ধ হন পোশাক কারখানার শ্রমিক মো. মোস্তাকিম (১৯)। তিনি নেত্রকোণা জেলার মোহনগঞ্জ উপজেলা পৌর এলাকার ৬নং ওয়ার্ডের ছাতুর পূর্ব পাড়ার স্থায়ী বাসিন্দা।
গুলিবিদ্ধ এবং আহত অবস্থায় প্রথমে মোস্তাকিম ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিলন। পায়ে ব্যান্ডেজ পেঁচিয়ে এক দিন পর তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে চিকিৎসক মোস্তাকিমকে তার ক্ষতস্থান শুকানোর পর অস্ত্রোপচার করার কথা জানিয়েছিলেন । কিন্ত টাকার অভাবে উন্নত চিকিৎসা নিতে ও কিনতে পারছিলেন না প্রয়োজনীয় ওষুধটুকুও আহত পোশাক শ্রমিক। গ্রামের বাড়ির বিছানায় যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছিলেন মোস্তাকিম।
এ বিষয়ে গত ১৫ সেপ্টেম্বর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে নজরে আসে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী নেত্রকোনা সদরের ক্যাম্প কমান্ডার এবং ৮ম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল নূর-ই আহমেদ আল-শাফী, এসইউপি পিএসসি’র। তাঁর উদ্দ্যোগে আহত মোস্তাকিমকে দ্রুত সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয় এরপর গত ২২ সেপ্টেম্বর মোস্তাকিমকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল ময়মনসিংহে প্রেরণ এবং ভর্তি করা হয়।
মোস্তাকিমের চিকিৎসার ব্যাপারে নেত্রকোণা সদর সেনা ক্যাম্পের আরএমও ক্যাপ্টেন আবু সাঈদ নূর আহমেদ (এএমসি) জানান, মোস্তাকিম বর্তমানে সিএমএইচ ময়মনসিংহের সার্জারি বিভাগে ভর্তি আছেন। সার্জারি এবং অর্থোপেডিক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধায়নে তার চিকিৎসা চলছে। বিশেষজ্ঞ অর্থোপেডিক সার্জন রোগীর হাঁটুতে একটি জটিল অস্ত্রোপচারের জন্য রোগীকে ঢাকায় রেফার করেছেন। এই অস্ত্রোপচারটি তিন মাস পর করা যাবে। এর আগে আপাতত শেখানো ব্যায়ামের মাধ্যমে হাঁটুকে অস্ত্রোপচারের উপযোগী করে তোলার পরামর্শ দিয়েছেন সামরিক চিকিৎসক। অস্ত্রোপচার হওয়ার আগ পর্যন্ত এই তিন মাসে মোস্তাকিমের যাবতীয় ঔষধ এবং পথ্যের খরচ ৮ম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট বহন করবে।
মাননীয় সেনাপ্রধানের নির্দেশে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত এবং গুলিবিদ্ধ রোগীদেরকে সিএমএইচে বিনামূল্যে চিকিৎসা দেওয়ার এই ধরণের উদ্দ্যোগ অব্যহত থাকবে বলে তিনি জানান।