বশেমুরবিপ্রবি প্রতিনিধিঃ-
গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেমুরবিপ্রবি) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে সংবাদ সম্মেলন করেছে ছাত্রলীগের কর্মীরা। এই ঘটনাটি বিশ্ববিদ্যালয়ে উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে এবং বিভিন্ন মহলে সমালোচনার ঝড় তুলেছে।
আজ মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) রাত ৮ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে সাংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে কিছু শিক্ষার্থীরা, যাদেরকে ইতিপূর্বে ছাত্রলীগের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার বিষয়টি জানা গেছে।
সংবাদ সম্মেলনে তারা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় নেতৃত্ব দেওয়া সমন্বয়েকদের সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে বলেন, “জসিম এবং সালাউদ্দিন জনি নামে দুইজন সমন্বয়ক হলে অবস্থানরত ছাত্রদের হুমকি এবং জোরপূর্বক নামানোর ষড়যন্ত্র করছে। আমরা চাই আমাদের ক্যাম্পাসটা একটা রাজনীতি মুক্ত ক্যাম্পাস থাকুক। কিন্তু রাজনীতিকমুক্ত ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক পরিচয়ে রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের লক্ষ্যে ক্যাম্পাসের পরিবেশ অনিশ্চিত হয়েছে। ক্যাম্পাসের এ সমন্বয়ক সন্ত্রাসীদের এগ্রেসিভ মুড দেখলে যে কেউ বলবে এরা সাধারণ শিক্ষার্থী না।”
সমন্বয়কদের বিরুদ্ধে তারা আরো বলেন, “এছাড়া আমাদের অধিকার বশেমুরবিপ্রবি নামে যে ফেসবুক গ্রুপ আছে, সেখানে শিক্ষকদের নিয়ে যে ব্যক্তিগত আক্রোস করা হচ্ছে এতে বোঝা যাচ্ছে এগুলো সন্ত্রাসী কর্মকান্ড। এসব সামান্য সমন্বয়করূপী সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে প্রক্টরের কাছে নিরাপত্তা দাবি করছি।”
সংবাদ সম্মেলনে তারা প্রশাসনের কাছে পাঁচ দফা দাবি পেশ করেন, “১.নিরাপত্তা দিতে হবে। ২. লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে। ৩. জসিম জনি এবং তাদের সহযোগীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে এবং স্থায়ী বহিষ্কার করতে হবে। ৪. শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। ৫. আমাদের হল প্রভোস্টের মাধ্যমে নিরাপত্তা দিতে হবে।”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী জানান, পূর্বের স্বৈরাচার সরকারের সময় নিয়োগকৃত শিক্ষক-কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়ে বর্তমান সমন্বয়করা কথা বলায় সেই সকল নিয়োগকৃত শিক্ষক-কর্মকর্তাদের ভ্যানগার্ড হিসেবে কাজ করছে সাধারণ শিক্ষার্থীর নাম ব্যবহার করে কিছু ছাত্রলীগ নেতা-কর্মী। তারা এতদিন অবৈধভাবে যে সুযোগ-সুবিধা ভোগ করেছে তা এখন সাধারণ শিক্ষার্থীদের নাম ব্যবহার করে ভোগ করতে চাচ্ছে। তারা সাধারণ শিক্ষার্থীর পরিচয় দিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ফাটল সৃষ্টি করতে চাচ্ছে। আমাদের সবাইকে এই বিষয়ে সচেতন হতে হবে।
এই বিষয়ে সাবেক সমন্বয়ক জসিম উদ্দিন বলেন, “আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে তা ভিত্তিহীন। আমি কিভাবে সিট দখল করতে যাই! হলে আমি আমার পরিচিত একজনের রুমে মোবাইল চার্জ দিতে গিয়েছিলাম। আমি হলে কাউকে এই বিষয়ে কিছু বলিনি। তারা নিজেরাই অবৈধ ভাবে সিট দখল করে আছে, এখন আমার নামে মিথ্যা ছড়াচ্ছে। আমার নামে মিথ্যা ছড়ানোর বিষয়ে কাল প্রক্টরের কাছে যাব।”